ঢাকা, বুধবার   ০৮ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

৫ কোটি রুপির সম্পত্তি ২ হাতির নামে!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৩৬ এএম, ১২ জুন ২০২০ শুক্রবার | আপডেট: ০৮:৪৩ এএম, ১২ জুন ২০২০ শুক্রবার

হাতির সঙ্গে আখতার ইমাম। ছবি: সংগৃহীত

হাতির সঙ্গে আখতার ইমাম। ছবি: সংগৃহীত

অন্তঃস্বত্ত্বা হাতির মৃত্যুর ঘটনায় যখন সকলের মন ভারাক্রান্ত, তখনই এক ব্যক্তি নিজের সম্পত্তির অর্ধেকটা লিখে দিলেন নিজের পোষ্য দুই হাতির নামে। কয়েক বছর আগে এই দুই পোষ্যের মধ্যে একটি হাতি ওই ব্যক্তির প্রাণ বাঁচিয়েছিল। তারই কৃতজ্ঞতা স্বরূপ ভারতের বিহার রাজ্যের বাসিন্দা আখতার ইমাম তার দুই পোষ্যের নামে ৫ কোটি রুপির সম্পত্তি লিখে দিয়েছেন।

৫০ বছর বয়সী আখতার ইমাম থাকেন পাটনার কাছে ফুলওয়ারি শরিফের জানিপুর এলাকায়। নিজের যখন মাত্র ১২ বছর বয়স তখন থেকেই এই দুইটি হাতিকে লালনপালন করে আসছেন তিনি। বর্তমানে মোতির বয়স ২০ এবং রানির বয়স ১৫ বছর। বড় যত্নের সঙ্গে লালনপালন করেন এদের। তার বাড়িতেই রাখছেন ওই হাতি দুইটিকে।

আখতার জানান, ‘পারিবারিক সূত্রে আমি কয়েকটি হাতি পেয়েছিলাম। মোতি আর রানি তাদেরই বংশধর। আমার ছোটবেলা থেকেই ওরা এই বাড়িতে আছে। মোতি ও রানি আমার পরিবারের সদস্যের মতো, তাদের ছাড়া আমি বাঁচার কল্পনা করতে পারি না। আমি আমার সম্পত্তির অর্ধেক স্ত্রী ও বাকি অর্ধেকটা (৫ কোটি রুপি) সম্পত্তি মোতি আর রানিকে দান করেছি।’

'এশিয়ান এলিফ্যান্ট রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ অ্যানিম্যাল ট্রাস্ট' নামের একটি বেসরকারি সংস্থার প্রধান আখতার ইমাম। তিনি জানান, একদিন আমাকে হত্যার একটা প্রচেষ্টা হয়েছিল। ঠিক সেই সময় এই হাতিই আমার প্রাণ বাঁচায়। যখন কয়েকজন অস্ত্রধারী আমার ঘরে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে, তখন হাতিই প্রচণ্ড গর্জন করতে শুরু করে। তখন আমি জেগে যাই এবং চিৎকার শুরু করে দিই। এর ফলে দুর্বৃত্তরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।
 
আখতার বলেন, প্রাণীরা মানুষের মতো নয়, তারা খুবই বিশ্বস্ত। আমি বহু বছর ধরেই হাতি সংরক্ষণের ব্যাপারে কাজ করে চলেছি। আমি চাই না যে, আমার মৃত্যুর পর আমার হাতি দুইটি এতিম হয়ে যাক। 

দুঃখের সঙ্গে আখতার জানান, পারিবারিক বিবাদের কারণে তার স্ত্রী ও পুত্র গত ১০ বছর ধরে আলাদা থাকে। হাতি দুইটিকে নিজের সম্পত্তি লিখে দেওয়ার পরই তার ছেলে মেরাজ তাকে হুমকি দেয়। শুধু তাই নয়, পশুপাচারকারীদের সাথে হাত মিলিয়ে মোতি আর রানিকে একবার বিক্রিও করে দিতে চেয়েছিল তার ছেলে। যদিও তার আগেই সে ধরা পড়ে যায়। তাই বাধ্য হয়ে নিজের জীবনহানির আশঙ্কায় বিহারের প্রধান বনপাল এবং পাটনার পুলিশ সুপারকে চিঠিও লিখেছেন আখতার। 

হাতির সম্পত্তি ‘উইল’ করে দিয়েছেন আখতার। সেই উইলে উল্লেখ করেছেন, হাতি দুইটির মৃত্যুর পর তাদের নামে লিখে দেওয়া ওই অর্থে র মালিক হবে 'এশিয়ান এলিফ্যান্ট রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ অ্যানিম্যাল ট্রাস্ট'। 

এএইচ/