ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

ইঁদুরের তবু পালানোর গত্ত রয়েছে, আমাদের তাও নেই....

রাশেদ আহমেদ

প্রকাশিত : ১৮:৫৫, ২৪ মার্চ ২০২০ | আপডেট: ২০:৫৭, ২৪ মার্চ ২০২০

ফেরী উপচে পড়েছে ঘরে ফেরাদের চাপে

ফেরী উপচে পড়েছে ঘরে ফেরাদের চাপে

পৃথিবীতে কোনও কারণ ছাড়া কিছু ঘটেনা। এই যে করোনার আগ্রাসন; এরও কারণ আছে। এই ধাক্কাটির দরকার ছিল। এই ধাক্কায় পড়ে গিয়ে কারা বাচঁবেন আর কারা মারা যাবেন -এ প্রশ্নের উত্তর অজানা। তবে এই মৃত্যুর পর যারা বেঁচে থাকবেন হয়তো ইতিবাচক ভাবনায় থাকবেন বিশ্বে। এখন যার বড় অভাব।

আমরা পৃথিবীকে তো তার মতো করে থাকতে দেইনি। পৃথিবীর রূপ, গন্ধ, বর্ণকে আগলে রাখিনি। বিশ্বের কিছু নিয়ম-নীতি- শৃংখলা আছে, তার তোয়াক্কা করিনি। আছে আদর্শ, নৈতিকতা -তা মানতে চাইনি। সবাই ডেসপারেট হয়ে গেছি। ধর্মের নামে ডেসপারেট, অধর্মের নামে ডেসপারেট। মানুষের মানবতা নষ্ট করার নামে ডেসপারেট। যে ধর্ম পালন করেন চান অন্য সব ধর্ম ধ্বংস হয়ে যাক। 

সবাই নিজেরটাই শুধু ভাবি। নিজেকে নিয়েই ভাবি। এতোটা স্বার্থপরতা! নিজের মতো করেই সব চাই। এরতো একটি শোধ আছে। 

মানুষের সংকীর্ণতা এখন মানবজাতির জন্য লজ্জার। অগ্রাধিকার এখন বিনোদন আর আয়েশের। কল্যাণের চিন্তা ভাবনা কমে গেছে। প্রকৃতি কেনো এটা সইবে? 

সুনির্মল বসুর সেই কবিতা এই যুগে কেউ রপ্ত করেনা -আকাশ আমায় শিক্ষা দিল উদার হতে ভাইরে। কর্মী হবার মন্ত্র আমি বায়ুর কাছে পাইরে। নদীর কাছে শিক্ষা পেলাম আপন বেগে চলতে। মাটির কাছে সহিষ্মুতা পেলাম আমি শিক্ষা.......। 

রাশেদ আহমেদ

সেদিন একটা লেখা পড়লাম। সেটি এ রকম-
রাগে ক্ষোভে ফেটে পড়া স্পেনিশ বায়োলজিকাল রিসার্চার বলেছেন- এক মাসে একজন ফুটবলার কয়েক মিলিয়ন ইউরো আয় করে। আর একজন রিসার্চার আয় করে মাত্র ১৮০০ ইউরো। এক ছবিতে একজন ম্যুভি স্টার যা আয় করে- সারা জীবন গবেষণায় একজন গবেষক তার একশত ভাগের একভাগও আয় করেনা। আর এখন জীবন বাঁচাতে আপনি হন্যে হয়ে ভাইরাসের প্রতিষেধক খুঁজছেন। যান না এখন মেসি, রোনাল্ডো, টমক্রুজের কাছে। ওরাই আপনাকে সারিয়ে দেবে। 

নেসেসিটির চেয়ে লাক্সারী যে পৃথিবীতে বড় হয়ে যায়, জীবন বাঁচানো মানুষদের চেয়ে বিনোদনের মানুষ সেলিব্রেটি হয়ে যায়, হাসপাতালের চেয়ে স্টেডিয়ামের গুরুত্ব বেড়ে যায়- সেই অসভ্য সমাজেতো মানুষের বেঁচে থাকারই কোনও অধিকার নাই।

লেখাটি ক্ষোভের হলেও -এটিই সত্য। এক সময়তো মানুষ শুধু মানুষের কল্যাণের কথাই ভাবতো। এখন ভাবেনা। সবাই নিজের বলয় তৈরি করে রেখেছে। তাই প্রকৃতি এমন ভাইরাস দিয়েছে। চাইলেও কেউ কাছে আসতে পারছে না। আরও দূরে সরিয়ে দিয়েছে সবাইকে। এমন অবস্থা, পালানোর জায়গা নেই দেশ বিদেশ কোথাও। 

বিষয়টা কবি আবুল হাসানের কবিতার মতো, ‘ইঁদুরের তবু পালানোর রয়েছে গত্ত। আমাদের তাও নেই’। যা হোক, এই পরিস্থিতির উন্নতি হবে হয়তো অনেক জীবনের বিনিময়ে। সবাইকে তাই বলি, মানুষের কথা ভাবুন। মানবতার কথা ভাবুন। সবাইর প্রতি ভালোবাসা। বেঁচে থাকলে দেখা হবে এই সুন্দর পৃথিবীতে।

লেখক- সাংবাদিক

এনএস/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি