ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

অজয় দাশগুপ্ত: জন্মদিনের শুভেচ্ছা

অসীম দাসগুপ্ত

প্রকাশিত : ০৫:২৯ পিএম, ৩ জুলাই ২০২০ শুক্রবার | আপডেট: ১২:৫২ এএম, ৪ জুলাই ২০২০ শনিবার

সাংবাদিক অজয় দাসগুপ্ত

সাংবাদিক অজয় দাসগুপ্ত

আজ আমাদের পরিবারের ছায়াতরু অজয় দাশগুপ্ত-এর ৭০তম জন্মদিনে প্রাণভরা শুভেচ্ছা। জন্মদিনে দু-একটি কথা আমার অগ্রজ অজয়দাকে নিয়ে। অনেক পরিচয় অজয়দার। পড়েছেন রসায়ন, হলেন সাংবাদিক। ষাটের দশকে ছাত্র ইউনিয়নের হাত ধরে রাজনীতির হাতে খড়ি। এলো মুক্তিযুদ্ধ। প্রথম কর্তব্য হিসেবে ঝাঁপিয়ে পড়লেন সে  যুদ্ধে। অজয়দা প্রায়ই বলতেন, আমাদের দেশে অনেকে অনেক কিছুই হবেন, তবে নতুন করে মুক্তিযোদ্ধা কেউ আর হবেন না।

স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে দেশগড়ার ব্রত। তখন থেকেই সাংবাদিকতা জীবনের অংশ হয়ে গেল। বঙ্গবন্ধু নিহত হবার পর ঢাকা বিশ্ববিদযালয় থেকে প্রথম প্রতিবাদ সংগঠিত করার অগ্রসৈনিক। সাংবাদিকতার সংগে যুক্ত হলো রাজনৈতিক গবেষণা। হরতাল তাঁর একটি প্রিয় বিষয়। গান্ধীজি উপমহাদেশে হরতালের প্রথম গুরু। সে হরতাল বাংলাদেশের অভ্যুদয় এবং পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে কি প্রভাব রেখেছে তা নিয়ে অজয়দার সুবিশাল গবেষণা গ্রন্থ সাত দশকের হরতাল-রাজনীতির প্রতিটি ছাত্রের জন্য অবশ্য পাঠ্য। 

দেশ ছাড়াও জন্মভূমি বরিশালের গৈলা সবসময় ভাবনাচিন্তার কেন্দ্রে স্থান পেয়েছে। গৈলা স্কুল, গৈলার বিজয় গুপ্তের  ঐতিহ্যমণ্ডিত মনসা বাড়ি, শিক্ষাগুরু কৈলাশ চন্দ্র সেন, গৈলার মৃৎশিল্প, স্বাধীনতা সংগ্রামী শহীদ তারক সেন, শহীদ আলাউদ্দীনের স্মৃতি সংরক্ষণ ও এসবের উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন সবসময়ই অজয়দাকে ব্যতিব্যস্ত রাখে। 

আরেকটি বিষয় হলো- আমাদের জন্মস্থান গৈলা দাশের বাড়ি। শত বছর ধরে গৈলা দাশের বাড়ি ছিল গৈলার উন্নয়নের পুরোধা। গৈলা স্কুল, গৈলা বাজার, গৈলা ডাকঘর প্রতিষ্ঠায় দাশের বাড়ির অবদান অসামান্য। সে ধারাটি অজয়দা সফলতার সঙ্গে বহন করে চলেছেন। আমাদের বাড়িটিকে গৈলার সব শ্রেণী-পেশার মানুষের মিলন মেলা করে তুলেছেন। 

পদ্মা সেতু ছিল আরেকটি প্রিয় বিষয়। কত লেখা যে লিখেছেন, নানা টক-শো’তে বিভিন্ন চ্যানেলে কতবার যে পদ্মা সেতুর দ্রুত বাস্তবায়নের গুরুত্ব আলোচনা করেছেন, তা হিসাব করা কঠিন। একেক মানুষের কাজের ধরন একেক রকম। আত্মপ্রচার বিমুখ আমাদের প্রিয় অজয়দা এসব কাজ করেছেন একান্তই আড়ালে থেকে। তবে আড়ালে থাকতে চাইলেই থাকা যায় না। মানুষের নিজস্ব মূল্যায়ন তাঁকে আড়ালে থাকতে দেয় না। 

আজ অজয়দার ৭০ তম জন্মদিন, অঙ্কের হিসেবে একান্ত কম নয়। তবুও অজয়দা সেই ষাটের দশকের একজন টগবগে তরুণের মতই অবিচল নিষ্ঠায় অবিরাম কাজ করে চলেছেন। আমরা তাঁর  দীর্ঘ কর্মময় জীবন কামনা করি।

লেখক- অজয় দাসগুপ্তের ছোটভাই।

এনএস/