ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪

যাকাত আদায়কারীর মর্যাদা ও না আদায়ের পরিণতি কী হবে

প্রকাশিত : ১৪:৩৭, ৬ মে ২০১৯ | আপডেট: ১৬:২৬, ৮ মে ২০১৯

যাকাত আদায়ের অনেক মর্যাদা ও গুরুত্ব রয়েছে। যাকাত কবরে মানুষকে রক্ষা করবে। একটি হাদীসে বলা হয়েছে যে, ‘একজন মু’মিনকে যখন কবরে রাখা হয় তখন তার আমলগুলো চতুর্দিকে অবস্থান নেয়। তার মাথার কাছে সালাত, ডান পাশে রোযা, বাম পাশে যাকাত ও পায়ের দিকে অবস্থান নেয় নফল আমলগুলো। অতঃপর এগুলো বর্ম হিসেবে ভূমিকা পালন করে তাকে কবরের আযাব হতে রক্ষা করে। আল্লাহ তা’আলা যাকাত আদায়কারীদের ভুল-ত্রুটি ও পাপমোচন করবেন এবং তাদেরকে জান্নাত দান করবেন।’

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আল্লাহ বনি ইসরাইলের অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলেন এবং আমি তাদের মধ্য থেকে বারো জন নকীব নিয়োগ করেছিলাম। আল্লাহ তাদের বলেছিলেন, আমি তোমাদের সঙ্গে আছি যদি তোমরা সালাত কায়েম করো, যাকাত প্রদান করো, আমার রাসূলদের প্রতি ঈমান রাখো, তাঁদের সাহায্য করো এবং আল্লাহকে উত্তম পন্থায় ঋণ দিতে থাকো তাহলে অবশ্য তোমাদের থেকে মুছে দেবো তোমাদের পাপসমূহ এবং অবশ্য অবশ্য তোমাদের দাখিল করব জান্নাতসমূহে যেগুলোর নিচ দিয়ে বহমান থাকবে নদ-নদী নহর’। (সূরা আল মাইদাহ, ৫:১২)

যাকাত আদায় না করার পরিণতি: আল্লাহর সকল বিধান মানুষের সার্বজনীন কল্যাণের জন্য। আল্লাহ তা’আলার প্রতিটি আদেশ-নিষেধের দুই ধরনের ফলাফল বা পরিণতি রয়েছে। একটি পরকালে পাওয়া যাবে এবং সেটিই মুখ্য। তাঁর আদেশ অমান্য করার পরিণাম ইহকালেও ভোগ করতে হয়, যদিও অনেক সময় মানুষ তা উপলব্ধি করতে পারে না।

প্রথমত, ধনীর সম্পদে যেহেতু দরিদ্র ও নিঃস্বের অধিকার থাকে তাই যাকাত আদায় না করলে সম্পদে অপরের অধিকার থেকে যায়। ফলে তা পবিত্র হয় না। অপবিত্র সম্পদে আল্লাহ পাক বরকত দান করেন না এবং ওই সম্পদধারী আল্লাহর রহমত হতে বঞ্চিত ও দুনিয়ায় শাস্তিপ্রাপ্ত হয়।

দ্বিতীয়ত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সওয়াবের আশায় যাকাত দেবে তার জন্য রয়েছে প্রতিদান। আর যে যাকাত দেবে না আমরা তার সম্পদ হতে যাকাত আদায় করবই, উপরন্তু আমাদের রবের কড়া নির্দেশের আলোকে তার সম্পদের একাংশ নিয়ে নিবো। তবে মুহাম্মদের পরিবারের জন্য এর কোন অংশই হালাল নয়।’ (আহমদ, নাসাঈ, আবু দাউদ)

তৃতীয়ত, যাকাত আদায় না করে যারা সম্পদ পুঞ্জিভূত করে রাখবে কিয়ামতের দিন ওই সম্পদ জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে, অতঃপর তা দিয়ে তার মালিকের শরীরে সেঁক দেয়া হবে।

চতুর্থত, যারা বিপুল সংখ্যক চতুষ্পদ জন্তুর মালিক ছিল, কিন্তু যাকাত আদায় করেনি, কিয়ামতের দিন ওই জন্তুগুলোকে তাদের মালিকের কাঁধের ওপর চাপানো হবে। রাসূল (সা.) বলেছেন, চতুষ্পদ জন্তুর মালিকরা যদি যাকাত আদায় না করে তাহলে কিয়ামতের দিন ওই ব্যক্তিকে উপুড় করে শোয়ানো হবে। তারপর তার জন্তুগুলোকে পূর্বের চেয়ে বেশি মোটাতাজা করে উপস্থিত করা হবে। জন্তুগুলো তাদের মালিককে শিং দিয়ে গুঁতো দেবে এবং খুর দ্বারা পদদলিত করবে। এভাবে শাস্তি চলতে থাকবে জান্নাত বা জাহান্নামের ফয়সালা হওয়ার আগ পর্যন্ত।

পঞ্চমত, যারা বিপুল সম্পদের মালিক, অথচ যাকাত আদায় করে না, কিয়ামতের দিন ওই সম্পদ সাপের আকৃতি ধারণ করে তার মালিককে দংশন করবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যাকে আল্লাহ সম্পদ দান করেছেন কিন্তু সে তার যাকাত দেয়নি, কিয়ামতের দিন তার সম্পদকে টেকো মাথাওয়ালা সাপের আকৃতি দান করে তার গলায় ঝুলিয়ে দেয়া হবে। সাপটি তার মুখের দু’পার্শ্বে দংশন করে বলবে, আমি তোমার সম্পদ, আমি তোমার সঞ্চিত ধনভান্ডার’। (সহীহ আল বুখারী)

তথ্যসূত্র: সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্ট (সিজেডএম)

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি