ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

গার্মেন্টস মালিকের বাধার মুখে কোভিড-১৯ হাসপাতাল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৪২ পিএম, ২১ মে ২০২০ বৃহস্পতিবার

গার্মেন্টস মালিকের বাধার মুখে কোভিড-১৯ হাসপাতাল, সোচ্চার জনগণ।

গার্মেন্টস মালিকের বাধার মুখে কোভিড-১৯ হাসপাতাল, সোচ্চার জনগণ।

চলমান করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবেলায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার্থে এগিয়ে আসে ঢাকার বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম সুবিধা, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামাদিসহ ১৫০ শয্যার কোভিড-১৯ ইউনিট প্রস্তুত করে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করলেও অসাধু গার্মেন্টস মালিকের বাধার মুখে ব্যাহত হচ্ছে কার্যক্রম। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সরকারের কামনা করছে প্রতিষ্ঠানটি।

জানা যায়, বাংলাদেশে নভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর প্রাদুর্ভাবের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের আহ্বান এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় সাড়া দিয়ে ঢাকার বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তাদের মূল হাসপাতালে স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম অব্যাহত রেখে আইসিডিডিআরবি-এর বিপরীতে হাজী শাহাবুদ্দিন ম্যানশন, ৫২ (নতুন ক- ১৫/৬), শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণী, রসুলবাগ মহাখালী, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় অবস্থিত নিজস্ব নার্সিং কলেজ ভবনে আই.সি.ইউ ও বেডসাইড ডায়ালাইসিস সুবিধাসহ ১৫০ (একশ পঞ্চাশ) শয্যার একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) হাসপাতাল প্রস্তুত করে। স্বাস্থ্য বিভাগের ইতিবাচক পরামর্শ, সার্বিক সহযোগিতা এবং প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনের ২৪ ঘন্টা দিবা-রাত্রি প্রচেষ্টা ও পরিশ্রমের ফলে মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম সুবিধাসহ আই.সি.ইউ, বেড সাইড ডায়ালাইসিস ও অন্যান্য আনুসাঙ্গিক সুবিধাদি, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামাদিসহ ১৫০ শয্যার করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) হাসপাতাল প্রস্তুত করে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করার প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। 

কোভিড-১৯ হাসপাতাল তৈরি কাজের সম্পন্ন হওয়ার পর ভবনটির ৩টি ফ্লোরে অবস্থান করা এম ইউ ফ্যাশন ও ক্রিষ্টাল এ্যাপারেলস নামীয় দুটি গার্মেন্টস কারখানার মালিক হাসপাতালটি নির্মাণের বিরুদ্ধে তাদের অপ-তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছিল। যা এই মুহূর্তে মানবিক কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে অমানবিক। 

উল্লেখ্য, যে ভবনটিতে কোভিড-১৯ ইউনিটটি স্থাপিত হয়েছে, এর ৮টি ফ্লোরের মধ্যে ৬টি ফ্লোরই ইউনিভার্সেল মেডিকেলের। মাত্র ৩টি ফ্লোরে ২টি গার্মেন্টস কারখানা রয়েছে। জানা যায়, যারা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের লাল তালিকাভূক্ত প্রতিষ্ঠান ঘোষিত হয়েও উক্ত ভবনে তারা অবৈধভাবে অবস্থান করছে। 

শ্রম অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী, সর্বশেষ গত ডিসেম্বর-২০১৯ এর মধ্যে উক্ত ফ্লোর হতে কারখানা অপসারনের কথা থাকলে তারা অদ্যাবধি অবৈধভাবে সেখানে অবস্থান করছে। দেশ ও জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে সরকারের পাশপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে মানব সেবার এই উদ্যোগকে সকলেই যেখানে স্বাগত জানাচ্ছে সেখানে কোভিড-১৯ ইউনিট স্থাপনের পর তাদের এ ধরনের নেতিবাচক অপতৎপরতার ফলে হসপিটালের মালিক পক্ষ স্বাভাবিকভাবেই কিংকর্তব্যবিমূঢ়। 

তাই এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহের প্রয়োজনীয় সহযোগিতাই পারে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিতকল্পে এমন একটি সু-উদ্যোগকে সফল করতে। করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা যাতে নির্বিঘ্নে চলে সেজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকার প্রধানের হস্তক্ষেপ কামনা করছে  সচেতন মহল।

এনএস/