ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪

ড. সাইফ-উদ-দৌলা খান

‘ভাষা উৎসব’ নিয়ে আমরা গর্বিত ও আশাবাদী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:২৬, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | আপডেট: ১৭:৫৬, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ড. সাইফ-উদ-দৌলা খান

ড. সাইফ-উদ-দৌলা খান

সম্প্রতি ‘বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন গ্লাসগো’র (বিএজি) প্রতিনিধি হয়েছেন ড. সাইফ-উদ-দৌলা খান। বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ভাষার শেকড় প্রতিষ্ঠার লক্ষে গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি ‘ভাষা উৎসব’র আয়োজন করা হয়েছিল। সেই উৎসবটি ২০১৯ সালে ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক আদিবাসী ভাষার বছরের অংশ হয়েছিল। 

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ড. সাইফ-উদ-দৌলা ভাষা উৎসবের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। পরিকল্পনা, উৎসাহ ও সীমাবদ্ধতাও উঠে এসেছে তার আলোচনায়। ওই সাক্ষাৎকারের কিছু অংশ তুলে ধরা হলো: 

প্রশ্ন: ভাষা উৎসবে আপনার কাজ সম্পর্কে আমরা জানতে চাই

ড. সাইফ-উদ-দৌলা খান: গেল বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি আমরা ভাষা উৎসবের আয়োজন করেছিলাম। এটির আয়োজন করেছিলাম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মাসে। তবে আমি বলছি না যে, আমরা প্রতি বছর এ উৎসব পালনে সমর্থ হব। তবে চেষ্টা করতে পারি। আমাদের একটা ছোট সংগঠন আছে। যার নাম ‘বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশন গ্লাসগো (বিএজি)’। যা ১৯৭১ সাল থেকে শুরু হয়েছে। কিন্তু আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে এর কার্যক্রম শুরু করি ২০১৪ সালে, এর মাধ্যমে আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে চাই। ২০১৪ সালে গ্লাসগোতে কমনওয়েলথ গেমস অনুষ্ঠিত হয়েছিল তখন আমরা ভাষা উৎসবে আয়োজন করি। আমরা আমাদের কমিটির মাধ্যমে ভালো কাজ করার চেষ্টা করেছি। কমিটি গঠনের কয়েক বছর পর আমরা এ অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা করি। আমরা তখন অনুধাবন করি, আমরা যদি গ্লাসগোতে অনুষ্ঠান করে সফলতা পেতে চাই তাহলে অন্য ভাষাগুলোকেও অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। গ্লাসগো সিটি কাউন্সিলে ২০১৭ সালের অক্টোবরে আমরা প্রথম আমাদের পরিকল্পনা উপস্থাপন করি। এবং আমরা সিটি মেয়রের সাথে সাক্ষাৎ করি। এই শহরে আমরা অনেক ভাষা নিয়ে কাজ করতে সমর্থ হয়। অনেক মানুষই আমাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী, যা আমাকে অবাক করেছে। 

প্রশ্ন: আপনার সংগঠনকে স্কটল্যান্ডের জাতীয় থিয়েটারের অনুষ্ঠানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, এ বিষয়ে জানতে চাই

ড. সাইফ-উদ-দৌলা খান: ২০১৬ সালে স্কটল্যান্ড জাতীয় থিয়েটারের ১০ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল। আমরা গ্লাসগো’র প্রতিনিধি হিসেবে আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম। ঐ অনুষ্ঠানের মূল প্রতিপাদ্য ছিল কাছে এবং দূরে। অভিবাসী লোকদের কাছে বাড়ির সংজ্ঞা কিভাবে পরিবর্তন হচ্ছে এ বিষয়টি অনুসন্ধান করাই এ ধারণার মূল জায়গা। আমরা এর আগে থিয়েটারে অভিজ্ঞ ছিলাম না। তবে স্কটল্যান্ডের থিয়েটার কর্তৃপক্ষ আমাদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করেছিল। সে কারণেই আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করতে সামর্থ হই। আমরা ওই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে মঞ্চে মূল চরিত্রে অভিনয় করি। আমরা যে চরিত্রে অভিনয় করি তার বিষয় ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ। 

প্রশ্ন: ভাষা উৎসব কি শুধুমাত্র সাহিত্য ভিত্তিক?

ড. সাইফ-উদ-দৌলা খান: না, তেমন না। আমরা এখানে বেশ কিছু বিষয় অর্ন্তভূক্ত করতে যাচ্ছি। আমরা যদি একটি ভাষা নিয়েই কাজ করি তবে অনেক মানুষই আগ্রহী হবে না। সে কারণেই আমরা অনেক সাহিত্য, সঙ্গীত, অভিনয় এবং অন্যান্য বিষয়গুলো অর্ন্তভূক্ত করছি। শেষ বছরে আমাদের উৎসবে আমরা অনেক ইনফোটেইনমেন্ট, জিম্বাবুয়ে থেকে অনেক কবি ও শিল্পী এসেছিলেন। তারা দর্শকদের সঙ্গে উৎসব উদযাপন করেছিলেন। মানুষের আগ্রহের জায়গা দেখে আমরা উৎসবের মধ্যে বৈচিত্র্য আনতে চেষ্টা করছি। আমরা এক ফিলিস্তিনের কবিকে পেয়েছিলাম যিনি কবিতা আবৃত্তি করে শুনিয়েছিলেন। আমাদের এক গ্রীক শিল্পী ছিল যিনি কবিতা আবৃত্তি করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের উৎসর্গ করেছিলেন। এক ইরানি অর্থনীতিবিদ যিনি কানাডার প্রবাসী তিনি আমাদের উৎসবে এসে অর্থনীতির উপর ভাষার প্রভাবের একটা লেকচার দিয়েছিলেন। আমরা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সংস্কৃতির অনেক কবি, শিল্পী ও সাহিত্যিক পেয়েছিলাম, যারা নিজ ভাষা গেয়েছেন বা আবৃত্তি করেছেন। আমরা আমাদের এ উৎসবের জন্য গর্বিত এবং আমরা আশাবাদী, ভবিষ্যতে এটির ধারাবাহিকতা রাখতে পারব। 

এমএস/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি