ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

মশা আমদানি করে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমানোর উপায়

প্রকাশিত : ২০:১৭, ১৬ মে ২০১৯

ডেঙ্গুর জীবাণু বহনকারী এডিস মশার সংখ্যা কমানোর লক্ষ্যে পরীক্ষামূলকভাবে `উলভাকিয়া` প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে কিনা তা যাচাই করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়েছে।

জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচি ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার এম এম আখতারুজ্জামান জানান, `উলভাকিয়া` এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া, যা পুরুষ মশার শরীরে প্রবেশ করানোর মাধ্যমে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, `মশা নির্মূল এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি উলভাকিয়া নামের এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া মশার দেহে প্রবেশ করিয়ে এডিস মশার সংখ্যা কমানোর পরীক্ষামূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশ।‘

থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ফিজিসহ বেশ কয়েকটি দেশ সফলভাবে এই পরীক্ষামূলক প্রকল্প চালিয়ে তাদের দেশের এডিস মশার সংখ্যা কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে বলে জানা যায়। আখতারুজ্জামান আরও বলেন, ‘ঐসব দেশের উদাহরণ পর্যবেক্ষণ করে এই উলভাকিয়া প্রজেক্ট বাংলাদেশেও প্রচলন করা বাস্তবসম্মত কিনা, তা যাচাই করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়েছে।’ বাংলাদেশের বাস্তবতায় এ ধরণের প্রকল্প কতটা সম্ভবপর এবং যুক্তিসঙ্গত হবে তা যাচাই করে প্রতিবেদন প্রকাশ করবে ঐ কমিটি। তবে এ মুহুর্তে মশা আমদানি করার কোনো পরিকল্পনা নাই নেই বলে জানান এ কর্মকর্তা। এই প্রকল্পের সম্ভাবনা যাচাই বা পরীক্ষামূলক প্রকল্প করা হবে কিনা সে বিষয়ে কারিগরি কমিটির মিটিংয়ের পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

উলভাকিয়া: কীভাবে কাজ করবে এই প্রকল্প:

বিভিন্ন দেশে কোন পদ্ধতিতে এই প্রকল্পের সফল পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালানো হয়েছে তা ব্যাখ্যা করেন এম এম আখতারুজ্জামান। তিনি জানান, উলভাকিয়া ইনফেক্টেড পুরুষ মশা পরিবেশে ছেড়ে দেয়ার পর তারা নারী মশার সাথে মিলিত হয়ে নারী মশাদের ডিম তৈরি করার ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। এর ফলে একটি এলাকার এডিস মশার ঘনত্ব ৫০ ভাগ বা কখনো তার চেয়ে বেশি পরিমাণে কমে যায়।

যেই মশার মাধ্যমে রোগটি ছড়ায়, সেই মশাটির সংখ্যা যখন পরিবেশে কমে যায় তখন ঐ রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনাও কমে যায়। এই ধারণার ওপর ভিত্তি করেই বাংলাদেশে এই প্রকল্পের পরীক্ষামূলক বাস্তবায়নের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হতে পারে বলে জানান আখতারুজ্জামান।

এ ধরণের প্রকল্প গ্রহণের আগে পুনঃস্তরবিন্যাসকরণ, পরিবেশগত প্রভাব যাচাই, মানুষের ব্যবহারের ধরণ, সামাজিক ও ধর্মীয় দিকসহ নানা বিষয় যাচাই করা হয় এবং বিভিন্ন স্তরের মানুষের মন্তব্য নেয়া হয়। তবে এই প্রকল্পটি একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং এখনো এবিষয়ে কোনো ধরণের সিদ্ধান্ত আসেনি।

কারিগরি কমিটি একটি মতামত দেয়ার জন্য বলেছে। স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা বেশকিছু প্রতিষ্ঠান, গণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞসহ মশা নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞদের সাথে বসে ঠিক করা হবে যে এই উলভাকিয়া প্রজেক্টটি বাংলাদেশে পরীক্ষামূলকভাবে বাস্তবায়ন করা হবে কিনা। আর যাচাই-বাছাই শেষে যদি এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, তাহলে হয়তো ডেঙ্গু প্রতিরোধে `উলভাকিয়া` সংক্রমিত মশা ব্যবহারের চিন্তা করা হবে।

তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা।


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি