ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪

রাইফার মৃত্যু

আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন সাংবাদিক রুবেল খান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০০:০২, ৮ জুলাই ২০১৮

রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় করা তদন্তে সন্তুষ্ট হতে পারেননি তার বাবা সমকালের চট্টগ্রাম ব্যুরোর স্টাফ রিপোর্টার রুবেল খান। তদন্ত প্রতিবেদনে ভুল চিকিৎসায় তার মেয়ের মৃত্যুর বিষয়টি উঠে না আসায় এমন অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন তিনি। খুব দ্রুত তিনি রাইফার মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানান।

রুবেল খান বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদনে আমি সন্তুষ্ট নই। হাসপাতালে রাইফাকে ভর্তির পর থেকে তার সঙ্গে যা হয়েছে সেখানে ভুল চিকিৎসার বিষয়টি পুরোপুরি স্পষ্ট। গলা ব্যথার জন্য আমার মেয়েকে ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করার পর তাকে যখন অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন দেওয়া হয়, তখন সে রিঅ্যাক্ট করে।

আমি বিষয়টি দেখে তাকে আর অ্যান্টিবায়োটিক না দেওয়ার কথা বলি। আমি বুঝতে পারছিলাম, অ্যান্টিবায়োটিক সে (রাইফা) নিতে পারছে না। তারপরও দ্বিতীয়বার অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। এর ফলে তার খিঁচুনি শুরু হয়। একপর্যায়ে আমার মেয়ে মারা যায়। চিকিৎসকদের এমন ভুল চিকিৎসার বিষয়টি তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসেনি।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটির পর সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত টিমও শিশু রাইফার মৃত্যু ম্যাক্স হাসপাতালের চিকিৎসকদের অবহেলায় হওয়ার প্রমাণ পায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত দুই চিকিৎসক দেবাশীষ সেনগুপ্ত ও শুভ্র দেবকে দায়িত্ব পালন থেকে সরিয়ে দেয় ম্যাক্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

 শনিবার তাদের বিরুদ্ধে এমন সিদ্ধান্ত নেন তারা। ম্যাক্স হাসপাতাল যে দুই চিকিৎসককে বাদ দিয়েছে তারা এই হাসপাতালের নিয়োগকৃত কোনো চিকিৎসক নন। তাদের যে ম্যাক্স হাসপাতালের কোনো নিয়োগপত্র নেই তার প্রমাণও পেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত দল। নিয়োগপত্র ছাড়া কর্মরত দুই চিকিৎসককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির ঘটনায় ম্যাক্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নতুন করে প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা পালন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন সাংবাদিক-জনতা। এমন ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তারা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সাংবাদিক রুবেল খানের আড়াই বছরের শিশু রাইফার মৃত্যুর পর চিকিৎসক দেবাশীষকে শোকজ করে ম্যাক্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দেবাশীষ সেটি গ্রহণ না করে স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দেন। চিকিৎসক শুভ্র দেব শোকজ নোটিশ গ্রহণ করে জবাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে দেবাশীষ ও শুভ্র দু`জনই নিয়মিত ম্যাক্স হাসপাতালে এলেও তাদের দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।

সরেজমিন পরিদর্শন করে ও যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে ম্যাক্স হাসপাতালের বিরুদ্ধে ১১টি ত্রুটির (অনিয়ম) প্রমাণ পায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।

উল্লেখ্য, গত ২৮ জুন জ্বর ও গলা ব্যথা নিয়ে চট্টগ্রামের বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে আড়াই বছরের শিশু রাইফাকে ভর্তি করানো হয়। সেখানকার চিকিৎসকদের চরম অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার বলি হয়ে ভর্তির ৩০ ঘণ্টা পর মারা যায় শিশু রাইফা। এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ঝড় ওঠে।

 কেআই/এসএইচ/

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি