ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর কৌশল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫৪, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১৬:৩৪, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

মোবাইল চার্জে দিয়ে মোবাইল খুঁজতে খুঁজতে হয়রান হওয়ার ঘটনা কি আপনার সঙ্গে ঘটেছে কখনো? বা মাথার ওপর চশমা রেখে আপনি কি সারা ঘরে চশমা খোঁজেন? এমন করে আপনি কি প্রায়ই কিছু না কিছু ভুলে যান?


স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়লেই এমন সমস্যায় পড়তে হয় আমাদের। বিভিন্ন কারণে আমাদের স্মৃতিশক্তি প্রভাবিত হয়, স্মৃতিশক্তি কমে যায়; আমরা ভুলে যাই। ঘুমের অসুবিধা, মানসিক চাপ, বিষণ্ণতা, অপুষ্টি, থাইরয়েড হরমোন নিঃসরণে সমস্যা, ধূমপান, মদ্যপান এসব কারণে স্মৃতিশক্তি কমে যায়।

এছাড়া প্রবীণ বয়সে স্মৃতিভ্রম রোগেও এ ধরনের সমস্যা হয়। বেশি সমস্যা হলে চিকিৎসা তো নিতে হবেই, তবে তার আগে কিছু কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। কিছু ‘ঘরোয়া ওষুধ’ খেয়েও দেখতে পারেন আপনি। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট টপ টেন হোম রেমেডিতে এ বিষয়ে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।


*মানসিক চাপ নিবেন না

রাগ, ক্ষোভ বা উদ্বেগ আপনার ব্রেনকে কিছু সময়ের জন্য স্থবির করে দেয়, যা আপনার স্মরণশক্তি কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট প্রভাব ফেলতে পারে। মানসিক চাপের মধ্যে বিষন্নতা সবচেয়ে মস্তিষ্কের ক্ষতি করে। বিষণ্ণতা আপনার মনোযোগ দেয়ার ক্ষমতা কমিয়ে ফেলে এবং রক্তে করটিসলের লেভেল বাড়িয়ে দেয়। করটিসেলের লেভেল বেড়ে গেলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমে যায়, বিশেষ করে হিপ্পোক্যাম্পাসের। যেখানে শর্টটার্ম মেমোরি সংরক্ষিত থাকে। তাই বিষণ্ণতা সহ সকল মানসিক চাপ যতদূর সম্ভব কমিয়ে ফেলুন।


*গান শুনুন
গবেষকরা দেখিয়েছেন কিছু সংগীত স্মৃতিশক্তি বাড়াতে উপকারি। ব্যাপারটা এই রকম যে, কোনো ঘটনার সময় আপনি যদি কোন গান শুনেন তবে পুনরায় সেই গান শোনার সময় সেই ঘটনার আবহের স্মৃতি আপনার মস্তিষ্কে জেগে উঠবে।


*ব্যায়াম
ব্যায়াম শুধু আপনার শরীরকেই সচল করে না, এটি আপনার মস্তিষ্ককেও সচল রাখে। স্থুলতা এবং অতিরিক্ত ওজন আপনার মস্তিস্কের জন্যও ক্ষতিকর। নিয়মিত ব্যায়াম না করলে কিংবা শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো সচল না থাকলে রক্তবাহী নালীগুলো চর্বি জমে। ফলে স্বাভাবিক রক্তচলাচল ব্যহত হয়। মস্তিষ্কে রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবারাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে মস্তিষ্কের কোষগুলোও। তাই নিয়মিত ব্যায়াম করুন, সচল রাখুন আপনার শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো।


*লিখে রাখুন
যে বিষয়গুলো স্মৃতিতে রাখতে চান তা লিখে ফেলার অভ্যাস করুন। এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও আছে। লেখার সময় মস্তিষ্কে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তপ্রবাহের পরিমাণ বাড়ে। তাই লিখে রাখুন ডায়রিতে, ইমেইলে বা ব্যক্তিগত ব্লগে।


*পুষ্টিকর খাবার খান
মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য অবশ্যই আপনাকে ভিটামিন যুক্ত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। তাজা ফলমূল, গাঢ় সবুজ শাকসবজি, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, গমের রুটি প্রভৃতি প্রোটিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন। পরিমান মতো বিশুদ্ধ পানি পান করুন। প্রচুর চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করুন। বিশেষ করে বাসি-দূষিত খাবার খাবেন না। ওগুলো স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আর ধূমপান ও মাদক সেবন থেকে বিরত থাকুন। এগুলো আপনার মস্তিষ্কের জন্য ভয়ানক ক্ষতিকর।


*অন্যকে শেখান
নিজে যা শিখতে চাচ্ছেন। তা একবার শিখে নিয়ে অন্যকে শেখান। অন্যজনকে শেখাতে গিয়ে দেখবেন আপনার জানার ঘাটতিগুলো ধরতে পারছেন। আবার চর্চাও হবে আরেক জনকে শেখানোর মাধ্যমে। নতুন কিছু বিষয়ে আপনার কোন চিন্তা আরেকজনের সঙ্গে শেয়ারও করতে পারেন। তাহলে আপনার স্মৃতিতে তা স্থায়ী হবে। লোকটাকে দেখা মাত্রই বিষয়টি আপনার স্মৃতিতে আসবে।


*পর্যাপ্ত ঘুম
একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক আট ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। একটা চমৎকার ঘুম আপনার মস্তিষ্ককে অধিক কার্যকরী করে তোলে। ঘুমের সময় সাম্প্রতিক সময়ের তথ্যগুলোকে মস্তিষ্কসংরক্ষণ করতে থাকে। তাই নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুমের মাধ্যমে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে পারেন।


**ঘরোয়া উপায়:

স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে উপকার পেতে পারেন। আসুন জেনে নিই সেই সম্পর্কে-


কাঠবাদাম
কাঠবাদাম একটি চমৎকার আয়ুর্বেদিক উপাদান। এটি স্মৃতিশক্তি ও মস্তিষ্কের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের জন্যও ভালো।


যা করতে হবে  
- ৫ থেকে ১০টি কাঠবাদাম সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন।
- পরের দিন সকালে খোসা ছাড়িয়ে নিন এবং একে গুঁড়া করুন।
- এক গ্লাস দুধের মধ্যে এই গুঁড়া মিশিয়ে ফুটান।
- স্বাদ বাড়ানোর জন্য সামান্য চিনি বা মধু মেশাতে পারেন।
- ৩০ থেকে ৪০ দিন এটি প্রতিদিন খান।


২. মধু ও দারুচিনি
মধু ও দারুচিনি স্নায়ুকে শিথিল করে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। গবেষণায় বলা হয়, কেবল দারুচিনি একটু নাকের কাছে নিয়ে শুঁকলেও স্মৃতিশক্তি ভালো হয়, এতে মস্তিষ্কের কার্যক্রম বাড়ে।
অনেকে এও বলেন, ঘুমের আগে মধু খেলে মানসিক চাপ কমে; ঘুমেও সাহায্য হয়। এটি স্মৃতি একত্রীকরণে ভূমিকা রাখে।


যা করতে হবে
- এক চা চামচ কাঁচা মধুর মধ্যে এক চিমটি দারুচিনি মেশান।
- কয়েক মাস ধরে প্রতি রাতে এটি খান।
//এআর


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি