যুক্তরাজ্য নির্বাচন: টিউলিপ-রুশনারা-রুপা-আপসানা জয়ী
প্রকাশিত : ১২:২৭, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ১৩:০০, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯
যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মত লেবার পার্টি থেকে জয় লাভ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক, রূপা হক এবং এবং চতুর্থবারের মত নির্বাচিত হয়েছেন রুশনারা আলী। এছাড়া প্রথমবারের মতো জয়ী হয়েছেন আপসানা বেগম।
টিউলিপের হ্যাটট্রিক জয়
লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড ও কিলবার্ন আসন থেকে টানা তৃতীয়বারের মতো জয়ী হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক।
শুক্রবার পাওয়া ফলে দেখা যায়, ২৮ হাজার ৮০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। টিউলিপের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি কনজারভেটিভের জনি লুক পেয়েছেন ১৩ হাজার ৮৯২ ভোট।
ব্রিটেনের রয়েল সোসাইটি অব আর্টসের ফেলো টিউলিপ রেজোয়ানা সিদ্দিক ২০১৫ সালে এ আসন থেকে প্রথমবার পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। ঐ নির্বাচনে ২৩ হাজার ৯৭৭ ভোট পান তিনি। ২০১৭ সালের নির্বাচনে তিনি ৩৪ হাজার ৪৬৪ ভোট পেয়ে পুনঃনির্বাচিত হন।
এবার তৃতীয়বারের মতো জয়ী হওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তার নির্বাচনী এলাকার সকল ভোটার, সমর্থক, শুভাকাঙ্ক্ষীসহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন টিউলিপ।
ব্রিটেনের বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. শফিক সিদ্দিক ও শেখ রেহানা দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে টিউলিপ দ্বিতীয়। লন্ডনে জন্ম নেওয়া এই ব্রিটিশ বাংলাদেশি ১৬ বছর বয়সে লেবার পার্টির সদস্য হয়ে রাজনীতিতে যুক্ত হন। এমপি নির্বাচিত হওয়ার আগে টিউলিপ ক্যামডেনের কাউন্সিলর ছিলেন। ওই কাউন্সিলে তিনিই প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারী কাউন্সিলর।
চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত রুশনারা
২০১০ সাল থেকে বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসনে টানা তিনবার লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন রুশনারা আলী। এবারও তিনি ‘বেথনালগ্রিন-বো’ আসন থেকে চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন।
৪৪ বছরের এ রাজনীতিকের জন্ম সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ভুরকি গ্রামে। ছোটোবেলায় মা-বাবার সঙ্গে লন্ডনে যান। ২০১০ সালের পর ২০১৫ সালের নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে নির্বাচিত হন রুশনারা আলী। ২০১৭ সালের নির্বাচনেও ভোট ব্যবধান বাড়ে।
রূপা হকের হ্যাটট্রিক জয়
যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের একটি আসন থেকে আবারও জয় পেলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক রুপা হক। শহরের ইলিং সেন্ট্রাল আসনে লেবার পার্টির হয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো বিজয়ী হন তিনি।
শুক্রবার প্রকাশিত নির্বাচনি ফলে দেখা যায়, রূপা হক ২৮ হাজার ১৩২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি কনজারভেটিভের জুলিয়ান গ্যালেন্ট পেয়েছেন ১৪ হাজার ৮৩২ ভোট।
রূপা হকের জন্ম ও বেড়ে ওঠা লন্ডনে। বাংলাদেশে তার আদি বাড়ি পাবনায়। রাজনীতিতে নাম লেখানোর এই ব্রিটিশ বাংলাদেশি লন্ডনের কিংসটন বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান পড়াতেন। সেখান সর্বশেষ জ্যেষ্ঠ প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন এই কলামিস্ট ও লেখক। নিজ নির্বাচনী এলাকার ভেতরে ও বাইরে রূপা হক খুব জনপ্রিয় হলেও একদমই সাধারণ জীবনযাপন করেন। তার চলাফেরা ও বিনয়ী আচরণের জন্যও তিনি বেশ জনপ্রিয়। রূপার ছোটবোন কোনি হক (কনক আশা হক) ব্রিটেনের খ্যাতিমান টেলিভিশন উপস্থাপিকা ও লেখক।
৪৮ বছর বয়সী রূপা এর আগে অল্প ভোটের ব্যবধানে হলেও ২০১৫ সালের নির্বাচনে রক্ষণশীলদের হাত থেকে লন্ডনের ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসনটি পুনরুদ্ধার করেন। ২০১৭ সালের নির্বাচনেও তিনি ব্যবধান বাড়িয়ে আসনটি ধরে রাখেন।
প্রথমবারের মতো জয়ী আপসানা
এদিকে পপলার অ্যান্ড লাইমহাউস থেকে প্রথমবারের মতো আপসানা বেগম ৩৮ হাজার ৬৬০টি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি কনজারভেটিভ পার্টির শিউন ওকে পেয়েছেন ৯ হাজার ৭৫৬ ভোট।
এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৯ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থী। যাদের মধ্যে ৭ জনই নারী।
বিরোধী লেবার পার্টি থেকে লড়েছেন সর্বোচ্চ ৭ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। লিবারেল ডেমোক্র্যাট ও কনজারভেটিভ পার্টি থেকে একজন করে এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।
আরও পড়ুন