ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪

নিজের বক্তব্যে অনড় প্রিয়া সাহা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৫৯, ২২ জুলাই ২০১৯

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশের ধর্মীর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ‘ভয়ঙ্কর’ তথ্য দেয়া বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা নিজের দেয়া বক্তবে অনড় থেকে বলেছেন, আমার বক্তব্য যে অসত্য তা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হোক। 

গতকাল রোববার দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে সাক্ষাৎকারকালে তিনি এ কথা বলেন। 

প্রিয়া সাহা বলেন, ২০০১ সালে  যখন ৯৪ দিন ধরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপরে নির্বাচনোত্তর চরম নির্যাতন চলছিল, তখন আজকের প্রধানমন্ত্রী তখনকার বিরোধীদলীয় নেত্রী বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার জন্য বিশ্ববাসীর নিকট আহ্বান জানিয়েছেন। 

যে কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে, যেকোনো জায়গায় বলা যায় এটা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে শিখেছেন বলে দাবি করেন তিনি। 

মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার কয়েক সেকেন্ডের কথোপকথন আর ভিডিও অনলাইনে ছেড়ে দিয়ে কোন গোষ্ঠী লাভবান হতে চেয়েছে, তা খতিয়ে দেখার দাবি জানান প্রিয়া সাহা। বলেন, যারা আমার বিরুদ্ধে মিছিল, মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করছে। বাংলাদেশটা যেমন তাদের, তেমনি আমারও। আমি আমার দেশে ফেরার অপেক্ষায় আছি। 

এ সময় ৩৭ মিলিয়ন বা তিন কোটি ৭০ লাখ সংখ্যালঘু ‘ডিস-অ্যাপিয়ার্ড’ হওয়াকে ক্রমাগতভাবে হারিয়ে যাওয়া অর্থে বলেছেন বলে জানান তিনি। বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর জনসংখ্যার সরকারি হিসাব দেখলেই এটি স্পষ্ট হবে। আর যদি ১৯০১ সাল থেকে হিসাব ধরা হয়, তাহলে এ সংখ্যা চার কোটি ৯০ লাখ হবে।

তিনি বলেন, সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৪৭ সালে এ দেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর সদস্য ছিল ২৯.৭ শতাংশ। ২০০১ সালের জরিপে তা নেমে এলো ৯.৬ শতাংশে। বাংলাদেশের জনসংখ্যা এখন প্রায় ১৮ কোটি। 

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশে তো এখন সংখ্যালঘুর সংখ্যা ছয় কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশে বর্তমানে সংখ্যালঘুর সংখ্যা এক কোটি ২৯ লাখ। অর্থাৎ, চার কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার হওয়ার কথা ছিল।

প্রিয়া সাহা বলেন, আজ ৩৭ মিলিয়ন নিয়েই শুধু কথা হচ্ছে। অথচ সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর দখল, উচ্ছেদ হচ্ছে তা নিয়ে কেউ বলছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি। 

প্রিয়া বলেন, ‘গত ২ মার্চ পিরোজপুরে আমার বাড়িতে অগ্নিসংযোগের খবর পরদিন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। সে সময় কেউ এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি। অথচ ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার পর সেই আগুনকে সাজানো নাটক বলছে! খোঁজ নিয়ে সত্যটা জানুন।’

তার বক্তব্যে সংখ্যালঘুদের কেন হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে প্রশ্ন রাখেন তিনি। বলেন, কেন তাদের মুখ চেপে ধরে মিথ্যা বলতে বাধ্য করা হচ্ছে। কেন ঢাকায় আমার বাসায় তালা দেয়ার চেষ্টা চলছে। 

এক প্রশ্নের জবাবে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের এ নেতা বলেন, আমি চাইনা বাংলাদেশ আফগানিস্তান ও পাকিস্তান হোক। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সহিংস উগ্রবাদ দমন ও  সংখ্যালঘুদের নিরাপদে রাখতে যাতে একসঙ্গে কাজ করেন সে জন্য কথাগুলো বলেছেন বলে দাবি করেন তিনি।  

প্রিয়া সাহা বলেন, ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎকার ও কথোপকথন নিয়ে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র করেছে মৌলবাদী ও উগ্রবাদীদেরই একটি চক্র। আর অনেকে না বুঝে তাতে জড়িয়েছেন, এমনকি সরকারও সে ফাঁদে পা দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন। 

তিনি বলেন, আমি তো সরকারের পরিসংখ্যান ধরেই কথা বলেছি। এসময় তিনি সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলেননি বলেও দাবি করেন। 

আই/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি