ঢাকা, বুধবার   ১১ ডিসেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ২৬ ১৪৩১

করোনা প্রতিরোধে পোলিও টিকা, পরীক্ষা চলছে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫১ পিএম, ১২ জুন ২০২০ শুক্রবার | আপডেট: ১১:৫৩ পিএম, ১২ জুন ২০২০ শুক্রবার

করোনা ভাইরাসের জন্য কার্যকরী টিকা তৈরীতে বেশ তোড়জোর চলছে। কিন্তু কোন কূলকিনারাই হয়নি। কোভিড-১৯–এর সম্ভাব্য সুরক্ষা পদ্ধতি হিসেবে যক্ষ্মা ও পোলিও ভ্যাকসিন নিয়ে পরীক্ষা শুরু করেছেন গবেষকেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিখ্যাত সায়েন্স ম্যাগাজিনের একটি প্রবন্ধে একদল বিশেষজ্ঞ এমনটি জানান।

তারা ঐ প্রবন্ধে জানান, পোলিও ভ্যাকসিনের মতো বিদ্যমান টিকাগুলো শিশুদের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয় এবং এগুলোর নভেল করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো সক্ষমতা রয়েছে। এ ব্যাপারে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।

তারা বলছেন, ‘ওরাল পোলিও ভ্যাকসিন তুলনামূলক নিরাপদ, সস্তা, প্রয়োগ করা সহজ এবং ব্যাপক সহজলভ্য। বিশ্বের ১৪০টিরও বেশি দেশে বছরে একশ কোটি ডোজ উৎপাদন এবং ব্যবহার করা হয়। বিজ্ঞানীদের এই দলে রয়েছেন এইচআইভির আবিষ্কারক এক বিজ্ঞানী এবং মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) একজন ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞ। বহুল আকাঙিক্ষত এই ভ্যাকসিন বিশ্ব থেকে পোলিওকে প্রায় নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছে।’

ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞরা মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলছেন, ‘পোলিও ভাইরাসের দুর্বলতম সংস্করণ ব্যবহার করে ওরাল পোলিও ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে। ক্ষুদ্র এই ভ্যাকসিন শরীরে শক্তিশালী এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। পোলিও ভ্যাকসিন আধুনিক ভ্যাকসিনগুলোর চেয়ে ধীরগতির। এতে ভাইরাসের জিনগত উপাদান ব্যবহার করা হয়।’

টেক্সাস এ অ্যান্ড এম হেলথ সায়েন্স সেন্টারের অধ্যাপক জেফ্রি ডি. সিরিলো বলেছেন, এটি বিশ্বের একমাত্র ভ্যাকসিন, যা এখনই কোভিড-১৯–এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য দেওয়া যেতে পারে।

ওয়াশিংটন পোস্টকে সিরিলো বলেন, তাঁরা পরামর্শ দিচ্ছেন না যে ভ্যাকসিনগুলো লোকজনকে কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত রাখবে। তবে তাঁরা এর সংস্পর্শে এলেও কম উপসর্গ দেখবে বলে মনে করা হচ্ছে।

গবেষকেরা এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। এখানে বেশির ভাগ মানুষকে যক্ষ্মার টিকা দেওয়া হয়েছিল বলে কোভিড-১৯–এ সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুহার কম।

কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারের মেডিসিনের অধ্যাপক আজরা রাজা বলেছেন, ‘তারা যে সংক্রমিত হচ্ছে না, তা নয়। পজিটিভ সংক্রমণে হার অনেক বেশি। তবে তারা মারা যাচ্ছে কম। এটি ক্রমবর্ধমান, কিন্তু তারা এতে মারা যাচ্ছে না।’

তারা বলেছেন, আমরা কোভিড-১৯ প্রতিরোধ বা প্রশমনে ওরাল পোলিও ভাইরাস ভ্যাকসিন ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছি। পোলিও ভাইরাস এবং করোনাভাইরাস পজিটিভ আরএনভাইরাস গোত্রের। সাধারণ সহজাত প্রতিরোধ ব্যবস্থা দ্বারা এ ভাইরাসকে প্রতিরোধ করা যেতে পারে।

করোনাভাইরাসে ৪ লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারালেও এর কোনও ভ্যাকসিন কিংবা প্রতিষেধক এখনও আবিষ্কার হয়নি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শতাধিক ভ্যাকসিন তৈরির প্রকল্প চালু রয়েছে।

এমএস/এসি