ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা ঈমান ধ্বংসের কারণ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:০৩ এএম, ৩০ মে ২০২০ শনিবার

কোরআন-হাদীছে যা নেই এমন কোন আকীদা-বিশ্বাস রাখা যাবে না। যদি তা বাপ-দাদার আমল থেকে চলমান থাকে তাহলেও নয়। শরীয়তে এসব ধারণার কোন ভিত্তি নেই। ওলামায়ে কেরাম কোরআন-হাদীছ বিশ্লেষণ করে বলেছেন এসব ধারণাগুলো মারাত্মক ভুল। এসব ধারণা রাখা গোমরাহী। এর দ্বারা ঈমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এবার জেনে নেয়া যাক যেসব প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা ঈমান নষ্ট করে, তা সম্পর্কে...

* ডান হাতের তালু চুলকালে অর্থ-কড়ি আসবে মনে করা। অনেকে এ সময় তালুতে চুমু দিয়ে থাকেন। এটা একেবারেই ভ্রান্ত ধারণা। মারাত্মক ভুল।

* চোখ লাফালে বিপদ-আপদ আসবে মনে করা। এটাও ভ্রান্ত ধারণা। 

* এক চিরুনিতে দু’জন চুল আঁচড়ালে উক্ত দু’জনের মধ্যে ঝগড়া লাগবে মনে করা ভ্রান্ত ধারণা।

* চুল আঁচড়ানোর সময় হাত থেকে চিরুনি পড়ে গেলে মেহমান আসবে মনে করা। এটা ভুল।

* কোন বিশেষ পাখি ডাকলে মেহমান আসবে মনে করা। এলাকায় এরকম পাখিকে কুটুম পাখি বলা হয়। মনে রাখতে হবে, কোন পাখি গায়েব জানে না। কাজেই এটি ভ্রান্ত ধারণা।

* বিড়ালে গা চুলকাতে থাকলে সে মেহমান ডেকে আনছে মনে করা ভ্রান্ত ধারণা।

* যাত্রা পথে পেছন থেকে কেউ ডাকলে খারাপ মনে করাও ভ্রান্ত ধারণা।

* যাত্রা পথে হোঁচট খেলে বা কালো কলসি দেখলে কুলক্ষণ মনে করা। এটাও ভুল।

* অমুক দিন যাত্রা ভাল নয়, অমুক দিন বিবাহ ভাল নয় এই বিশ্বাস করা একটি ভ্রান্ত ধারণা। পঞ্জিকার কথায় বিশ্বাস রাখা যাবে না। ইসলামে যে কোন দিন যাত্রা করা যায়, যে কোন দিন বিবাহ করা যায়।

* যাত্রার মুহূর্তে কেউ তার সামনে হাঁচি দিলে কাজ হবে না মনে করাও ভ্রান্ত ধারণা।

* জিহ্বায় কামড় লাগলে কেউ তাকে গালি দিচ্ছে বা কেউ তাকে স্মরণ করছে মনে করা। এটা ভুল ধারণা।

* চড়ুই পাখিকে বালুতে গোসল করতে দেখলে বৃষ্টি হবে মনে করাও ভ্রান্ত ধারণা।

* দোকান খোলার পর প্রথমেই বাকি দিলে সারাদিন বাকি বা ফাঁকি যাবে মনে করা ভ্রান্ত ধারণা। বরং হতে পারে কোন ভাই/বোনকে বাকি দিয়ে উপকার করলে তার বরকতে সারাদিন তার ব্যবসা ভাল হবে।

* কোন লোকের আলোচনা চলছে, ইতিমধ্যে সে এসে পড়লে অনেকে বলে থাকেন যে, অনেক দিন বেঁচে থাকবে। এরূপ বলা থেকে বিরত থাকতে হবে। এই ধারণা ভুল।

* কোন ঘরে মাকড়সার জাল বেশি হলে কেউ কেউ মনে করে থাকে উক্ত ঘরের মালিক ঋণগ্রস্ত হয়ে যাবে। এটা ভুল ধারণা।

* আসরের পর ঘরে ঝাড়ু দেয়াকে খারাপ মনে করাও ভুল ধারণা।

* ঝাড়ু দ্বারা বিছানা পরিষ্কার করলে ঘর উজাড় হয়ে যাবে মনে করা ভ্রান্ত ধারণা।

* বাচ্চার গায়ে ঝাড়ুর আঘাত লাগলে তাদের শরীর শুকিয়ে যাবে মনে করা ভ্রান্ত ধারণা। তবে, সন্তান আল্লাহর দান তাই ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের গায়ে ঝাড়ু মারা ঠিক নয়।

* খাওয়ার সময় জিহ্বায় কামড় লাগলে একথা মনে করা যে, কে যেন তাকে স্মরণ করছে। এটিও ভ্রান্ত ধারণা।

* গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভ থাকাকালীন এই করলে বাচ্চার এই হবে, ওই করলে বাচ্চার ওই হবে এ জাতীয় ধারণা-বিশ্বাস ভিত্তিহীন।

এই ভ্রান্ত ধারণাগুলো কারও মধ্যে যদি বদ্ধমূল হয়ে যায়, তবে তা শিরকের পর্যায়ে চলে যাবে। শিরক হলো সবচেয়ে বড় গুণা। আল্লাহ তায়ালা অন্যসব গুণা মাফ করে দিলেও শিরকের গুণা মাফ করেন না। যা কোরআন-হাদীছের অনেক জায়গায় এসেছে। তাই এই ভিত্তিহীন কথাবার্তা বিশ্বাস করা যাবে না, বিশ্বাস রাখতে হবে সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপর।

এএইচ/