ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৩ ১৪৩১

আম্পান

শার্শায় কখন আলো জ্বলবে জানে না পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ১০:৩৫ পিএম, ২৪ মে ২০২০ রবিবার | আপডেট: ১০:৫০ পিএম, ২৪ মে ২০২০ রবিবার

ঘূর্নিঝড় আম্পানের তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। বুধবার (২০ মে) থেকে বিদ্যুৎ নেই বন্দর নগরী বেনাপোলসহ শার্শা, নাভারন ও বাগআঁচড়া এলাকায়। এদিকে রাতে আলো জ্বালানোর ব্যবস্থা করার জন্য মানুষ হন্যে হয়ে দোকান ও দোকান ঘুরে ফিরছে হারিকেন, হারিকেনের কাঁচ, লম্প, কেরোসিন ও মোমবাতির জন্য। কোথাও মিলছে না আলো জ্বালানোর কোন উপকরণ।

শুক্রবার (২২ মে) সীমিত পরিসরে বেনাপোল বাজার, শার্শা উপজেলা সদর ও বাগআঁচড়া বাজারে আলো জ্বালানো হলেও কবে নাগাদ উপজেলার সর্বত্র বিদ্যুতের আলো জ্বলবে তা তারা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বুধবার সকাল থেকে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে বিভিন্ন দোকানে মোমবাতি সংগ্রহের জন্য কিন্তু দোকানদাররা কিছু বুঝে উঠার আগেই বাজার থেকে মোমবাতি উধাও হয়ে যায়। এতে সাধারণ মানুষ পড়েছে ভোগান্তিতে। তারা বলছেন, এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে  অনেক অসাধু ব্যবসায়ি বেশি দামে মোমবাতি বিক্রি করেছে আর সাধারন মানুষ নিরুপায় হয়ে বেশীদামেই মোমবাতি কিনতে বাধ্য হয়েছেন। 

বেনাপোলের মুদি ব্যবসায়ী শফি বলেন, এখন তো আর কেউ হারিকেন জ্বালায় না তাই এসব পণ্য আর দোকানে রাখা হয় না। মোমবাতি যা ছিল তা সকালেই বিক্রি হয়ে গেছে। যশোরের মার্কেট বন্ধ থাকায় মালামালও আনতে পারছি না।

ভাই ভাই স্টোরের মালিক মিকাইল হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হওয়ার কারনে হারিকেন, লম্প এখন আর কারো বাড়ি নেই। তাই সাদা কেরোসিনও দোকানে রাখিনি।

অগ্রভুলোট গ্রামের মতিয়ার রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আমাদের নিঃস্ব করে দিয়ে গেল। বাড়ি ঘর সব ভেঙে গেছে। রোজার মাস রাতে দুটো ভাত খাব তাও আন্দারে খাতি হবে। হারিকেন লম্প কোথায় আছে তাও খুজে পালাম না। দোকানে কোথাও মোমবাতিও পালাম না।

যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির শার্শা জোনাল অফিস থেকে বেনাপোল, উপজেলা সদর ও নাভারন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ওই অফিসের লাইনম্যান (গ্রেড-১) আবুল কালাম বলেন, ঝড়ে বিদ্যুৎ লাইনের যে পরিমান ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে। শুক্রবার বিকেলে বেনাপোল বন্দর, উপজেলা পরিষদ ও থানার সরকারি অফিস বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঈদের আগে তো হবেই না তবে কবে নাগাদ পুরো এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া যাবে তা বলা যাবে না।

তিনি বলেন, আমরা এরকম বড় ঝড় মোকাবেলা আগে করি নাইতো তাই একটু ঝামেলা হয়ে যাচ্ছে। আমাদের  জনবল কম আছে। এই অল্প সংখ্যক লোক নিয়ে বিপুল পরিমান লাইনের কাজ করা সারভাইবালের ভিতরে আছি আমরা। খুবই দেরি হবে এটা। মাস খানিকও লেগে যেতে পারে।

যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ডিজিএম (ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার) হাওলাদার রুহুল আমিন বলেন, এই অফিসের আওতায় গ্রাহক সংখ্যা এক লাখের অধিক। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে এই এলাকার দুইশ‘ এর উপর বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে। তার ছিঁড়েছে কয়েক হাজার জায়গায়। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা কবে নাগাদ স্বাভাবিক হবে তা তিনি বলতে পারেননি। তবে আপ্রাণ চেস্টা করা হচ্ছে দ্রুত গ্রাহকদের মাঝে বিদ্যুৎ সরবরাহে। 
কেআই/