ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

দীনবন্ধু মিত্রের প্রয়াণ দিবস আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৫৫, ১ নভেম্বর ২০২০

ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলা নাটকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রূপকার দীনবন্ধু মিত্রের প্রয়াণ দিবস আজ। তিনি ১৮৭৩ সালের আজকের এই দিনে না ফেরার দেশে চলে যান।

বাংলার আধুনিক নাট্যধারার প্রবর্তক মাইকেল মধুসূদন দত্তের সমসাময়িক দীনবন্ধু মিত্র মাইকেল প্রবর্তিত পৌরাণিক বা ঐতিহাসিক নাট্যরচনার পথে না গিয়ে বাস্তবধর্মী সামাজিক নাট্যরচনায় মনোনিবেশ করেন। এই ধারায় তিনিই হয়ে ওঠেন পরবর্তীকালের নাট্যকারদের আদর্শস্থানীয়।

দীনবন্ধু মিত্রের প্রথম প্রকাশিত নাটক নীলদর্পণ প্রকাশিত হয় ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে। এর পরে ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয় তার দ্বিতীয় নাটক নবীন তপস্বিনী। দীনবন্ধুর দুটি উৎকৃষ্ট প্রহসন হল ‘সধবার একাদশী’ ও ‘বিয়ে পাগলা বুড়ো’।

১৮৭২ খ্রিষ্টাব্দে তার অপর এক প্রহসন ‘জামাই বারিক’ প্রকাশিত হয়। ১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয় তার সর্বশেষ নাটক ‘কমলে কামিনী’। নাটক ছাড়াও দুখানি কাব্যগ্রন্থও দীনবন্ধু রচনা করেছিলেন – দ্বাদশ কবিতা (১৮৭২) ও সুরধুনী কাব্য (প্রথম ভাগ – ১৯৭১ ও দ্বিতীয় ভাগ – ১৮৭৬)।

দীনবন্ধু মিত্রের জন্ম উত্তর ২৪ পরগণা জেলার চৌবেরিয়ায়। পিতা হলেন কালাচাঁদ মিত্র। দীনবন্ধুর পিতৃদত্ত নাম ছিল গন্ধর্ব নারায়ণ। দরিদ্র পরিবারে জাত দীনবন্ধুর প্রাথমিক শিক্ষা গ্রাম্য পাঠশালায়। সেখানে কিছুদিন পাঠগ্রহণের পর তার পিতা তাকে জমিদারের সেরেস্তার কাজে নিযুক্ত করে দেন।

দীনবন্ধু মিত্র বিদ্যোৎসাহী ছিলেন। তাই তিনি কলকাতায় পালিয়ে আসেন এবং পিতৃব্যের গৃহে বাসন মেজে লেখাপড়া চালিয়ে যান। এই সময়েই দীনবন্ধু নাম গ্রহণ করে জেমস লঙের অবৈতনিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। পরে কলুটোলা ব্রাঞ্চ স্কুল (বর্তমানে হেয়ার স্কুল) থেকে ১৮৫০ খ্রিষ্টাব্দে স্কুলের শেষ পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়ে বৃত্তি লাভ করে হিন্দু কলেজে (বর্তমানে প্রেসিডেন্সি কলেজ) ভর্তি হন। ১৮৫১ সালে আবার উচ্চতর পরীক্ষায় বৃত্তিলাভ করেন এবং ১৮৫২ সালে তৃতীয় শ্রেণী থেকে সিনিয়র বৃত্তিলাভ করেন। প্রত্যেক পরীক্ষায় বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে তিনিই সর্বোচ্চ স্থান অধিকার করেছিলেন।

দীনবন্ধু মিত্র ১৮৫৫ সালে ১৫০টাকা বেতনে পটনায় পোস্টমাস্টার নিযুক্ত হন। ক্রমে তার পদোন্নতি হয় এবং তিনি ওড়িশা, নদিয়া ও ঢাকা বিভাগে এবং পরে কলকাতায় সুপারিনটেন্ডেন্ট পোস্টমাস্টার নিযুক্ত হন।

১৮৭১ সালে লুসাই যুদ্ধের সময় তিনি ইংরেজদের বিপর্যস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনর্গঠিত করেন। ১৮৭১ সালে তার সার্বিক কাজের সাফল্য বিবেচনা করে ইংরেজ সরকার রায়বাহাদুর উপাধি প্রদান করেন। এরপর ডাক বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল হগের অপ্রীতিভাজন হওয়ায় সুপরনিউমররি ইনস্পেকটিং পদ থেকে তাকে অপসারিত করা হয়। ১৮৭২ সালের দিকে তাকে ইস্ট-ইন্ডিয়ান রেলওয়েতে ইন্সপেক্টর পদে বদলি করা হয়। এর কিছুদিন পরে তাকে ইন্সপেক্টিং পোস্টমাস্টার পদে অবনমিত করা হয়। এ সময় বহুমুত্ররোগে আক্রান্ত হন দীনবন্ধু মিত্র। পরবর্তীতে ১৮৭৩ সালের ১ নভেম্বর তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন।

এমবি//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি