ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

করোনায় রক্ষা পেতে মার্কিন চিকিৎসকের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:৪৭ পিএম, ৩০ মে ২০২০ শনিবার

কোভিড-১৯ যা করোনা ভাইরাস নামে পরিচিত। সাম্প্রতিক সময়ে মহামারি আকার ধারণ করেছে এই করোনা ভাইরাস। বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। অনেকেই কোভিড-১৯ এর ওষুধ তৈরির দাবি করলেও এখন পর্যন্ত এর সঠিক কোনো প্রতিষেধক তৈরি হয়নি। তবে সাধারণ সতর্কতা অবলম্বন করে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ও বিস্তারের ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে অনেক বিশেষজ্ঞই এই ভাইরাসের প্রতিরোধ ও প্রতিকারে পরামর্শ দিচ্ছেন। 

সম্প্রতি করোনা থেকে রক্ষা পেতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগক্লিনিক বিভাগের হেড অব ডিপার্টমেন্ট প্রফেসর ড. এ কে এম শামসুদ্দিন। নিম্নে তার পরামর্শগুলো তুলে ধরা হলো-

১. আমাদের কয়েক মাস বা বছর ধরে কোভিড-১৯ এর সাথে থাকতে হবে। আসুন একে অবহেলা বা অস্বীকার না করি বা এর জন্য আতঙ্কিত না হই। আসুন আমাদের জীবনকে এর জন্য অকার্যকর করে না তুলি। আসুন এই সত্যটি নিয়ে বাঁচতে শিখি।

২. আপনি কোভিড-১৯ ভাইরাসগুলি ধ্বংস করতে পারবেন না। যা ঘরের দেয়ালে প্রবেশ করেছে। প্রচুর গরম জল পান করুন। এর ফলে আপনি বাথরুমে প্রায়শই যাবেন। যান, কোনো অসুবিধা নাই।

৩. হাত ধোয়া এবং আপনার নিজের সুরক্ষার জন্য দুই-মিটার দৈহিক দূরত্ব বজায় রাখাই হচ্ছে সেরা পদ্ধতি।

৪. যদি আপনার বাড়িতে কোভিড-১৯ রোগী না থাকে তবে আপনার বাড়ির উপরিভাগে জীবাণুমুক্ত করার দরকার নেই।

৫. প্যাকেজজাত কার্গো জিনিসপত্র , গ্যাস/পেট্রোল পাম্প, শপিং কার্ড এবং এটিএম বুথ সংক্রমণ সৃষ্টি করে না। সেখানে গেলে আপনার হাত ধুয়ে নিন এবং স্বাভাবিকভাবে আপনার জীবন যাপন করুন।

৬. কোভিড-১৯ কোনও খাদ্য সংক্রমণ নয়। এটি ‘ফ্লু’র মতো ফোঁটা সংক্রমণের সাথে যুক্ত। 
খাবারের মধ্য দিয়ে কোভিড-১৯ সংক্রমণিত হওয়ার কোনও ঝুঁকি নেই।

৭. আপনার প্রচুর অ্যালার্জি থাকলে এবং এই ভাইরাল সংক্রমণের দ্বারা সংক্রমিত হলে আপনি আপনার গন্ধ অনুভূতি হারাতে পারেন। এটি কেবল কোভিড-১৯ এর একটি অ-নির্দিষ্ট লক্ষণ।

৮. বাড়িতে থাকলে জরুরিভাবে আপনার পোশাক পরিবর্তন করার দরকার নেই এবং ঘন ঘন গোসল করার দরকার নেই! সব কিছু নিয়ম মাফিক করুন। বিশুদ্ধতা অবশ্যই পূণ্য বয়ে আনে তবে এটি যেন প্যানিক না হয়! মনে রাখতে হবে এই ভাইরাস কেবল একজন থেকে আরেকজনের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থেকেই হয়।

৯. কোভিড-১৯ ভাইরাস বাতাসে অবস্থান করে না। এটি শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে ক্ষুদ্র সংক্রমণ যা সংক্রমনের জন্য খুবই ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ প্রয়োজন।

১০. পরিষ্কার বাতাসে এবং বাগানে কেবলমাত্র আপনার শারীরিক সুরক্ষা দূরত্ব বজায় রেখে হাঁটতে পারেন।

১১. অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান নয়, কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে সাধারণ সাবান ব্যবহার করা যথেষ্ট। এটি ব্যাকটিরিয়া নয়, একটি ভাইরাস।

১২. আপনার খাবারের তালিকা সম্পর্কে আপনাকে চিন্তা করতে হবে না। আপনি যদি চান তবে আপনি মাইক্রোওয়েভে আপনার সব খাবারই গরম করে খেতে পারেন।

১৩. আপনার জুতা দিয়ে কোভিড-১৯ বাড়িতে আসার সম্ভাবনা দিনে দু’বার বাজ পড়ার মতো। আমি ২০ বছর ধরে ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছি - ড্রপ সংক্রমণ এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ে না!

১৪. আপনি ভিনেগার, আখের রস এবং আদা গ্রহণ করে ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে পারবেন না! এগুলি নিরাময়ের জন্য নয়, সংক্রমন প্রতিরোধের একটি সহায়ক উপাদান মাত্র।

১৫. দীর্ঘ সময় ধরে মাস্ক পরা আপনার শ্বাস এবং অক্সিজেনের স্তরে হস্তক্ষেপ করে। এটি কেবল ভিড়ের মধ্যেই পরুন।

১৬. গ্লাভস পরাও একটি খারাপ ধারণা; ভাইরাসটি গ্লাভসে জমে যেতে পারে এবং আপনার মুখটি স্পর্শ করলে সহজেই সংক্রমণ হতে পারে। শুধু নিয়মিত আপনার হাত ধুয়ে নেওয়া ভাল।

১৭. সবসময় একটি জীবাণুমুক্ত পরিবেশে থাকলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পাবে।
এমনকি যদি আপনি রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধিকারক খাবার খান তবুও দয়া করে আপনার বাড়ির বাইরে নিয়মিত কোনো পার্ক বা সৈকতে যান।

বাড়িতে বসে বসে ভাজা / মশলাদার / মিষ্টিজাতীয় খাবার এবং কোমল পানীয় সেবন করে নয়, রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধির মাধ্যমে এর সাথে লড়াই করতে হবে।

এমবি//