ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি

দেশীয় পাঁচ পাচারকারী শনাক্ত

প্রকাশিত : ১৬:৩৩, ১৬ মে ২০১৯

ভূমধ্যসাগরে অবৈধ অভিবাসীবাহী নৌকাডুবির ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পাঁচ বাংলাদেশী মানব পাচারকারীকে শনাক্ত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যারা যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়ায় স্থানীয় মিলিশিয়া বাহিনীগুলোর সঙ্গে মানব পাচারে জড়িয়ে পড়েছে। এসব বাংলাদেশী অন্যান্য অবৈধ ব্যবসায়ও জড়িত।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানান, ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় বাংলাদেশীদের মধ্যে ৩৯ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। যাদের মধ্যে ২২ জনই বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের। নিখোঁজ সবাই প্রাণ হারিয়েছেন বলে ধারণা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।

এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জীবিত উদ্ধার হওয়া ১৪ জন বাংলাদেশীর সঙ্গে কথা বলে লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা দালালদের খোঁজ পেয়েছেন। এছাড়া বৃহত্তর সিলেট থেকে যারা গেছেন, তাদের পরিবারের সদস্যরাও বেশ কয়েকজন দালালকে চিহ্নিত করেছেন।

তিনি বলেন, জানা গেছে, এ চক্রের হোতা নোয়াখালীর তিন ভাই। এছাড়া মাদারীপুরের আরো দুজন আছে। তাদের বিষয়ে আমরা বিস্তারিত খোঁজখবর নিচ্ছি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, দালালদের সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে না পারলেও উদ্ধারকৃত বাংলাদেশীরা কয়েকজনের নাম বলেছেন। এর মধ্যে ‘গুডলাক’ ছদ্মনাম ব্যবহার করে নোয়াখালীর রোম্মান, রিপন, রুবেল তিন ভাই একটি বড় চক্র হিসেবে কাজ করছে। তুরস্কের ইস্তাম্বুল ও লিবিয়ায় তাদের শক্ত নেটওয়ার্ক রয়েছে। অন্যদিকে মাদারীপুরের নুরী ও মিরাজের নামও উল্লেখ করেছেন উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশীরা। তবে তাদের পরিচয় ও ঠিকানা দিতে পারেননি তারা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, পূর্বাঞ্চলীয় তবরুক-বেনগাজিভিত্তিক সরকার ও জাতিসংঘ সমর্থিত ত্রিপোলিভিত্তিক সরকারের মধ্যে বিরোধের সুযোগে মিলিশিয়া বাহিনীগুলো নিজ নিজ আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে। বাংলাদেশী দালালরা এ মিলিশিয়া বাহিনীর সহায়তায় মানব পাচারের ব্যবসা করে। এক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কিছু করার থাকে না। এ কারণে ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয় না। তবে দূতাবাসের পক্ষ থেকে কিছু দালালের সম্ভাব্য তথ্য দেশে পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এদিকে যাদের উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের সঙ্গে কথা বলে নিখোঁজ বাংলাদেশীদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। নিখোঁজদের তালিকায় রয়েছেন- আবদুল আজিজ, ফেঞ্চুগঞ্জ, সিলেট; আহমদ, ফেঞ্চুগঞ্জ, সিলেট; লিটন আহমেদ, ফেঞ্চুগঞ্জ, সিলেট; খোকন, বিশ্বনাথ, সিলেট; আফজাল হোসেন, গোলাপগঞ্জ, সিলেট; মমিন আহমেদ, বিশ্বনাথ, সিলেট; দিলাল আহমেদ, বিশ্বনাথ, সিলেট; কাশেম, গোলাপগঞ্জ, সিলেট; মৌলানা মাহবুবুর রহমান, সুনামগঞ্জ; জিল্লুর রহমান, বাংলাবাজার, সিলেট; কামরান আহমেদ মারুফ, সিলেট; রুকন আহমেদ, বিশ্বনাথ, সিলেট; হাফিজ শামিম আহমেদ, মৌলভীবাজার; আয়াজ আহমেদ, ফেঞ্চুগঞ্জ, সিলেট; ফাহাদ আহমেদ, বড়লেখা, মৌলভীবাজার; সুজন আহমেদ, বিয়ানীবাজার, সিলেট; ইন্দ্রজিত, সিলেট; জুয়েল, বড়লেখা, সিলেট; মুক্তাদির, হবিগঞ্জ; শোয়েব, বিয়ানীবাজার, সিলেট ও সাজু, সিলেট।

নিখোঁজ অন্যরা হলেন- সাব্বির, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ; আলি আকবর, বাগমারা, শিবচর, মাদারীপুর; জাকির হাওলাদার, শিবচর, মাদারীপুর; মনির, শরীয়তপুর; শাহেদ, রাজৈর, মাদারীপুর; নাইম, রাজৈর, মাদারীপুর; রাজিব, শরীয়তপুর; জালালউদ্দিন, কিশোরগঞ্জ; পারভেজ, শরীয়তপুর; স্বপন, মাদারীপুর; সজল, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ; জাহিদ, নরসিংদী; আবদুর রহিম, নোয়াখালী; নাজির আহমেদ, সুনামগঞ্জ; নাদিম, রাজৈর, মাদারীপুর; নাসির আহমেদ, চাটখালী, নোয়াখালী ও সজিব, মাদারীপুর।

এসএ/

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি