ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪

রোজা ফরজ হওয়ার হেকমত ও উপকারিতা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:৪০, ২ মে ২০২০

আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ক্ষমা ও পুরস্কারপ্রাপ্তির মহিমান্বিত মুহূর্তগুলো আমাদের জীবনে বারবার ঘুরেফিরে আসে। রমজান হলো কল্যাণ ও বরকতের বসন্তকাল। এ মাসের করণীয় কাজগুলো মহব্বতের সাথে আঞ্জাম দেওয়া এবং বর্জনীয় বিষয়গুলো থেকে সতর্কভাবে বিরত থাকা জরুরি। 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে যেরূপ তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল, যাতে করে তোমরা মোত্তাকি হতে পার।’ 
(সূরা বাকারা : আয়াত নং-১৮৩)।

রোজা ফরজ হওয়ার হেকমত ও উপকারিতা
ইসলামী শরিয়তে রোজার বিধান প্রবর্তনের পিছনে বহু হেকমত, উপকারিতা ও অন্তর্নিহিত তাৎপর্য বিদ্যমান। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো-
১. রোজার মাধ্যমে তাকওয়া বা আল্লাহভীতি অর্জিত হয়। 
২. রোজা মহাপ্রভুর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যম। 
৩. রোজার মাধ্যমে অফুরন্ত রহমত লাভ করা যায়। 
যেমন হাদিসে এসেছে- রমজানের আগমনে রহমতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়। 
৪. জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাধ্যম। 
যেমন হাদিসে এসেছে- রমজানের আগমনে জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। 
৫. রোজা দ্বারা ব্যক্তির চরিত্র বিধ্বংসী কুপ্রবৃত্তি দমন হয়। 
৬. রোজা দ্বারা ব্যক্তির চক্ষু, কর্ণ, জিহ্বা ও লজ্জাস্থান প্রভৃতি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অতিরিক্ত চাহিদা অবদমিত হয়। 
৭. রোজার মাধ্যমে ব্যক্তি কুপ্রবৃত্তি ও প্রলোভনের ওপর জয়ী হয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে সক্ষম হয়। 
৮. রোজা দ্বারা অন্তরের যাবতীয় মলিনতা ও কুটিলতা দূর হয়। 
৯. রোজা ব্যক্তিকে যাবতীয় অবাঞ্ছিত কাজ থেকে বিরত থাকতে অভ্যস্ত করে তোলে। 
১০. রোজা শয়তানের আক্রমণ প্রতিহত করার শ্রেষ্ঠ হাতিয়ার। 
যেমন হাদিসে এসেছে- ‘রোজা ঢালস্বরূপ।’ 
১১. রোজার কারণে ক্ষুধার অনুভূতি ধনীর অন্তরে দরিদ্রের জন্য সহানুভূতি জাগিয়ে তোলে এবং দরিদ্রকে সাহায্য করার মানসিকতা সৃষ্টি করে। 
১২. রোজার মাধ্যমে ক্ষুধার তীব্র পীড়নে জর্জরিত গরিবদের প্রতি ধনীদের অন্তরে বেদনার অনুভূতি জাগ্রত হয়। 
১৩. রোজা পালনের মাধ্যমে অতীতের গুনাহগুলোর ক্ষমা পাওয়া যায়। 
যেমন- হজরত আবু হোরায়রা রা: থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে- ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াব লাভের আশায় রোজা পালন করে, তার পূর্বাপর গুনাহগুলোকে ক্ষমা করে দেয়া হয়।’ 
১৪. রোজা বিশ্বমুসলিম সমাজে সাম্য, মৈত্রী, ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসার সৃষ্টি করে। 
১৫. রোজার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধিসহ ধৈর্য, সহিষ্ণুতা ও নম্র স্বভাবের গুণে গুণান্বিত হওয়া যায়। 
১৬. রমজান হলো কুরআন নাজিলের মাস। কুরআনের আলোকে সমাজ বিনির্মাণের প্রেরণা জোগায় পবিত্র মাহে রমজান। 
১৭. রোজা জান্নাতে প্রবেশের এক উত্তম মাধ্যম। 
হাদিসে ইরশাদ হয়েছে- ‘জান্নাতের আটটি দরজা রয়েছে, তন্মধ্যে একটি দরজার নাম হচ্ছে ‘রাইয়্যান’। এটি দিয়ে একমাত্র রোজাদাররাই প্রবেশ করবেন।’
১৮. স্রষ্টার সান্নিধ্য লাভের অন্যতম মাধ্যম। 
যেমন হাদিসে কুদসিতে এসেছে- ‘আল্লাহ তায়ালা বলেন, রোজা শুধু আমার জন্য, আমিই এর প্রতিদান দেবো।’ 
১৯. পাপাচার ও অবাঞ্ছিত কাজ হতে বিরত রাখে। 
২০. স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনে অনুপ্রাণিত করে। 
২১. বিভিন্ন রোগজীবাণু ধ্বংস ও শারীরিক সুস্থতা আনয়ন করে। 
২২. মানসিক প্রশান্তি লাভের অন্যতম মাধ্যম। 
২৩. রোজাই মানুষকে আল্লাহ ও বান্দার অধিকার আদায়ে যোগ্য করে তোলে। পরিশেষে বলা যায়, বান্দাকে সঠিক ও সরল পথে পরিচালিত করার জন্য রোজা হচ্ছে সঠিক এঁরফব ষরহব. সার্বিক দিক থেকে সংযম হওয়ার মাধ্যমে মানুষের চরিত্র গঠনের এক অনন্য পন্থা।
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি