ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪

মঞ্চ গুটিয়ে নিলেন কাদের মির্জা

নোয়াখালী প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ১৩:১১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট রূপালী চত্বর থেকে সেই সভামঞ্চটি গুটিয়ে নিলেন আবদুল কাদের মির্জা। যে মঞ্চে সত্যবচনের নামে অপরাজনীতি নিয়ে সাম্প্রতিক রাজনীতির মাঠ গরম করেছিলেন তিনি। একের পর এক উপজেলা, জেলা, জাতীয় পর্যায়ের দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে আলোচনা, সমালোচনা, বিষোদগার করেছিলেন তিনি। 

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মীর জাহিদুল হক রনি জানান, ‘গত ১১ ফেব্রুয়ারি পৌর মেয়র হিসেবে আবদুল কাদের মির্জা শপথ গ্রহণের পরদিন থেকে মঞ্চটি তৈরি করে সেখানে নিয়মিত সভা সমাবেশ করে আসছিলেন। এছাড়া জানুয়ারি মাসে নির্বাচনের আগে এবং পরে আরো বেশ কয়েকবার একই স্থানে তিনি অস্থায়ী মঞ্চে সভা সমাবেশ করেন।’

অবশেষে মঙ্গলবার রাতে প্রশাসনের নির্দেশে কাদের মির্জার লোকজন সভা মঞ্চটি সরিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এ সময় আবদুল কাদের মির্জা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। মঞ্চ খোলার দৃশ্য দেখে হতাশা ব্যক্ত করেন তিনি। 

এক পর্যায়ে নিজ অনুসারীদেরকে মঞ্চ থেকে ব্যানার খুলে নেয়ার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘রাশেইজ্জা কইরে? ব্যানার খুলি হালা, য-য-য, মারি হারাক- ধরি হালাক যাও যাও চলে যাও। (রাশেদ কোথায়? ব্যানার খুলে ফেলো। যাও যাও। মেরে ফেলুক, ধরে ফেলুক, চলে যাও-চলে যাও)।’

এ সময় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুপ্রভাত চাকমা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহিদুল হক রনি উপস্থিত ছিলেন। 

এই মঞ্চ থেকে বসুরহাট পৌর সভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার নিজ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী, মন্ত্রী-এমপি এমনকি প্রশাসনিক কর্মকর্তাদেরকে নিয়ে নানারকম বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই কাদের মির্জার এসব বক্তব্য দেশব্যাপী আলোচনা সমালোচনার ঝড় তোলে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে রূপালী চত্বরে বাঁশের খুটি পুঁতে ও কাঠ দিয়ে তৈরি মঞ্চ থেকে সভা সমাবেশ করে আসছেন। এ মঞ্চে তিনি দলীয় নেতাকর্মী, মন্ত্রী-এমপি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নামের সঙ্গে অনিয়ম-দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগের তীর ছোড়েন। 

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মীর জাহিদুল হক রনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘রূপালী চত্বর নামে পুরো জায়গাটা বাজারের ভেতর সড়কের ওপর। সেখানে সভা সমাবেশ হলে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আবদুল কাদের মির্জাকে মঞ্চটি সরিয়ে নিতে বার বার তাগিদ দেওয়া হলেও তিনি শুনেননি। গত সোমবার ১৪৪ ধারা পৌর এলাকায় জারির মধ্যে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী বারণ উপেক্ষা করে সেখানে সভা করার চেষ্টা করেন তিনি। আইন শৃঙ্খলাবাহিনী সভামঞ্চের কাছ থেকে সরে যাওয়ার পর পরই তিনি বারবার সেখানে সভা করার চেষ্টা করেন।’

তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতেও আইন শৃঙ্খালা পরিস্থিতি অবনতি ঘটার আশঙ্কায় বসুরহাটে কাউকে সভা সমাবেশ না করার আহ্বান জানায় প্রশাসন। প্রশাসনের বারণ উপেক্ষা করে মির্জা সাহেব এবারও বার বার সভাস্থলে তার লোকজনকে জড়ো করার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে রাত ৯টার দিকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুপ্রভাত চাকমাসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তিনি মঞ্চটি সরিয়ে নেন।’

যান চলাচলের জায়গায় এ ধরনের মঞ্চ করা বেআইনী উল্লেখ করে ওসি বলেন, ‘আর কেউ যাতে নতুন করে মঞ্চ তৈরি করতে না পারে সেদিকে আমাদের নজরদারি থাকবে।’
এআই/ এসএ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি