ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

যবিপ্রবির ল্যাবে করোনাভাইরাসের পূর্ণাঙ্গ জীবন রহস্য উন্মোচন

যবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ  

প্রকাশিত : ০৭:৪৪ পিএম, ২৪ জুন ২০২০ বুধবার

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টার থেকে নিজস্ব জিনোম সিকুয়েন্স মেশিনের সাহায্যে তরুণশিক্ষক ও গবেষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে করোনা ভাইরাসের পূর্ণাঙ্গ জীবন রহস্য উন্মোচন করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে অন্য কোনো গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাহায্য ছাড়াই তিনটি করোনা ভাইরাসের পূর্ণাঙ্গ জীবন রহস্য উন্মোচন করা হয়েছে বলে দাবি যবিপ্রবির গবেষকদের।

আজ বুধবার বিকেলে যবিপ্রবির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবএকাডেমিক ভবনের গ্যালারিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও জিনোম সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন করোনা ভাইরাসের জীবন রহস্য উন্মোচনের এ ঘোষণা দেন। 

অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, জিনোম সিকুয়েন্সগুলো ইতিমধ্যে বিশ্বখ্যাত জিনোম ডাটাবেজ সার্ভার জিআইএসএআইডি-তে জমা দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়ে জিনোম সিকুয়েন্স করেছে, সেখানে অপেক্ষাকৃত নবীন বিশ্ববিদ্যালয়হলেও নমুনা প্রসেসিং, ভাইরাস শনাক্ত, নিউক্লিকএসিড পৃথকীকরণ থেকে শুরু করে জিনোম সিকুয়েন্সপর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্ররা নিজেরাইকরেছে। ঢাকার বাইরে এই প্রথম কোনো ল্যাবে করোনাভাইরাসের জিনোম সিকুয়েন্স করা সম্ভব হলো।অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, নড়াইল, ঝিনাইদহ ও বাগেরহাটে সংক্রমণ সৃষ্টিকারী ভাইরাসথেকে এই জিনোম সিকুয়েন্সগুলো করা হয়েছে। এই সিকুয়েন্সগুলো বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে সংক্রমিত ভাইরাসের প্রথম জিনোম সিকুয়েন্স, যার মাধ্যমে এইঅঞ্চলে সংক্রমিত ভাইরাসের গতিপ্রকৃতি, তা কোথাথেকে ছড়ালো ইত্যাদি বিষয়ে ধারণা পাওয়া যাবে। এইজিনোম সম্পর্কিত বিশ্লেষণ আমাদের গবেষকরা করছেন এবং এ অঞ্চলের ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য নিয়ে গবেষণা প্রবন্ধ শিগগরিই আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশের জন্য পাঠানো হবে। ভবিষ্যতে এই ল্যাবেমেটাজেনোম করার মাধ্যমে রোগীদের সংক্রমনেরতীব্রতার কারণও জানা যাবে।যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ারহোসেন আরও বলেন,যবিপ্রবিতে  একটি অত্যাধুনিক অ্যানিমেল হাউস ও গ্রিন হাউসতৈরি করা হচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে বিএসএল-৩ ল্যাবরেটরিস্থাপন করে দুরারোগ্য ব্যাধি প্রতিরোধে ভ্যাকসিনতৈরিসহ আরও উচ্চমানের গবেষণা করতে আমাদেরগবেষক দল প্রস্তুত রয়েছে।

অধ্যাপক ড. আনোয়ার আরও জানান, আমিএবং প্রফেসর ড. মো. আনিছুর রহমান যখন মাননীয়প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অর্থ প্রদানের জন্য যাই, তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের জিনোম সেন্টারেরভূয়সী প্রশংসা করেন এবং করোনা ভাইরাস পরীক্ষাচালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। জননেত্রী শেখ হাসিনারনির্দেশে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েরকরোনা ভাইরাস পরীক্ষণ দলের সদস্যরা পালাক্রমে২৪ ঘণ্টা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। ফলে আগেরচেয়ে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে গবেষক দলের সদস্য অধ্যাপক ড. মোঃ ইকবাল কবীর জাহিদ, ড. মো. নাজমুল হাসান, ড. তানভীর ইসলাম, ড. সেলিনা আক্তার, ড. শিরিননিগার, ড. হাসান মোহাম্মদ আল-ইমরান, অভিনুকিবরিয়া ইসলাম, প্রভাষ চন্দ্র রায়, এ. এস. এম.রুবাইয়াত-উল-আলম, মো: সাজিদ হাসান উপস্থিতছিলেন। এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে যবিপ্রবির প্রধানচিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. দীপক কুমার মন্ডল, সহকারীপরিচালক (জনসংযোগ) মো. হায়াতুজ্জামান প্রমুখউপস্থিত ছিলেন।

আরকে//