ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বাংলা মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাসের ধারা ওয়েবনিয়ার অনুষ্ঠিত

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৩২ পিএম, ১১ জুলাই ২০২০ শনিবার

নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের উদ্যোগে আজ অনুষ্ঠিত হয়েছে ওয়েবনিয়ার ‘বাংলা মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাসের ধারা’। এতে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন। প্রধান অতিথি দেশবরেণ্য কবি-কথাসাহিত্যিক-গবেষক এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন ও বাংলা বিভাগের খ্যাতিমান অধ্যাপক ড. অনীক মাহমুদ। বিশেষ অতিথি নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ইঞ্জিনিয়ার প্রফেসর ড. হুমায়ুন কবীর।

প্রধান আলোচক বিশিষ্ট কবি ও রবীন্দ্রসঙ্গীতশিল্পী এবং কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. সরওয়ার মুর্শেদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলা বিভাগের প্রধান ও বহুমাত্রিক লেখক ড. রকিবুল হাসান।

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আল জাহেরি মাহমুদ ও মুর্শিদা বানু, দেশের বিশিষ্ট কবি-গবেষক ও অধ্যাপক শাফিক আফতাব, বঙ্গবন্ধু গবেষক মাসুদ রানা, শিশুসাহিত্যিক ও গবেষক ড. জ্যোৎস্নালিপি, অধ্যাপক শারমিন সুলতানা তন্বী, বাংলঅ টিভির সংবাদ উপস্থাপক শাকিল আহমাদ রুমী এবং বাংলা বিভাগের প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ। 

আলোচনার শুরুতেই মুজিববর্ষ উপলক্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধাচিত্তে স্মরণ করা হয়। কৃতজ্ঞতা জানানো হয় নর্দান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিশেষ করে ট্রাস্টি বোর্ডের মাননীয় চেয়ারম্যান ও প্রখ্যাত গবেষক প্রফেসর ড. আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহকে, তিনি পুঁজির চিন্তা না করে, শহীদের রক্তে অর্জিত মাতৃভাষার সেবার লক্ষে বাংলা বিভাগ প্রতিষ্ঠা করে অসামান্য দেশপ্রেমের পরিচয় রেখেছেন।

আলোচনায় বক্তারা বলেন, সাহিত্যের খুব গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় শাখা হলো উপন্যাস। একটি উপন্যাস হয়ে উঠতে পারে একটা সমাজের, একটা রাষ্ট্রের এবং জীবনের পূর্ণস্বরূপ। উপন্যাসে প্রেম, নর-নারীর আকর্ষণ ও বিকর্ষণ, মনস্তত্ত্বের জটিলতার উদঘাটন যেমন ঘটতে পারে, তেমনি আবার সমাজ, রাজনীতি, ইতিহাস, দেশাত্মবোধ, স্বদেশ সংঘটিত নানা ঘটনার অভিঘাত ও বিপন্নতার অধ্যায় এবং প্রবাসজীবন ইত্যাদি নানা প্রসঙ্গের গভীরে ঢুকে একজন ঔপন্যাসিক সৃষ্টি করতে পারেন অসামান্য উপন্যাস। 

বাংলা উপন্যাসের পূর্ণশিল্পরূপ লাভ করে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের হাতে। পরবর্তীতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বিভূতি-মানিক-তারাশঙ্কর এঁদের দক্ষ শিল্পসুষমা ও বিষয় বৈচিত্র্যতায় ক্রমপর্যায়ে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, শওকত ওসমান, আকবর হোসেন, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, সেলিনা হোসেন, হুমায়ূন-মিলন সহ শক্তিমান আরো বিভিন্ন ঔপন্যাসিকের বহুমাত্রিক অবদানে বাংলা উপন্যাস সময়ের পরিক্রমায় বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয়, গুরুত্বপূর্ণ এবং শক্তিশালী একটি শাখা। এতে উপন্যাস যেমন সমৃদ্ধ হয়েছে, তেমনি উপন্যাসের ভাগ-বিভাজন-ধারা-উপধারা-নানামাত্রিক শাখাও পল্লবিত হয়েছে।

বাংলা উপন্যাসে বিপ্লবী উপন্যাস, রোমান্স উপন্যাস, ঐতিহাসিক উপন্যাস, রাজনৈতিক উপন্যাস, সামসাজিক উপন্যাস, আঞ্চলিক উপন্যাস, নদীমাত্রিক উপন্যাস এভাবে বিভিন্ন ধারা তৈরি হয়েছে। এ ধারাবাহিকতায় মনস্তাত্ত্কি উপন্যাস বাংলা সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। বিদেশি সাহিত্যেও মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস গুরুত্বপূর্ণ। গুস্ত্যাব ফ্লবেয়ার-এর মাদামবোভারি, দস্তয়ভস্কির ক্রাইম অ্যান্ড পানিশমেন্ট পৃথিবীর বিখ্যাত মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস। বাংলা সাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্রের বিষবৃক্ষ, কৃষ্ণকান্তের উইল, রবীন্দ্রনাথের চোখের বালি, যোগাযোগ, ঘরে-বাইরে, শরৎচন্দ্রের গৃহদাহ, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর চাঁদের অমাবস্যা, কাঁদো নদী কাঁদো প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ মনস্তাত্তিক উপন্যাস।

আরকে//