ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘জঙ্গি-অবক্ষয়-দুর্নীতি, মানবে না এ সংস্কৃতি’ শ্লোগানে জাতীয় নাট্যোৎসব শুরু

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:৫৩, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান আয়োজিত ‘জঙ্গি-অবক্ষয়-দূর্নীতি মানবে না এ সংস্কৃতি’ শীর্ষক ‘জাতীয় নাট্যোৎসব ২০২০’র শুভ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ বুধবার সকাল সাড়ে এগারোটায় ঢাকা মহানগর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর ও সিলেট হতে উপস্থাপিত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই উৎসবের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
 
এ সময় গণভবনে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের চেয়াম্যান লিয়াকত আলী লাকী, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামালসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্তকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে একাডেমির আয়োজনে জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ‘এ মাটি নয় জঙ্গিবাদের..’ গানটির সাথে নৃত্য পরিবেশন করেন অনিক বোস-এর নৃত্যদল এবং ৭ মার্চের ভাষণের সাথে নৃত্য পরিবেশন করে একাডেমির নৃত্য শিল্পীবৃন্দ।

এছাড়াও ৬৪টি জেলায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রাজনৈতিক নেত্রীবৃন্দ, সংস্কৃতি ও নাট্যকর্মীদের উপস্থিতিতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এক যোগে প্রচারিত হয়।

‘জঙ্গি-অবক্ষয়-দূর্নীতি মানবে না এ সংস্কৃতি’ শ্লোগানকে ধারণ করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি’র সহযোগিতায় ১২ থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানভুক্ত চার শতাধিক নাট্য সংগঠনের অংশগ্রহণে ৬৪ জেলায় এক যোগে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘জাতীয় নাট্যোৎসব ২০২০’। সারাদেশে চারশতাধিক নাট্যদলের ত্রিশ হাজারেরও বেশি নাট্যকর্মী এই উৎসবের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন। ১২-২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত উৎসবে ৩০২টি নাটক প্রদর্শিত হবে। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে পথনাটক পরিবেশিত হবে।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নাট্যকর্মীদের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবী মঞ্চ নাটকের উপর থেকে প্রমোদ কর বাতিল করেন ১৯৭৪ সালে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা প্রথমবার সরকার গঠন করে নাটকের উপর থেকে দীর্ঘদিনের কালাকানুন সেন্সর প্রথা বাতিল করেন। বর্তমান সাংস্কৃতি বান্ধব সরকার নাট্যকর্মীদের সকল দাবীর প্রতি আন্তরিক। ইতোমধ্যে নাট্য সংগঠনগুলির জন্য বাৎসরিক এক কালীন বরাদ্দ, নাট্য উৎসবসহ সকল প্রকার নাট্য এবং সাংস্কৃতিক আয়োজনে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মাধ্যমে সহযোগিতা করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। সরকার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে বিশ্বমানের ও সময় উপযোগী করে তোলার প্রয়াসে সারাদেশে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত শিল্পকলা একাডেমির বিস্তার ঘটিয়েছেন। এটি প্রান্তিক মানুষের কাছে সংস্কৃতিকে পৌঁছে দেয়ার এক মহান প্রয়াস। 

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সুকীর্তি হল বাংলাদেশের নাটক। সারাদেশের নাট্যচর্চার সাথে যুক্ত মঞ্চ নাট্য শিল্পীদের চেতনায় বিরাজ করছে মুক্তিযুদ্ধ, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, অসাম্প্রদায়িকতা ও শিল্পীদের মানবতা। বাংলাদেশের নাট্যচর্চার সাথে সম্পৃক্ত সবাই প্রতিক্রিয়াশীলতার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। মানবিক সংস্কৃতির বিকাশ ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনের অভিপ্রায় নিয়ে সারাদেশে নাটকের সংগঠনগুলোকে একই পতাকা তলে নিয়ে আসা এবং ধারাবাহিক নাট্যচর্চার ভেতর দিয়ে মানুষের প্রগতির পথে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যেই ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান প্রতিষ্ঠিত হয় বলে জানিয়েছেন সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়জিদ।
 
স্বাধীনতা পরবর্তীকালে দর্শনীর বিনিময়ে বাংলাদেশে নাট্যচর্চার যে নতুন দিগন্তের সূচনা হয় তারই ধারাবাহিকতায় নাট্যচর্চা আজ সুসংহত এবং বেগবান। নাটকের প্রসার এবং নাট্যভূমিকে শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করানোই হল বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের মূল উদ্দেশ্য। নাট্যকলা আজ পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভূক্ত এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজে নাট্যকলা বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব কিছু বিকাশমান নাট্য আন্দোলনেরই ফসল।  

বাংলাদেশের নাট্যচর্চা বেঁচে থাকবে সংগ্রামী নাট্যকর্মীদের পদচারণায়। প্রতিনিয়ত লড়াইয়ের মধ্যদিয়ে শাণিত হবে ইস্পাত ফলার মত। ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ, সুবিধাবাদের মোহ কখনো আচ্ছন্ন করতে পারবে না সেসব মৃত্যুঞ্জয়ী নাট্যকর্মীদের। তাদের পল্লবিত পদযাত্রায় মুখরিত হবে বাংলাদেশের নাট্যচর্চা। তৈরি হবে নতুন নাট্য সড়ক। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলা নাট্যের যে ধারা শুরু হয়েছিল বিষয় বৈচিত্র্যে, তা আজ হয়ে উঠেছে বেগবান ও ঋদ্ধ। বর্তমানে বাংলাদেশের নাটক দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও অর্জন করে চলেছে। (সংবাদ বিজ্ঞপ্তি)।

এমএস/এসি
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি