ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদটি ভিত্তিহীন: বিজিবি’র প্রতিবাদ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:০১ পিএম, ১০ জুলাই ২০২০ শুক্রবার | আপডেট: ১০:০২ পিএম, ১০ জুলাই ২০২০ শুক্রবার

সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’র (বিজিবি) পর্যবক্ষেণ টাওয়ার- সংগৃহীত

সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’র (বিজিবি) পর্যবক্ষেণ টাওয়ার- সংগৃহীত

ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’র (বিজিবি) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “গত ৭ জুলাই ভারতীয় আনন্দবাজার পত্রিকায় ‘অরক্ষিত জমিতে পা পড়ছে বাংলাদেশির’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি ভিত্তিহীন, বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।” বিজিবি’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ শুক্রবার এ প্রতিবাদ জানানো হয়।

এতে বলা হয়, গত ৭ জুলাই ভারতীয় আনন্দবাজার পত্রিকায় ‘অরক্ষিত জমিতে পা পড়ছে বাংলাদেশির’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদটি ভিত্তিহীন, বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। পত্রিকায় ঘটনাস্থল রানীনগর সীমান্তের কথা বলা হয়েছে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেখানে কোনো ঘটনা ঘটেনি। উল্লেখিত এলাকাটি রাজশাহী বিজিবি’র দায়িত্বপূর্ণ এলাকা চারঘাট বিওপি হতে শুরু করে তালাইমারি বিওপি পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এখানে পদ্মা নদী বরাবর শূন্য লাইন অতিক্রম করেছে। এর উভয় পাশে বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল।

সংবাদে বলা হয়, সীমান্তের রানীনগর ১ ও ২ ব্লক এবং জলঙ্গি জুড়ে প্রায় ২২ হাজার একর অরক্ষিত জমিতে বাংলাদেশিরা অবাধে চাষাবাদ করছে। এই প্রসঙ্গে দেখা যায় বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। ভারতের অভ্যন্তরে গিয়ে চাষাবাদ করা তো দূরের কথা, বর্তমানে আন্তর্জাতিক সীমারেখা বরাবর চাষাবাদ করাই অসম্ভব একটি ব্যাপার। সেখানে প্রতিনিয়ত শূন্য লাইন বরাবর বিজিবি সদস্যরা রাত দিন টহল দিয়ে সীমান্ত রক্ষা করছে।

প্রকাশিত সংবাদে আরও বলা হয়, দিন কয়েক আগে দুই জন বাংলাদেশি সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় এলাকায় চলে আসলে বিএসএফ তাদের আটক করে এবং ফলশ্রুতিতে তারা মুক্তিপণ স্বরূপ রানীনগর সীমান্তের গ্রাাম থেকে দুই জন গ্রামবাসীকে তুলে নিয়েছে বাংলাদেশি দুস্কৃতিকারীরা। কিন্তু বাস্তবে আসল ঘটনা সম্পূর্ণ উল্টো এবং প্রকাশিত সংবাদটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে বিজিবি’র সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

মূলত গত ২জুলাই জলঙ্গি সীমান্তে দুটি ঘটনা ঘটে যা পত্রিকার মূল বক্তব্যের সম্পূর্ণ বিপরীত। গত ২ জুলাই আনুমানিক বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নয়ন শেখ এবং শহিদুল শেখ নামক দুই জন জলঙ্গী নিবাসী ভারতীয় চোরাকারবারি অবৈধভাবে জলঙ্গী সীমান্ত দিয়ে আন্তর্জাতিক সীমারেখা অতিক্রম করে এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ইউসুফপুর গ্রামে মাদক ব্যবসা এবং অর্থ লেনদেনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় লোকজনের উপর চড়াও হয়। স্থানীয়রা ব্যাপারটিকে সহজভাবে না নিয়ে তাদেরকে ঘেরাও করে ফেলে। পরবর্তীতে ইউসুফপুর বিজিবি ক্যাম্প খবর পেয়ে ভারতীয় দুই জনের নিরাপত্তার কথা ভেবে তাদেরকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে নেয়। অপরদিকে একই দিন দুপুর ১২ টার দিকে বিএসএফ টহল দল অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক সীমারেখা অতিক্রম করে ৩শ’ মিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে (পিলার ৭২/৪-এস বরাবর) প্রবেশ করে ইউসুফপুর এলাকা থেকে তিনজন নিরীহ ও নিরাপরাধ কৃষককে ধরে নিয়ে যায়, যারা চর এলাকায় শুধুমাত্র চাষাবাদ করে বাড়ি ফিরছিল। উভয় ঘটনার রেশ ধরে একই দিনে বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ৩ জুলাই শান্তিপূর্ণভাবে উভয় দেশের নাগরিক হস্থান্তর-গ্রহণের মাধ্যমে ব্যাপারটি সুষ্ঠুভাবে মীমাংসাও হয়েছে। 

মূলত স্থানীয় মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় বিএসএফের সাথে জনগণের বৈরী সম্পর্ক, স্থানীয় গরু চোরাকারবারী কর্তৃক এই মৌসুমে কোন কাজ করতে না পারা, মাছ ধরার সময় বিএসএফ কর্তৃক স্থানীয় জেলেদের থেকে চাঁদা আদায় এবং সর্বোপরি স্থানীয় বিএসএফ ব্যাটালিয়নের ব্যর্থতাকে ঢাকার জন্য ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদটি স্থানীয় ভারতীয় জনগণ অথবা স্বার্থান্বেষীমহল কর্তৃক প্রদান করা হতে পারে বলে বিজিবি’র বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। (বাসস)

এমএস/