ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৩ ১৪৩১

করোনাকালে যেসব খাবার খাবেন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:১৩ এএম, ২৫ জুন ২০২০ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০১:১৬ পিএম, ২৫ জুন ২০২০ বৃহস্পতিবার

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ধারাই হলো আক্রান্তের শরীর কাবু করে দুর্বল করে ফেলা। তাই এরকম অবস্থায় শুধু স্বাদের কথা না ভেবে খেতে হবে শরীরের প্রতিটি প্রত্যঙ্গের কথা মাথায় রেখে। না হলে শরীরের দুর্বলতার সুযোগ নেবে সংক্রমণ। তাই এই সময় প্রয়োজন হলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। বিশেষত, রোগটির প্রতিকারের চেয়েও প্রতিরোধকেই সহজ ও কার্যকর বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

হৃদযন্ত্র, ফুসফুস, বৃক্ক, মস্তিস্ক, যকৃৎ- প্রতিটি অঙ্গেরই খেয়াল রাখতে হবে। সুগার, প্রেশার, কোলেস্টেরল, ওজন, সবই রাখতে হবে নিয়ন্ত্রণে। না হলে এসব রোগের মাধ্যমেও কোভিড-১৯ আপনাকে মুমূর্ষু অবস্থায় নিয়ে যেতে পারে। তাই এই সময়ে সবচেয়ে দৃষ্টি দিন পুষ্টির উপর। কোনও ভাবেই যাতে শরীরে পুষ্টির অভাব না ঘটে। 

শরীরের কথা মাথায় রেখে খাবারের তালিকায় যোগ করতে হবে নতুন কিছু। তাই এবার জেনে নিন, এই অবস্থায় প্রতিদিনের খাবারের তালিকাটা কিভাবে সাজাবেন...

• দিন শুরু করুন দুই গ্লাস হালকা গরম পানি পান করে। পানিতে মধু দিতে পারেন। সাথে একটু আদা, কাঁচা হলুদ থাকলে আরো ভালো। সকালে খালিপেটে হলুদ দুধ খেতে পারেন। গরুর দুধে এক চামচ কাঁচা হলুদ বাটা, আধ চামচ দারচিনির গুঁড়া, সিকি চামচ গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে নিন। চিনি না খেয়ে মধু মেশাতে পারেন। এর আধঘণ্টা পর খাবার খাবার খাবেন।  

• সকালে চায়ের বদলে আয়ুর্বেদিক ক্বাথ খেতে পারেন। তুলসি, পিপলি, আদা ও মধু দিয়ে অথবা তুলসি, আদার সঙ্গে গোলমরিচ, দারচিনি, কিশমিশ, মধু ও লেবুর রস দিয়ে বানাতে পারেন এই ক্বাথ। আধা চামচ গুড়ুচি এককাপ পানিতে ফুটিয়ে মধু মিশিয়েও বানানো যায়। নিয়মিত খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বাড়বে, বাড়বে হজমশক্তি। গলাতেও আরাম হবে। 

• সকালে এমন খাবার খান, যাতে কোনও অস্বাস্থ্যকর উপাদান নেই। অর্থাৎ মোড়কজাত, প্রক্রিয়াজাত খাবারের বদলে ঘরে বানানো লাল আটার রুটি খান। এছাড়া গম ও ছোলা শুকনা খোলায় ভেজে তাতে ওটস ও বার্লি মিশিয়েও খেতে পারেন। দুধে কাঁচা হলুদ, ওটস ও মধু মিশিয়েও খেতে পারেন।

• দুপুরে ভাতের সঙ্গে কাঁচা হলুদ ও গোলমরিচ বাটা খান। ডাল-সব্জির সঙ্গে খান লেবু। বা খাওয়ার পর কোনও টক ফল খেতে পারেন।

• লেবু দিয়ে ধনেপাতা বা পুদিনার চাটনি বা ১৫ মিলি আমলকির রসও খেতে পারেন। কালোজিরার ভর্তা খেতে পারেন।

• রান্নায় সব ধরনের মশলা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ব্যবহার করুন। যেমন ধনে, জিরা, হলুদ, গোলমরিচ, আদা, রসুন, মেথি, কালোজিরা।

• রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এমন একটি মশলা বানিয়ে রাখুন। যেমন- ৩ চামচ করে জিরা, ধনে, ৬ চামচ মেথি ও এক চামচ গোলমরিচ শুকনা খোলায় ভেজে গুঁড়ো করে নিতে পারেন। তাতে মেশান এক চামচ আদার গুঁড়া, ৬ চামচ হলুদ গুঁড়া ও সিকি চামচ দারচিনির গুঁড়া। 

• যে কোনও রান্নায় মেশানোর আগে এক চামচ ঘি অল্প গরম করে তাতে এক চামচ এই মশলা দিয়ে নেড়ে নিন। এছাড়া ভাত, সেদ্ধ সবজি, ডাল, স্যুপে এই মশলা মিশিয়ে খাতে পারেন।

• যত খিদে পাক, পেট খানিকটা খালি রেখে খাবেন। পানির বোতল সঙ্গে রাখুন। মাঝেমধ্যে চুমুক দিন। সুযোগ থাকলে সারাদিন হালকা গরম পানি খাবেন। 

• রাতের খাবার যত হালকা হয় ততো ভাল। ঘুমাতে যাওয়ার ঘণ্টা দুয়েক আগে খাবেন। খাওয়ার পর একটু পায়চারি করুন।

• রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে এমন পুষ্টিকর খাবার বা ভেষজ খেতে পারেন। নিয়মিত খাবার তালিকায় দেশীয় মৌসুমি ফল অবশ্যই রাখবেন। বিদেশি প্রক্রিয়াজাত ফলের চেয়েও টাটকা দেশীয় ফলে অনেক বেশি প্রোটিন থাকে। টক জাতীয় ফলে আছে ভিটামিন-সি, যা ভাইরাসজনিত রোগ প্রতিরোধ করে। সবুজ সবজি, ডাল খেতে হবে বেশি। পেঁপে, পুঁই শাক, ব্রোকলি, বরবটি, পালং শাক, লাউ, ক্যাপসিকাম বেশি বেশি খাবেন। এছাড়াও খাদ্য তালিকায় রাখবেন ডিম, খেজুর, বাদাম, আদা, রসুন ও কালোজিরা। এড়িয়ে চলবেন- চিনি ও চিনিজাত খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্টফুড। কারণ, এগুলো দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। 

• শান্ত হয়ে বসে, ভাল করে চিবিয়ে, মন দিয়ে খাবেন। একে বলে মনতুস্টি নিয়ে খাওয়া। এভাবে খেলে হজম ভাল হয়, খাবারের পুষ্টি ভালভাবে শোষিত হয় শরীরে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

এমবি/এনএস