ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪

ইসলামে নারীর অধিকার

প্রকাশিত : ১৬:০০, ৮ মার্চ ২০১৯

তৎকালীন আরব সমাজের নারীদের করুণ অবস্থা সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করা হয়েছে, ‘তাদের কাউকে যখন মেয়ে জন্মের সংবাদ দেওয়া হয় তখন তার চেহারা কালো হয়ে যায়। এবং সে দুঃখ-চিন্তায় ব্যথিত হয়ে পড়ে। এ সংবাদটিকে তারা এত খারাপ সংবাদ মনে করত যে, নিজেকে লোকজনের থেকে গোপন রাখতে থাকে আর চিন্তা করতে থাকে যে, লজ্জা শরম ও অবমাননা সহ্য করে মেয়েটিকে রাখবে, না তাকে মাটির নিচে জীবন্ত কবর দিবে’। (সূরা নাহল-৫৮-৫৯)। রাসুল (স) এ দৃশ্য দেখে তাদের নিষেধ করলেন। তিনি বলেন, তোমরা কন্যা সন্তানদের খাবারের ভয় করো না। কেননা তোমাদের রিজিকদাতা আল্লাহ তায়ালা।

আল্লাহ বলেন- ‘তোমাদের সন্তানদিগকে দারিদ্রের ভয়ে হত্যা করো না। তাদেরকে আমিই রিজিক দেই এবং তোমাদেরকেও। নিশ্চয়ই তাদের (কন্যা সন্তানকে) হত্যা করা মহাপাপ’। (সুরা বনী ইসরাইল:৩১) শুধু তাই নয়, রাসুল (স) কন্যা সন্তানের সম্মান বৃদ্ধি করেন। প্রিয় নবী (স) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কন্যা সন্তানের সাথে ভালো ব্যবহার করবে তারা তার জন্য জাহান্নাম অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে’ (বুখারী, মুসলিম)। ইসলামপূর্ব সময়ে স্ত্রীদের শুধু ভোগের সামগ্রী মনে করা হত। কিন্তু ইসলাম স্ত্রীর সাথে উত্তম আচরণ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা স্ত্রীদের সাথে সদ্ভাবে জীবনযাপন কর’। (সুরা নিসা:১৯)। ইসলাম স্ত্রীদের সাথে খারাপ আচরণ ও দাসীর মতো আচরণসহ যে কোনো প্রকার অত্যাচার করতে বারণ করেছে। রাসুল (স) বলেন, ‘তোমরা তোমাদের জীবন সঙ্গীনীকে কখনো অত্যাচার ও দাসীর মতো মারপিট করো না’। (বুখারী ও মুসলিম) এমনকি হাদিসে এমন কথাও বলা হয়েছে যে, সেই ব্যক্তি উত্তম যে তার স্ত্রীর নিকট উত্তম। অন্যদিকে ইসলামে মা হিসেবে নারীকে সম্মান করেছে। মায়ের সম্মান ও খেদমত জান্নাত লাভের অন্যতম উপায়। রাসুল (স) বলেন, ‘মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত’ (আবু নাঈম শরীফ)। কোরআন শরীফে সুরা লোকমানসহ বিভিন্ন সূরায় মায়ের সাথে সদাচরণের কথা বলা হয়েছে। মা অন্য ধর্মের অনুসারী হলেও তার সাথে সদ্ব্যবহার করতে হবে। যেমন-হজরত আসমা (রা) বলেন,“আমি নবী (স) কে জিজ্ঞাসা করলাম, আমার মাতা মুশরিক বেদ্বীন, তিনি আমার কাছে দেখা করতে আসেন। তাকে আদর আপ্যায়ন করা যাবে কি? রাসুল (স) বলেন, ‘অবশ্যই তাকে আদর আপ্যায়ন ও সদ্ব্যবহার করবে’। (বুখারী শরীফ)। ইসলাম নারীকে পর্দা রক্ষা করে শিক্ষার অধিকার প্রদান করেছেন। ইসলাম নারী ও পুরুষ উভয়কে পড়ার জন্য বলেছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন,‘পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন’(সুরা আলাক:০১)। আজকের কন্যা আগামী দিনের মা। তাই রাসুল (স) শিক্ষা, কাজ-কর্মে কন্যা সন্তানকে যোগ্য করে তুলতে বলেছেন। রাসুল (স) বলেন, ‘দ্বীনি ইলম শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজ’। এছাড়া ইসলাম নারীদের পর্দা রক্ষা করে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনার অধিকার দিয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য করে অর্থবিত্ত উপার্জন করে এর মালিক নারী হতে পারেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘পুরুষ যা অর্জন করে তা তার প্রাপ্য অংশ এবং নারী যা অর্জন করে তা নারীর প্রাপ্য অংশ’। (সুরা নিসা:৩২)।মোটকথা, ইসলাম নারীকে মানুষ হিসেবে মর্যাদাসীন করে অতুলনীয় মর্যাদা দান করেছে। ইসলামে সাক্ষীসাবুদ রেখে নির্দিষ্ট মোহর প্রদানপূর্বক নারীকে বিয়ে করার নির্দেশ দিয়েছে। প্রতিষ্ঠা করেছে উত্তরাধিকার সম্পদে তার অধিকার।
লেখক : ইসলামি গবেষক

এসএ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি