ঢাকা, শুক্রবার   ১০ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

ফের বেইজিংয়ের বাজারে করোনা সংক্রমণ; অবরুদ্ধ ২৭ এলাকা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:২১ পিএম, ১৭ জুন ২০২০ বুধবার

প্রায় ২ মাস পর নতুন করে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের লাখ লাখ মানুষ আবারও লকডাউন’র (অবরুদ্ধ) কব্জায় আটকা পড়েছেন। দেশটির রাজধানী ২৭টি এলাকার মানুষকে বাইরে না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেইজিং থেকে ১২০০ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। ৯ জুলাই পর্যন্ত ট্রেন সার্ভিস অনেক কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। খবর বিবিসি’র।

রাজধানীর প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে সুইমিং পুল, জিম এবং অনেক রকম খেলাধুলো। আজ বুধবার বেইজিংয়ে নতুন করে ৩১ জনের দেহে ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩৭। নতুন দফা এই সংক্রমণের আগে টানা ৫৭ দিন ধরে বেইজিংয়ের বাসিন্দাদের মধ্যে কোনো করোনা পজিটিভ রোগী পাওয়ানি। ধারণা করা হচ্ছে বেইজিংয়ের শিনফানদি নামে বিশাল এক পাইকারি খাদ্যের বাজার থেকে নতুন করে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে।

নতুন দফা বিধিনিষেধের শর্ত:
চীনের রাজধানীর কমপক্ষে ২৭টি এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তার মধ্যে ২৬টিতে ঝুঁকির মাত্রা মাঝারি, আর একটি এলাকা উঁচু মাত্রার ঝুঁকিপূর্ণ। এ ২৭টি এলাকার বাসিন্দারা বেইজিংয়ের বাইরে যেতে পারবে না। এমনকি কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষজনকেও রাজধানীর বাইরে যেতে গেলে ভাইরাসের পরীক্ষা করে দেখাতে হবে তারা সংক্রমিত নন। তবে বেইজিংয়ে এখন ভাইরাস পরীক্ষা করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনটি টেস্টিং সেন্টার সূত্রে জানা যায়, তাদের কাছে এত মানুষ আসছে যে জুলাইয়ের আগ পর্যন্ত তারা নতুন কারও কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে পারবে না। অন্যান্য কেন্দ্রের সামনেও পরীক্ষার জন্য লম্বা লাইন চোখে পড়ছে। নতুন করে নানা বিধিনিষেধ চালু করা হলেও, রাস্তা-ঘাট খোলা রয়েছে। কল-কারাখানা খোলা।

বেইজিংয়ের বিবিসি’র সংবাদদাতা স্টিভেন ম্যাকডোনেল বলছেন, ‘গত ৫০ দিনেরও বেশি সময় ধরে চীনের রাজধানীতে নতুন কোনো সংক্রমণ না হওয়ায় রেঁস্তরা-পানশালাগুলো গমগম করে চলছিল, ট্রেনগুলো সকাল-বিকাল যাত্রীতে ভর্তি থাকতো। কিন্তু সেই প্রায়-স্বাভাবিক অবস্থা হঠাৎ করে যেন উধাও। একটি বাজার থেকে ছড়িয়ে পড়া সংক্রমণে আবার বেইজিংকে বিধিনিষেধের বুদবুদে ঢুকে পড়তে হচ্ছে।’

সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, একেকটি মহল্লাকে এমনভাবে নজরদারি করা হচ্ছে, নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে যেন সেগুলো শহরের ভেতর আরেক শহর। তিনি বলছেন, ‘ফেব্রুয়ারির লকডাউনের সাথে নতুন করে চাপানো এই লকডাউনের মূল পার্থক্য যে সরকারি অফিস এবং কল-কারখানা এখনো খোলা।’

নতুন সংক্রমণের শুরু যেভাবে:
চীনের মিডিয়াগুলো বলছে, শহরের শিনফানদি পাইকারি বাজারে আমদানি করার স্যামন মাছ কাটার একটি বোর্ডের ওপর প্রথম ভাইরাস শনাক্ত হয়। ঐ বাজারের জেনারেল ম্যানেজারকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঐ বাজারে কাজ করতেন বা গিয়েছিলেন এমন অনেক মানুষকে শহর ছাড়তে নিষেধ করা হয়েছে। প্রতিদিন বেইজিংয়ের এই পাইকারি বাজারে লাখ লাখ মানুষের সমাগম হয়।

বাকি চীনের পরিস্থিতি কী:
চীন গত মাসগুলোতে সাফল্যের সাথে ভাইরাসের সংক্রমণ বাগে আনতে সক্ষম হয়েছে। মার্চের প্রথম দিকে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৮০,০০০ ছাড়িয়ে গিয়েছিল, কিন্তু তারপর গত সাড়ে তিন মাসে নতুন করে মাত্র ৩২০০ জন শনাক্ত হয়েছে। মঙ্গলবার সারাদেশে নতুন করে ৩২জন সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে, যার মধ্যে ২৭ জনই বেইজিংয়ের চারটি মহল্লার বাসিন্দা।

এমএস/এসি