ঢাকা, বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪

যে কারণে পোলেন্ড ভ্রমনে যাবেন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:৫২, ১২ মে ২০২০

ইতিহাস ও ঐতিহ্যে ঘেরা পোল্যান্ড
দ্য রিপাবলিক অব পোল্যান্ড, যাকে যাকে পোল্যান্ড নামেই সবাই চিনি। এটি হচ্ছে মধ্য ইউরোপের এক অপূর্ব সুন্দর দেশ পোল্যান্ড। এই  দেশটিকে ঘিরে রয়েছে সর্বমোট সাতটি দেশ।  উত্তরে লিথুয়ানিয়া ও রাশিয়া এবং দক্ষিণে চেক প্রজাতন্ত্র ও স্লোভাকিয়া আর পশ্চিমে জার্মানি, পূর্বে ইউক্রেন ও বেলারুশ,। কার্পেথিয়ান পাহাড়ের সবুজের ছায়াঘেরা নীল সবুজ আর বাল্টিক সাগরের নীল জলরাশি দেশ হচ্ছে পোল্যান্ড। এই ভূমি হচ্ছে সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের এক অপূর্ব মেলবন্ধন । অপূর্ব সুন্দর ও ঝকঝকে এক দেশ পোল্যান্ড। পোল্যান্ডে বহু দর্শনীয় স্থান  রয়েছে।

পজনান
পোল্যান্ডের পুরনো রাজধানী হচ্ছে পজনান । শহরটির অন্যতম স্থান হচ্ছে ওল্ড টাউন স্কোয়ার। এখানকার বিভিন্ন স্থাপনাতে দেখা যায় প্রাচীনকালের গোথিক স্থাপত্য , । এছাড়াও টাউন স্কয়ারের বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পাবেন ছাগলের নানান রকম স্থাপত্য। এই কারণে পজনান শহরকে বলা হয়ে থাকে, ‘দ্য সিটি অব হেড বাটিং গোটস।’ এর পেছনে রয়েছে এক বহুল প্রচলিত গল্প । একবার শহরের এক বাবুর্চি হরিণের মাংস রান্না করতে গিয়ে পুড়িয়ে ফেলেন। তখনই তিনি পাশের মাঠে চড়ে বেড়ানো দুটো ছাগলকে ধরে এনে তাদের রান্না করার সিদ্ধান্ত নিলেন,  ছাগল দুটি বিষয়টা বুঝতে পেরে রান্নাঘর থেকে পালিয়ে ওল্ড টাউন হলের চার্চের মাথায় উঠে যায়। এই ঘটনার পর থেকেই স্থানীয়রা  বিশ্বাস করতে শুরু করে যে ছাগল দুটি কোনো শুভ প্রতীক। তাই পোলিশদের জীবনের সাথে জড়িয়ে রয়েছে হেডবাটিং গোটসের আইকনটি। চার্চের ঘড়িতে দুপুর বরোটার ঘন্টাধ্বনি হতেই দুটি যান্ত্রিক ছাগল বেলের মাথা থেকে একটি জানালা দিয়ে বাইরে এসে দাঁড়ায়। দুই ছাগলে কিছুক্ষণ শিঙে শিঙে গুঁতোগুঁতি করে আবার ভেতরে প্রবেশ করে।
রক্লো
পজাননের পর যাত্রাকরা যাক রক্লোর পথে, পজানন থেকে রক্লোর যাওয়া পথে চারদিকে চোখে পড়বে ঘন সবুজ জঙ্গল। আর তার পাশে বয়ে যাচ্ছে ওডার নদী। পর্যটকদের জন্য ওডার নদীতে নৌকায় চেপে শহরটির চারদিক ঘুরে দেখার ব্যবস্থা রয়েছে। ওডার নদীর ধারে অবস্থিত রয়েছে পশ্চিম পোল্যান্ডের এক বৃহত্তম শহর রক্লো। এই শহড়টি শতাব্দী ধরে প্রিসিয়া, পোল্যান্ড, জার্মানি এবং বোহেমিয়াদের দ্বারা শাসিত হয়েছে । কিন্তু ১৯৪৫ সালের পর থেকে শহরটি পোল্যান্ডের অংশ হয়ে গেছে। শহরটিতে রয়েছে অসাধারণ কিছু স্থাপত্য।কিন্ত এই শহরের প্রধান আকর্ষণ মার্কেট স্কয়ার, ওল্ড টাউন হল ও সেন্ট এলিজাবেথ চার্চ। এই শহরটির চারপাশ দেখার জন্য চার্চের সঙ্গে রয়েছে একটি অবজারভেশন টাওয়ার।  পোল্যান্ডের বৃহত্তম চিড়িয়াখানাটি এখানেই অবস্থিত।

ওয়ারস
পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারস যেন ছাই থেকে উঠে আসা ফিনিক্স পাখি। এই শহরে জন্মগ্রহণ করেছেন শাস্ত্রীয় সুরকার ফ্রেড্রিক চপ্পিন। শহরটির গোড়াপত্তন হয়  দ্বাদশ শতকের কাছকাছি সময়ে । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর শহরটিকে আবার নতুনভাবে পুনরুজ্জীবিত করা হয়। শহরটিকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে । শহরের ওল্ড টাউন স্কোয়ারের মাঝখানে রয়েছে ঢাল-তলোয়ার হাতে মারমুখী মৎস্যকন্যার এক বিশাল স্থাপত্য । এই স্থাপত্যের কারণে ওয়ারসকে বলা হয় ‘দ্য সিটি অফ মারমেইড’। এখানেই আরো রয়েছে কোপারনিকাস বিজ্ঞান কেন্দ্র।

তোরান 
তোরান শহরটি ভিস্তুলা নদীর ধারে অবস্থিত জ্যোতির্বিজ্ঞানী কপারনিকাসের জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত।   শহরটি ন্যাশনাল জিওগ্রোফির চোখে বিশ্বের ৩০টি সুন্দর শহরের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে।  মধ্যযুগের বেশ কয়েকটি পুরনো স্থাপনা এখনও শহরটিতে  রয়েছে। শহরের টাউন হলটি  নির্মিত হয়েছে ত্রয়োদশ শতকে। ঐ সময়ের অনেক পুরাতন গির্জা, ক্যাথেড্রাল পর্যটকদের দৃষ্টিতে আকর্ষণীয় স্থান।
এ ছাড়া পোল্যান্ডে টাট্রা পর্বত, বেইলওইজা ফরেস্ট, অসউইজ, লুবিন, সোপোত শহরের মতো আরও অনেক খ্যাতিসম্পন্ন দর্শনীয় রয়েছে।
বিশ্বের পুরোনো শহরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্বাদ পেতে দেশটি ভ্রমণ করতে পারেন, এছাড়াও আধুনিকতার ছোঁয়ায় গড়া ত্রিমাত্রিক জগৎ দেখেও বিমুগ্ধ হতে পারেন।
পোল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য আসা বাংলাদেশি শিক্ষার্থী থাকলেও সেই তুলনায় প্রবাসী বাংলাদেশির সংখ্যা খুবই কম।  স্বল্পসংখ্যক বাংলাদেশি আছেন, যারা পোল্যান্ডে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। যদি পোলেন্ড ভ্রমনে যান দেখবেন বাংলাদেশি কমিউনিটির মাঝে এক ধরনের আন্তরিকতা বিরাজমান। বাংলাদেশের সব উৎসবই পোলেন্ডে পালন করা হয়।  যেমন বাংলা নববর্ষ থেকে শুরু করে বাংলাদেশি খাদ্য উৎসব, ঈদ পুনর্মিলন আছ্নই, বিজয় দিবসসহ বিভিন্ন উৎসব সব দিবসই পালন করে থাকেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
সূত্র-সমকাল
এস ইউ এ


 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি