ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে বরগুনায় মৎস্য ঘেরের ব্যাপক ক্ষতি

বরগুনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৩:৩৭ পিএম, ২৩ মে ২০২০ শনিবার

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে বরগুনায় ঘরবাড়ি রাস্তাঘাট বিধ্বস্তের পাশাপাশি মাছের ঘের প্লাবিত হয়ে অনেক ক্ষতি হয়েছে। বরগুনা জেলায় ১২১টি মাছের খামার ও ১০টি চিংড়ি ঘের প্লাবিত হয়ে প্রাথমিকভাবে ২০ মেট্রিকটন মাছের ক্ষতির কথা বলেছে জেলা মৎস্য অধিদপ্তর। 

তবে মাঠ পর্যায়ে নিরুপনের পর এই ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা। আর নিরুপণ করে ক্ষতিগ্রস্থ মৎস্য চাষীদের সহযোগিতার কথা বলেছেন মৎস্য ও প্রানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, এমপি।

বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের রফিক কাজী। দীর্ঘ ৭বছর আগে ২৫ হাজার টাকা নিয়ে মৎস্য চাষ ঘের এর ব্যবসা শুরু করেন। গত চার মাস আগে তার ২টি ঘেরে তিন লাখ টাকা খরচ করে রুই, কাতল, মৃগেল, তেলাপিয়া ও গলদা চিংড়ি ছেরেছে। চার মাস হয়েছে এই মাছ ছেরেছে রফিক কাজী। কার্তিক মাসে মাছ বিক্রি করার কথা ছিলো কিন্তু হঠাৎ ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে ঘেরের বাঁধ ভেঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের পানিতে ঘের প্লাবিত হয়ে ও বাঁধ ভেঙ্গে সব মাছ বেড়িয়ে গেছে। আগে দুই বস্তা খাবার লাগত প্রতিদিন কিন্তু আজ খাবার দেয়ার পর কোন মাছই খাবার খেতে দেখা যায়নি। মাছ ছাড়ার ১০ থেকে ১১ মাস পরে মাছ বিক্রি করে কিন্তু এই বার চারমাসের মধ্যেই আম্পানের তাণ্ডবে নিজস্ব এই ঘের মালিক। 

রফিক কাজী’র মৎস্য ঘেরে পরিচর্যার কাজ করতো ছাইফুল, জাহাঙ্গীর, জাফর, ও রুহুল আমীন বলেন, এই ঘেরে প্রতিদিন কাজ করে আমাদের সংসার চলতো কিন্তু আম্পানের ধংসনীলায় আমাদের সংসার অচল হয়ে গেছে। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তান্ডবে মৎস্য চাষী শুধু রফিক কাজিই নয় উপকূলীয় আঞ্চলের অধিকাংশ মৎস্য ঘের মালিক ক্ষতির সম্মূখীন হয়েছেন। আর শুধু ছাইফুল, জাহাঙ্গীর, জাফর, ও রুহুল আমীন নয় উপকূলীয় অঞ্চলের অনেকের সংসার অচল হয়ে গেছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে ঘের মালিক ও মৎস্য চাষীরা সরকারের সহযোগীতার দাবি জানিয়েছেন।

বরগুনা জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেলায় ১২১টি মাছের খামার ও ১০টি চিংড়ি ঘের প্লাবিত হয়ে প্রাথমিকভাবে ২০ মেট্রিক টন মাছের ক্ষতি হয়েছে এবং এর আর্থিক মূল্য ৩০ লাখ টাকা। বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, মৎস্য ঘেরের ক্ষতির নিরুপণ চলছে জেলায় ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।

বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি’র সভাপতি অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্থ সকল মৎস্য চাষী, মৎস্যজীবী ও জেলেদের তালিকা করে পরিপূর্ণভাবে সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা দেয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। ১০ জুন জাতীয় সংসদ বসবে তখন আমরা সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভা করবো আর সেই সভায় মন্ত্রী এবং সচিব থাকবেন তখন চুড়ান্তভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আর এই ঘূর্ণিঝড়ে মৎস্যজীবীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে, তাদের বাড়িঘর, সম্পদ আর যারা মৎস্য চাষ করে তাদের সকলেরই জলোস্বাসে ক্ষতি হয়েছে এগুলো আমাদের নজরে আছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকার কাজ চলছে তালিকা হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলাপ করে সকল ক্ষতিগ্রস্থদের সহযোগিতা দেয়া হবে। আর এখন সাধারনত সকলকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার মানবিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে।