ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪

কুরআন যেভাবে দোয়ার শিক্ষা দেয়

প্রকাশিত : ১৬:৫৯, ১৫ মে ২০১৯ | আপডেট: ১৭:৩৭, ১৫ মে ২০১৯

‘পড়ো! তোমার সৃষ্টিকর্তা প্রভুর নামে। যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন নিষিক্ত ডিম্ব থেকে। পড়ো! তোমার প্রতিপালক মহান দয়ালু। তিনি মানুষকে জ্ঞান দিয়েছেন কলমের। আর মানুষকে শিখিয়েছেন, যা সে জানত না।’ সূরা আলাক-এর এই পঙক্তিমালা দিয়েই কোরআন নাজিলের সূচনা।

‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে ও আমার সন্তানদেরকে নামাজ কায়েমকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করো। প্রভু হে! আমাদের দোয়া কবুল করো। হে আমার প্রতিপালক! কর্মফল দিবসে আমাকে, আমার মা-বাবাকে এবং সকল বিশ্বাসীকে তুমি ক্ষমা করে দিও!’ (সূরা ইব্রাহিম ৪০-৪১)

শ্রদ্ধাভরা দৃষ্টিতে মমতার ডানা মেলে ছায়ার মতো আগলে রাখো এবং সবসময় তাদের জন্যে দোয়া করো : ‘হে আমার প্রতিপালক! আমার মা-বাবা শৈশবে যে মমতায় আমাকে লালন করেছেন, তুমিও তাদের ওপর সে-রূপ করুণাবর্ষণ করো।’ (সূরা বনি ইসরাইল ২৪)

নবী/রাসূলদের প্রার্থনা : ‘স্মরণ করো! ইব্রাহিমের প্রার্থনা : ‘হে আমার প্রতিপালক! এই শহরকে সবার জন্যে নিরাপদ করো। আর এর অধিবাসীদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাস করবে, তাদের ফলাহারসহ জীবিকা প্রদান করো।’ আল্লাহ বলেন, তবে যারা সত্যকে অস্বীকার করবে তাদেরকেও কিছুকাল জীবন উপভোগ করার সুযোগ দেবো। তারপর ওদেরকে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে বাধ্য করব। আর এ পরিণতি কতই না নিকৃষ্ট! (সূরা বাকারা ১২৬)

যখন ইব্রাহিম (আ.) ও ইসমাইল (আ.) কাবার দেয়াল তুলছিলেন তখন তারা দোয়া করেছিলেন, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি আমাদের এ কাজ কবুল করো! নিশ্চয়ই তুমি সব শোনো, সব জানো। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে পুরোপুরি তোমাতে সমর্পিত করো এবং আমাদের বংশধর হতে এমন একটি জাতির উত্থান ঘটাও যারা তোমাতে পুরোপুরি সমর্পিত হবে। আমাদেরকে ইবাদতের নিয়ম পদ্ধতি শিখিয়ে দাও! আমাদের দোষত্র‍ুটি ক্ষমা করো। নিশ্চয়ই তুমি অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। হে আমাদের প্রতিপালক! এ জাতির মধ্য থেকে তাদের কাছে এমন এক রসুল প্রেরণ করো, যে তোমার আয়াত পাঠ করবে, তাদেরকে কিতাবের জ্ঞান ও হিকমা শিক্ষা দেবে এবং তাদের জীবনকে পরিশুদ্ধ করবে। নিশ্চয়ই তুমি মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ (সূরা বাকারা ১২৭-১২৯)

জাকারিয়া (আ.) এর প্রার্থনা, ‘হে আমার প্রতিপালক! তোমার বিশেষ কুদরতে আমাকে সৎসন্তান দান করো। নিশ্চয়ই তুমি প্রার্থনা কবুলকারী।’ (সূরা আলে ইমরান ৩৮)

রাসূল (সা.) প্রার্থনা করলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে সাহায্য করো। ওরা আমাকে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করেছে।’ আল্লাহ প্রার্থনা কবুল করে বললেন, ওদের কৃতকর্মের জন্যে ওরাই অনুশোচনা করবে। (সূরা মুমিনুন ৩৯-৪০)

দোয়ার নির্দেশ : ‘হে বিশ্বাসীগণ! বিনয়াবনত চিত্তে ও সংগোপনে তোমার প্রতিপালকের কাছে প্রার্থনা করো। তিনি সীমালঙ্ঘনকারীদের অপছন্দ করেন। দুনিয়ায় শান্তি স্থাপনের পর সেখানে অশান্তি সৃষ্টি করো না। শঙ্কা ও প্রত্যাশা নিয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহর অনুগ্রহ সৎকর্মশীলদের খুব কাছাকাছি।’ (সূরা আরাফ ৫৫-৫৬)

‘হে নবী প্রার্থনা করো, ‘হে আমার প্রতিপালক! শয়তানের কুপ্ররোচনা থেকে আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। প্রভু হে! শয়তানকে আমার কাছ থেকে দূরে রাখো।’ (সূরা মুমিনুন ৯৭-৯৮)

‘অতএব হে বিশ্বাসীগণ কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করো, হে আমার প্রতিপালক! আমায় ক্ষমা করো, আমায় দয়া করো। তুমিই সত্যিকার দয়াময়।’ (সূরা মুমিনুন ১১৮)

‘আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা নবীর প্রতি রহমত বর্ষণ করেন। অতএব হে বিশ্বাসীগণ! তোমরাও নবীর ওপর রহমত বর্ষণের জন্য দোয়া কর এবং তার প্রদর্শিত পথে নিজেকে সমর্পিত করো।’ (সূরা আহজাব ৫৬)

‘তোমাদের প্রতিপালক বলেন, তোমরা আমাকে ডাকো, আমি সাড়া দেবো (দোয়া কবুল করব)। যারা অতি-অহমিকায় আমার ইবাদতে বিমুখ, তারা অবশ্যই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।’ (সূরা মুমিন ৬০)

উপরোক্ত কুরআনের আয়াতের আলোকে এবং নবী রাসূলদের অনুসরণ করে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবো। আল্লাহ নিশ্চয়ই প্রার্থনায় সাড়া দিবেন।

এএইচ/

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি