ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

শ্বশুরবাড়ি ঢুকতেই রেখাকে চপ্পল খুলে মারতে গিয়েছিলেন শাশুড়ি!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:২৭ পিএম, ২৯ জুন ২০২০ সোমবার | আপডেট: ০৬:৩০ পিএম, ২৯ জুন ২০২০ সোমবার

সৌন্দর্যে  বিদ্যুৎরেখা ভানুরেখা গণেশন। অভিনয় নিয়ে তো কোনও কথাই হবে না, কিন্তু প্রেমভাগ্য রীতিমতো গ্রহণ লাগা। যত বার প্রেমে পড়েছেন হয় প্রেম ভেঙেছে, নয়তো বিবাহিত পুরুষ তাঁর জীবনে এসেছেন।

বলিউডি প্রেমের জলসার মধ্যমণি অমিতাভ বচ্চন-রেখার প্রেম। আর বিনোদ মেহরা-রেখার প্রেম সেই তুলনায় কম আলোচিত। জয়ার চোখের জল অমিতকে তখন একটু একটু করে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে রেখার কাছ থেকে। ঋষি কাপূর-নীতু সিংহের বিয়ের রাতে রেখা যতই সিঁথিতে সিঁদুররেখা টেনে সিমন্তিনী সাজুন, বিগ বি-র ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করুন, তাঁর কাছে ঘেষতে চান, অমিত কিন্তু তত দিনে পরিযায়ী প্রেম সেরে আবার সুরক্ষিত বাসায় ফিরে গিয়েছেন।

অমিত চলে যেতেই রেখা আবার একা হয়ে যান। বিরহের তাপে নিশিদিন জ্বলছেন, পুড়ছেন। কিন্তু আগুন নেভানোর মতো কাউকেই পাচ্ছেন না। সেই সময় অভিনেত্রীর জীবনে বিনোদ মেহরা যেন দেবদূত হয়ে ধরা দিলেন। ১৯৭৮ সালে মানিক চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত ‘ঘর’ রেখার চোখে আরও এক বার সুখী সংসারের ছবি এঁকে দিল। কোনও দিকে না তাকিয়ে রেখা চোখ বুজে আবার প্রেমে পড়লেন ছবির নায়ক বিনোদ মেহরার। কিন্তু এই নায়কও যে বিবাহিত!

রেখার মনে যখন প্রেমের নেশা তাকে ঠেকানোর সাধ্যি কোন পুরুষের থাকে? পারেননি বিনোদও। ফলে, প্রেম এল দুদ্দাড়িয়ে। রেখা তখনও ভোলেননি অমিতের ছেড়ে যাওয়া। নায়িকা এ বার তাই তড়িঘড়ি প্রেমিককে নিয়ে কলকাতায় চলে এলেন। সবার আগে কালীঘাটে দেবী কালিকাকে সাক্ষী রেখে বিয়ে সেরে নিলেন। বিনোদও যাতে অমিতের মতো তাঁকে ফাঁকি দিতে না পারেন! কিন্তু যাঁর প্রেম আর বিয়ের ঘরে রাহু-কেতু-শনির দশা তাঁর কপালে এত সহজে সুখ মেলে? বিয়ে-থা সেরে রেখা বিনোদের হাত ধরে চললেন শ্বশুরঘর করতে। দু’জনেরই ধারণা ছিল, জোড়ে দেখলে পরিবার তাঁদের ফেলতে পারবে না।

কিন্তু সে আশায় গুড়ে বালি! লিফটে করে বিনোদের ফ্ল্যাটে পৌঁছে ডোর বেল বাজাতেই শাশুড়ির মুখোমুখি। রেখা শাড়ির আঁচল ভাল করে গায়ে জড়িয়ে নিচু হয়ে যেই পা ছুঁতে গেলেন অমনি ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিলেন বিনোদের মা! তার পর অবিশ্রান্ত গালিগালাজ আর গায়ে হাত!

রেখা তখনও দরজায় দাঁড়িয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ়। বিনোদ মেহরা পাশে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছেন। এর পরেও রেখা যাচ্ছেন না দেখে, শেষে চপ্পল খুলে রেখাকে ঘা কতক বসিয়ে দিলেন তিনি। এ বার যেন হুঁশ ফিরল ‘ঘর’-এর স্বপ্ন দেখা নায়িকা ‘আরতি’ রেখার। বিনোদকে একটাও কথা বলতে না দেখে বুঝলেন, ঘর তাঁর কোনও দিনই হবে না!

মাথা নিচু বিনোদের পাশ কাটিয়ে যখন রেখা ‘মেহরা হাউজ’ ছেড়ে লিফটের দিকে এগোচ্ছেন, দু’চোখে জল টলমল করছে। লিফটের চারপাশে, বাড়ির বাইরে বহু জন তখন তামাশা দেখতে ব্যস্ত! 

ইয়াসির উসমানের ‘রেখা: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ জীবনীতে রেখার জীবনে ঘর না হওয়ার এই জ্বালা ধরা আছে। পরে সিমি গারেওয়াল তাঁর শো-তে সেই নিয়ে প্রশ্ন করলে, রেখা দুই চোখে এক সমুদ্র জল আটকে হাসতে হাসতে বলেছিলেন, ‘‘ধুর! সব রটনা। ও সব বিশ্বাস কোর না। বিনোদ খুব ভাল বন্ধু ছিলেন!’’ এতটাই ‘ভাল বন্ধু’ যে মায়ের মারধর আটকে বাঁচাতে পারেননি রেখার সম্মান!

এসইউএ/এসি