ঢাকা, বুধবার   ০৮ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগে সওজ`এর ২ প্রকৌশলীর বদলি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:২৯ পিএম, ৯ জুলাই ২০২০ বৃহস্পতিবার

জামালপুর-শেরপুর বনগাঁও সড়কের কজওয়ের ৭ কি. মি. শিমুলতলী সেতু ও একই সড়কের ৯ কি. মি. এর পোড়াদাহ দু’টি সেতুর নির্মাণ কাজে অংশগ্রহণ করে সেই সেতুর কাজ বাস্তবায়নে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টারপ্রাইজ (প্রাঃ) লিমিটেড প্রায় ৩৯ কোটি টাকার কাজ পান। সেতু দু’টি নির্মাণের শুরুতেই বালু মিশ্রিত পাথর, আয়রন বালু এবং পূর্বের ব্যবহৃত নির্মাণ সামগ্রীসহ নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে সেতু নির্মাণে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

৯ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোঃ আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে ২ সদস্যের তদন্ত কমিটির টিম সরেজমিন পরিদর্শন করেন।

সম্প্রতি শেরপুরের সরকার দলীয় হুইপ মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক এমপি গত ৪ জুলাই শনিবার সকাল ১১টায় দু’টি কাজের উদ্বোধন করতে গেলে কাজের সাইটে নিন্মমানের কাঁচামাল দেখতে পেয়ে শেরপুর সওজ’নির্বাহী প্রকৌশলীর মাধ্যমে কাজটি করার নির্দেশ প্রদান করেন। 

এ নিয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হলে পরে এ ঘটনায় শেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান উদ্দিন আহমেদকে ফেনী জেলায় এবং উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. আজাহারুল ইসলাম আজাদকে মেহেরপুর জেলায় বদলির আদেশ দিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী। আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে স্থানীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে দায়িত্বভার হস্তান্তরের নির্দেশ প্রদান করা হয়। অন্যথায় ১৬ জুলাই থেকে তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত হিসেবে গণ্য হবে আদেশে বলা হয়।

জামালপুর-শেরপুর বনগাঁও সড়কের কজওয়েতে ৭ কি. মি. শিমুলতলী সেতু ও একই সড়কের ৯ কি. মি. এর পোড়াদাহ দু’টি সেতুর নির্মাণ কাজের ব্যাপকভাবে অনিয়মের অভিযোগ উঠায় এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে একজন উপ-সচিব ও একজন সহকারি সচিবসহ দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরে ৮ জুলাই বুধবার বিকেলে ও ৯ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণায়ের উপ-সচিব মো. আজিজুর রহমান ও সহকারি সচিব মাহবুব-এ-এলাহী’র নেতৃত্বে সেতু নির্মাণ কাজে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেন। 

এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তদন্তকারী উর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপ-সচিব মো. আজিজুর রহমান বলেন, ওই সড়কের নির্মাণ কাজের কোর কাটিং করা হয়েছে এবং সেতুর পাইলিং ঢালাইয়ের ব্যবহৃত নির্মাণ সামগ্রী ল্যাব টেস্টের জন্য নমুনা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শুধু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টারপ্রাইজ (প্রাঃ) লিমিটেড নয় এ কাজের সাথে এবং অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। 

এদিকে একটি সূত্র জানিয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টারপ্রাইজ (প্রাঃ) লিমিটেড সওজ বিভাগের এ দু’টি সেতু নির্মাণ কাজে দরপত্রে অন্যান্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে অংশগ্রহণ করে তিনি প্রায় ৩৯ কোটি টাকায় কাজটি পান। পরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টারপ্রাইজ (প্রাঃ) লিমিটেড কাজ না করে জাকির হোসেন নামে এক ঠিকাদারের কাছে কাজটি বিক্রি করে দেন। 

অপরদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ মূল ঠিকাদার সেতুর কাজ না করায় এবং ক্রয় করা ঠিকাদার জাকির হোসেনকে দিয়ে সেতুর কাজ বাস্তবায়ন করা হলে কাজের গুণগতমান খারাপ হবে বলে এমনটাই বলেছেন সচেতন মহল ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা।
কেআই/