ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ডিভোর্সের অর্থে বিশ্বের ধনীর তালিকায় চীনা যুবতী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:২১ এএম, ৩ জুন ২০২০ বুধবার

কথায় আছে বিয়ে-শাদী ভাগ্য বয়ে আনে। এখন দেখছি, শুধু বিয়েই নয় বিচ্ছেদও বিপুল সম্পদের মালিক বানিয়ে দেয়। এ রকমই একটি ঘটনা সম্প্রতি ঘটেছে চীনে।  বিবাহ বিচ্ছেদের ফলে বিশ্বের মহিলা ধনকুবেরদের তালিকায় নতুন এক নাম, ইউয়ান লিপিং। তিনি এখন এশিয়ার অন্যতম ধনী মহিলা।

ইউয়ানের সাবেক স্বামী দু ওয়েইমেইন চীনের শিল্পপতি। তিনি শেনঝেন কাংতাই বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টসের চেয়ারম্যান। সম্প্রতি বিবাহ বিচ্ছেদের শর্ত হিসেবে তিনি তাঁর প্রতিষেধক প্রস্তুতকারী সংস্থার ১৬১.৩ মিলিয়ন শেয়ার দিয়েছেন সাবেক স্ত্রী ইউয়ান লিপিংকে।

জানা যায়, সোমবার শেয়ার বাজার বন্ধ হওয়ার সময় পর্যন্ত এই স্টকের আর্থিক মূল্য ছিল ৩২০ কোটি ডলারেরও বেশি। কাংতাই বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টসের শেয়ার গত কয়েক মাস ধরেই ঊর্ধ্বমুখী। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রতিষ্ঠানটি থেকে জানানো হয়, তারা করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার করার পরিকল্পনা করছে। এরপরেই বাজারে তাদের শেয়ারের চাহিদা হু হু করে বেড়ে যায়। 

কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির মালিকের বিচ্ছেদ ঘোষণার পরে শেয়ারবাজারে কিছুটা ধাক্কা খায় এই সংস্থা। প্রভাব পড়েছে দু ওয়েইমেইনের ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে। ৬৫০ কোটি ডলার থেকে তা নেমে গিয়েছে ৩১০ কোটি ডলারে।

কানাডার নাগরিক ইউয়ান লিপিং বর্তমানে চীনের শেনঝেন প্রদেশে বসবাস করছেন। তিনি ২০১১ থেকে ২০১৮ সালের আগস্ট পর্যন্ত কাংতাই বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টসের ডিরেক্টর ছিলেন। বর্তমানে ইউয়ান লিপিং অন্য একটি সংস্থার ভাইস জেনারেল ম্যানেজার পদে কর্মরত। 

এশিয়ার অন্যতম ধনী মহিলা ৪৯ বছর বয়সি ইউয়ান লিপিং বেজিংয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস অ্যান্ড ইকনমিক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক শেষ করেন।

অন্যদিকে ৫৬ বছর বয়সি দু ওয়েইমেইনের জন্ম চীনের জিয়াংঝি প্রদেশের এক কৃষক পরিবারে। কলেজে রসায়ন নিয়ে পড়ার পরে ১৯৮৭ সালে তিনি একটি ক্লিনিকে চাকরি করতে শুরু করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি একটি বায়োটেক সংস্থার সেলস ম্যানেজার হন। অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে ২০০৯ সালে ‘মিনহাই’ নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেন তিনি। 

ফোর্বস পত্রিকার সাম্প্রতিক তালিকা অনুযায়ী বিচ্ছেদের আগে দু ওয়েইমেইন বিশ্বের ৩২০ নম্বর ধনকুবের ছিলেন।

বিচ্ছেদের ফলে সম্পদশালী শুধু ইউয়ান লিপিংই প্রথম মহিলা নয়। এর আগে ২০১২ সালে চীনের ধনীতম মহিলা ছিলেন উ ইউজুন। তিনিও বিবাহবিচ্ছেদের সময় তার
সাবেক স্বামী কাই কুই-কে থেকে ২৩০ কোটি ডলার পেয়েছিলেন।

এছাড়া চীনের অনলাইন গেমিং সংস্থার মালিক ধনকুবের ঝোউ ইয়াহুইকেও তার সাবেক স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে দিতে হয়েছিল ১১০ কোটি ডলার।

জীবনে বিচ্ছেদ অনেক সময়েই মূল্যবান হয়ে দেখা দেয়। দক্ষিণ কোরিয়ার শিল্পপতি শে তাই ওন-এর স্ত্রী বিচ্ছেদের সময় তার স্বামীর সংস্থার ৪২.৩ শতাংশ শেয়ার
পেয়েছিলেন। তার আর্থিক মূল্য ছিল ১২০ কোটি ডলার।

তবে এখন পর্যন্ত বিশ্বে বিবাহ বিচ্ছেদের ইতিহাসে মহার্ঘতম হল জেফ ও ম্যাকেঞ্জি বেজোসের বিচ্ছেদ। অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বিচ্ছেদের শর্তস্বরূপ সাবেক স্ত্রীকে অনলাইন রিটেলারের ৪ শতাংশ দিয়েছিলেন। এর ফলে ম্যাকেঞ্জি বেজোস বর্তমানে বিশ্বের চতুর্থতম ধনী মহিলা।

এএইচ/