ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

৪ ডিসেম্বর : ফুলছড়ি মুক্ত দিবস

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২১, ৪ ডিসেম্বর ২০২০

আজ ৪ ডিসেম্বর। গাইবান্ধার ফুলছড়ি মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হয় ফুলছড়ি উপজেলা ও তিস্তামুখ রেলওয়ে ফেরিঘাট। গাইবান্ধার মধ্যে ফুলছড়ি প্রথম এলাকা যা হানাদার বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হয়।

দিবসটি উপলক্ষে ফুলছড়ি উপজেলা প্রশাসন ও সাঘাটা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মুক্তিনগরের ধনারুহা শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পন, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।

১৯৭১ সালের ২৩ এপ্রিল ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদ ও এর চার কিলোমিটার দূরে তিস্তামুখ রেলওয়ে ফেরিঘাট এলাকায় ঘাঁটি স্থাপন করে পাকিস্তানি সেনারা। এই দুই ক্যাম্প থেকে তারা সাধারণ মানুষের বাড়িতে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও নারী নির্যাতন চালাত। পাকিস্তানি বাহিনীর এই দুই ঘাঁটি দখলে নেয়ার পরিকল্পনা করেন মুক্তিযোদ্ধারা।

৩ ডিসেম্বর রাতে গেরিলা মুক্তিযোদ্ধারা কমান্ডার সামছুল আলম, কমান্ডার নাজিম উদ্দিন, আব্দুল জলিল তোতা ও এনামুল হকের নেতৃত্বে চারটি দলে ভাগ হয়ে ব্রহ্মপুত্র পাড়ি দেয়। তারা ফুলছড়ি থানা সদরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়।

৪ ডিসেম্বর সূর্য ওঠার আগেই ফুলছড়ি থানায় আক্রমণ করে মুক্তিযোদ্ধারা। ওই দিন ফুলছড়ি ক্যাম্পে থাকা পাকিস্তানি সেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে তিস্তামুখ ফেরিঘাট ক্যাম্পে চলে যেতে বাধ্য হয়। মুক্তিযোদ্ধারা দুই ক্যাম্পের পাকিস্তানি সেনাদের ধাওয়া করে অগ্রসর হতে থাকে। পরে তাদের ধাওয়া খেয়ে পাকিস্তানি বাহিনী পিছু হটে পাশের সাঘাটা উপজেলার গোবিন্দি বাঁধে আশ্রয় নেয়। এখানে তাদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে মুক্তিযোদ্ধারা। মাত্র ১০ থেকে ১২ মিনিটের যুদ্ধে পরাজিত হয়ে আত্মসমর্পণ করে প্রায় দুইশ পাকিস্তানি সেনা।

এই যুদ্ধে ২৭ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। শহিদ হন পাঁচজন মুক্তিযোদ্ধা। ওই দিনই (৪ ডিসেম্বর) মুক্ত হয় ফুলছড়ি উপজেলা ও তিস্তামুখ রেলওয়ে ফেরিঘাট।

ফুলছড়ি মুক্ত করার যুদ্ধে শহিদরা হন, আফজাল হোসেন, কবেজ আলী, যাহেদুর রহমান বাদল, ওসমান গণী ও আব্দুল সোবহান।

একাত্তরের ৪ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিযোদ্ধারা ফুলছড়ি থানা আক্রমণ করে ৪২টি রাইফেল, ২৫টি বন্ধুকসহ বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ লুট করেন। ওইদিন ফুলছড়ি সিও অফিস (বর্তমান উপজেলা পরিষদ কার্যালয়) ও ফুলছড়ি তিস্তামুখ ফেরিঘাটে আক্রমণ চালানো হয়।

পরদিন ৫ ডিসেম্বর পাঁচ শহিদের মরদেহ গরুর গাড়িতে করে সাঘাটা থানার সগুনা ইউনিয়নের খামার ধনারুহা স্কুল মাঠে নিয়ে এসে সমাহিত করা হয়। দেশ স্বাধীন হলে তাদের সম্মানে সগুনা ইউনিয়নের নাম পরিবর্তন করে মুক্তিনগর ইউনিয়ন রাখা হয়।

প্রসঙ্গত, শহিদদের সম্মানে তাদের কবরের পাশে স্মৃতিসৌধ ও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতি বছর এ দিনে তাদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়।
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি