ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

সাকিবকে না পেয়ে কলকাতার আফসোস 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২৩:৫৬, ১৫ এপ্রিল ২০১৮

গতকাল প্রথমবারের মতো পুরনো দলের বিপক্ষে খেললেন, ব্যাটে-বলে-ফিল্ডিংয়ে ঝলসে উঠলেন সাকিব। কলকাতার তাঁকে নিয়ে দেখা দিয়েছে আফসোস। এই অলরাউন্ডারকে কেকেআরের যোগ্য ভাবেনি টিম ম্যানেজমেন্ট! তাই তাঁকে নিয়ে পত্রপত্রিকায় চলছে তুমুল আলোচনা ।

২০১৭ আইপিএলে মাত্র একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাওয়া সাকিবকে নিলামের আগে রেখে দেয়নি কলকাতা। নিলামে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ তাঁকে কিনলেও কেকেআরের সামনে সুযোগ ছিল রাইট টু ম্যাচ পদ্ধতি ব্যবহার করে ওই দামেই সাকিবকে নিজ দলে টানা। সেটিও কেকেআর করেনি।

কেকেআর যেমন তাদের দুবারের আইপিএল জয়ী অধিনায়ককেও রাখেনি। কিন্তু কেকেআর থেকে সাকিবের বিদায় যতটা নীরবে হয়েছে, তা তাঁর প্রাপ্য ছিল কি না, এ প্রশ্ন তখন উঠেছে। টানা সাত বছর কেকেআরের হয়ে খেলেছেন তিনি। আইপিএলের বাঙালি প্রতিনিধিত্ব দলের একাদশে একমাত্র বাঙালি খেলোয়াড়ও হয়ে গিয়েছিলেন এক সময়।  কলকাতা থেকে সেই সাকিবের বিদায়ে কেকেআরের যেন একটি টুইটও করতেও কার্পণ্য ছিল!

 সাকিব এ নিয়ে মুখে কোনো কিছু বলেননি। এমনকি কেকেআর ম্যাচের আগে ভারতীয় বার্তা সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইডেনে খেলছেন বলে এ ম্যাচ নিয়ে বাড়তি কোনো উচ্ছ্বাস বা জবাব দেওয়ার প্রসঙ্গও এড়িয়ে গেছেন। কিন্তু  সাকিবের সেরাটা বেরিয়ে এল কালই। বাংলা নববর্ষে, বাংলার পরিচিত ভেন্যুতে বৃষ্টিস্নাত রাতে ঝলসে উঠল সাকিব।

বল হাতে ক্রিস লিন আর সুনীল নারাইনের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট দুটি নিয়েছেন। নিয়েছেন দুটি ক্যাচ। এরপর ব্যাট হাতে ২১ বলে ২৭ করেছেন, অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে গড়েছেন ৫৯ রানের জুটি। ব্যাটে-বলে-ফিল্ডিংয়ে অলরাউন্ডার সাকিব জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন কাল।

ক্রিকইনফোর ম্যাচ প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল: ‘সাবেক নাইট রাইডার সাকিবের নেতৃত্বে কলকাতায় সানরাইজার্সের প্রথম জয়’।

এরপরই যেন সাকিবকে নিয়ে ঘুম ভেঙেছে কলকাতার পত্রপত্রিকাগুলো। আনন্দবাজার তাদের ‘কেকেআরের  প্রাক্তন তিন নাইট’ শিরোনামের বিশেষ প্রতিবেদনে লিখেছে, ‘নাইটদের কাঁটা হয়ে বিঁধলেন তিন প্রাক্তন নাইট । সাকিব চার ওভারে ২১ রান দিয়ে দুই উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতেও ম্যাচ জেতানো জুটি গড়লেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে। আন্দ্রে রাসেলকে স্কোয়ারকাটে পয়েন্টের ওপর দিয়ে হেলায় ছক্কা মারলেন সাকিব। শটটা যেন চাবুকের মতো সেই সব কেকেআর কর্তার ওপর আছড়ে পড়ল, যাঁরা তাঁকে ঢাকার প্রতিবেশী শহর থেকে চলে যেতে দিয়েছেন হায়দরাবাদে।’

‘কার্তিকদের ইডেনে হারিয়ে তৃপ্ত ঋদ্ধিমানরা’ শিরোনামের আরেকটি প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘ঋদ্ধির মতো না হলেও সাকিব আল হাসানও ব্যাট হাতে ছিলেন বিধ্বংসী মেজাজে। বল হাতেও ফেরান বিপক্ষের দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান ক্রিস লিন ও সুনীল নারাইনকে। জয়ের হাসিও শেষে তাঁরাই হাসেন। ইডেনে আসার আগে শনিবার দুপুরে শহরের এক বাঙালি রেস্তোরাঁয় বন্ধুদের সঙ্গে বাঙালি খাবার খেয়ে আগাম নববর্ষ পালন করেন সাকিব। রাতেও আর এক দফা পালন করলেন বাংলার নতুন বছর আসার আনন্দ।’

সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার, আনন্দবাজারের নিয়মিত কলাম লেখক অশোক মালহোত্রার বিশ্লেষণে বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে সাকিবের প্রসঙ্গ।

কলকাতার আরেকটি পত্রিকা এবেলা শিরোনাম করেছে: ‘বৃষ্টিবিঘ্নিত লড়াইয়ে নাইট শিবিরে ধাক্কা দিলেন সেই সাকিবরা’। আর ‘এই সময়’-এর শিরোনাম তো আরও ঝাঁজালো: ‘বাতিল বাঙালির নববর্ষের প্রতিশোধ’।

প্রতিবেদনটা তারা শুরুই করেছে এভাবে: সুযোগ ছিল। কিন্তু নিলামে তাঁকে ব্রাত্যই করে রেখেছিল কেকেআর। সাকিব আল হাসান সেসব নিয়ে ভাবেননি। তবে নববর্ষের প্রাক্কালে পুরোনো টিমকে কাঁদিয়ে ছাড়ার পেছনে বড় ভূমিকা রেখে গেলেন তিনি।’

কলকাতার ইংরেজি দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ লিখেছে, ‘সাকিব শেষ পর্যন্ত হয়তো খেলে যেতে পারেনি, কিন্তু তাঁর পারফরম্যান্স যা ছিল, প্রথমে বল হাতে তার পর ব্যাট হাতে খুবই প্রয়োজনীয় এক ইনিংস, এটা নিশ্চিত রবিবার বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনটা দারুণভাবেই তিনি কাটাতে পারছেন।’

কেআই/টিকে


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি