ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

পিত্তের অসুখ সারায় অশ্বথের ছাল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:৪৩, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১১:০৭, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭

(ফাইল ফটো)

(ফাইল ফটো)

অশ্বথ একটি ওষুধী গাছ। এর রয়েছে অনেক গুণ। এই গাছ ব্যবহার করে নানাবিধ অসুখ থেকে আরোগ্য লাভ করার সুয়োগ রয়েছে। বিশেষ করে পিত্তের রোগ ও শিশুর মুখের ক্ষত নিরাময়ে এই কাজ করে। এই গাছের গুনাবলি তুলে ধরেছেন ড. তপন কুমার দে তার ‘বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় গাছ-গাছড়ার’ বইয়ে। একুশে টেলিভিশন অনলাইনের পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো-

বাতরক্তে- অশ্বথ বৃক্ষের সরস ছাল (উপরের চটা অর্থাৎ মরা ছাল নয়) ২০ গ্রাম নিয়ে থেতো করে ৪ কাপ জলে সিদ্ধ করে এক কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে সকালে ও বিকেলে আধা কাপ করে খেলে ১০/১৫ দিনের মধ্যে এটা কমের দিকে যাবে। তবে এর সঙ্গে আধ চা-চামট করে মধু মিশিয়ে খেতে পারলে ভাল হয়, এটা চরকীর ব্যবস্থা।

পিত্ত বমনে- অনেক সময় এই পিত্তমনটা জ্বর হলেও হয় আবার না হলেও হয়, এক্ষেত্রে অশ্বথের চটা ( স্বাভাব মৃত ছাল) অন্তর্ধূমে দগ্ধ করে অর্থাৎ হাড়ির মধ্যে ছাল পুরে, সরা চাপা দিয়ে মাটি নিয়ে হাড়িঁর মুখে লেপে, রোদ্রে শুকিয়ে নিয়ে পোড়া দিতে হয়। ভিতরের ছালগুলো পুড়ে কয়লায় পরিণত হবে, সেই অঙ্গার ৪/৫ গ্রামে এক কাপ জলে দিয়ে নেড়ে ওই কয়লাটা একটা ন্যাকড়ায় ছেকে ফেলে দিয়ে ওই পরিস্কার জলটা একটু একটু করে খেলে পিত্ত বমন বন্ধ হয়ে যায়।

পিত্তজ্বরের পিপাসায়- উপরিউক্ত পদ্ধতিতে জল তৈরি করে দুয়েক চামচ করে খেলে পিপাসা চলে যায়।

স্বপ্নদোষে- এটা তিন প্রকার কারণে হতে পারে ১- অজীর্ণ দোষে ২- ভোগের লিপ্সা দমিত হলে ৩- অতৃপ্ত ভোগে, এদর ক্ষেত্রে অশ্বথের শুঙ্গ ৩/৪টি ( পাতা বেরোবার সময় যেটা গোল হয়ে বেরোয়) পানি দিয়ে বেটে একটু চিনি মিশিয়ে অথবা শুধু খেতে হবে

শিশুদের মুখের ক্ষতে- অশ্বথের ছাল ( চটা নয়) শুকিয়ে সেটাকে মিহিচূর্ণ করে ১ টিপ ২/৩ পেটা মধু মিশিয়ে চাটলে মুখের ক্ষত শুকিয়ে যায়।

বাহ্য প্রয়োগ ক্ষতে- এমন কতগুলি ক্ষত হয়, যেটায় পুঁজ প্রচুর জন্মে এবং যন্ত্রনাও থাকে, সেক্ষেত্রে অশ্বথের কচিপাতা ক্ষতের উপরে চাপা দিয়ে বেঁধে রাখলে ওই পুঁজ পড়া কমে যাবে এবং যন্ত্রণারও উপশম হবে।

বিস্তৃতি – বাংলাদেশের সর্বত্র। বিশেষ করে ভাঙ্গা পুরাতন ভবনের গায়ে চারা দেখা যায়। বিশেষ করে ফলভূক পাখীর উদরের তাপে বীজ আঙ্কুরিত হয়।

বংশবিস্তার- চৈত্র মাসে অশ্বথ বৃক্ষ পত্রশূন্য হয়ে আবার নতুন পাতায় ভরে যায়। তারপরেই হয় ফল এবং বর্ষার শেষে ফল পেকে যায়। এ সময় বীজ রোপণ করত হয়।

সাধারণ ব্যবহার- কাঠ নরম ও নিম্নমানের। সাধারণত, জ্বালানী , প্যাকিং বাক্স, ম্যাচ বাক্স, ও জোয়ল ইত্যাদিতে কাঠ ব্যবহৃত হয়। বাকলের কষে ট্যানিন আছে এবং কখনও কখনও চামড়া টেনিন ও রংকরণে ব্যবহৃত হয়। বাকলের আশঁ থেকে রশি হয়।

পরিচিতি- অশ্বথ বৃহদাকার পত্রঝরা বৃক্ষ, উচ্চতা ৬-৮০ ফুট হয়ে থাকে। কোন বায়বীয় মূল নাই। সাধারণত, ছোট অবস্থায় পরগাছা হিসেবে অন্য গাছের উপর জন্মে। পাতা একান্তর, সরল, অখণ্ড,বৃন্তক, উপত্র বিশিষ্ট, লম্বা গোলাকৃতি, ১৫-২০ সেন্টি মিটার লম্বা হয়ে থাকে এবং অগ্রভাগে চিকন লম্বা হয়। ফুল সমাঙ্গ, একলিঙ্গ ও গর্ভপাদপুস্পী। পুষ্পবিন্যাস নিয়ত বা স্পাইক। অরাবিন্যাস শীর্ষক। ফল যৌগিক আবৃন্তক, ছোট , চ্যাপ্টা গ্লোবুজ ও পাকলে কালো হয়।

 

এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি