ঢাকা, সোমবার   ২১ জুলাই ২০২৫,   শ্রাবণ ৬ ১৪৩২

চলে গেলেন হরিধানের উদ্ভাবক হরিপদ কাপালী

প্রকাশিত : ০৫:১৪ পিএম, ৬ জুলাই ২০১৭ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১০:৪৯ এএম, ৭ জুলাই ২০১৭ শুক্রবার

হরিধানের উদ্ভাবক হরিপদ কাপালী আর নেই। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ৯৫ বছর বয়সী এ কৃষক বুধবার রাত ১টা ১০ মিনিটে বার্ধক্যজনিত কারণে ইহত্যাগ করেন বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।

জেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পশ্চিমে প্রত্যন্ত আসাননগর গ্রামে নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন হরিপদ। গত চার-পাঁচ মাস ধরে মূত্রনালীর অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। তার প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত পড়ত। তাকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসক দেখানো হচ্ছিল।

১৯৯৬ সালে তিনি উদ্ভাবন করেন উচ্চফলনশীল ধান বা হরিধান। তিনি যে জাত উদ্ভাবন করেন, সেটাই পরে তার নামে পরিচিতি পায়। এ ধান উদ্ভাবনের পর সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে তার নাম। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাকে দেওয় নানা পদক, পুরস্কার ও সম্মাননা।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালে নিজের ধানের জমিতে একটি ধানের গাছ দেখতে পান হরিপদ, যা অন্য গাছের চেয়ে বেশি পুষ্ট। গাছটির গোছায় শাখার সংখ্যা তুলনামূলকও বেশি ছিল। ধানের শীষ বের হলে দেখতে পান, সেগুলো অন্য গাছের চেয়ে দীর্ঘ, শক্ত এবং প্রতিটি শীষে ধানের সংখ্যা বেশি। ধান পাকলে আলাদা করে বীজ রেখে দেন তিনি। পরের মৌসুমে সেগুলো আলাদা করে আবাদ করে আশাতীত ফলন পান। এরপর ওই ধানের আবাদ বাড়িয়ে চলেন।

বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা তার কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করে হরিধানের চাষ শুরু কর। এভাবে নতুন এই জাতের বিস্তার ঘটে এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নজরে আসে। সাধারণত ধানে বিঘাপ্রতি ফলন যেখানে ১৫ মণ, সেখানে হরিধান ফলে ১৮ মণের বেশি। হরিপদ জেলা প্রশাসন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, ঢাকা রোটারি ক্লাবসহ বিভিন্ন সংস্থার ১৬টি পদক পান।

আলীয়াপুর শ্মশানঘাটে বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটায় যখন তাকে সমাহিত করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহের পৌর মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহ মো. আকরামুল হকসহ স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।