ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ১৫ ১৪৩২

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের যুদ্ধবিমানের নকশায় ভূমিকা রাখেন যে কিশোরী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৪৫ এএম, ১৪ জুলাই ২০২০ মঙ্গলবার | আপডেট: ১০:৪৯ এএম, ১৪ জুলাই ২০২০ মঙ্গলবার

‘ব্যাটেল অফ ব্রিটেন’ এর ৮০ বছর পূর্তি হলো গত ১০ জুলাই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় ব্রিটেনের রয়্যাল এয়ারফোর্স এবং নাৎসি জার্মানির বিমান বাহিনীর মধ্যে আকাশে ওই যুদ্ধ হয়েছিল। ১৯৪০ সালের অক্টোবরে ওই যুদ্ধে জয়ী হয়েছিল ব্রিটেন। সেই জয়ের পেছনে পরোক্ষ অবদান ছিল এক কিশোরীর।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিজয়ের জন্য ব্রিটিশ সামরিক বাহিনী নির্ভর করেছিল অসাধারণ নকশার যুদ্ধবিমানগুলোর ওপর। আর এর অন্যতম ছিল ‘স্পিটফায়ার’ যুদ্ধবিমান। এই স্পিটফায়ার তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলে কিশোরী এক স্কুল ছাত্রী।

হ্যাজেল হিল নামের ১৩ বছরের বালিকা তখন যুক্তরাজ্যে বাস করতো। ১৯৩০ দশকে যুক্তরাজ্যের বিমান মন্ত্রণালয়ে চাকরি করতেন তার পিতা ফ্রেড হিল। রাজকীয় বিমান বাহিনীর (আরএএফ) সব ধরনের কর্মকাণ্ড তদারকি করতো এই মন্ত্রণালয়। সেই সময় রাজকীয় বিমান বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য নানা ধরনের বিমান তৈরি করা হচ্ছিল, তার একটি ছিল 'স্পিটফায়ার' যুদ্ধবিমান।

প্রথমদিকের বিমানগুলো শত্রু বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য ততোটা কার্যকর ছিল না। পরবর্তীতে সেই বিমানের উন্নত নতুন সংস্করণ তৈরি করা হয়। সেসব সংস্কারের অন্যতম ছিল যে, বিমানে কতগুলো আগ্নেয়াস্ত্র সংযুক্ত করা হবে। পরিকল্পনা হয়েছিল বিমানে চারটি আগ্নেয়াস্ত্র থাকবে। তবে হ্যাজেলের পিতা ফ্রেড হিল ভাবলেন, সেখানে আটটি আগ্নেয়াস্ত্র সংযুক্ত করা উচিত।

তবে বিমানে সেগুলো কীভাবে বিন্যাস করা হবে সেই হিসাব তিনি করে উঠতে পারছিলেন না। তখন তিনি বাড়িতে ফিরে গেলেন এবং তার কিশোরী মেয়ে হ্যাজেলকে ডেকে সমস্যাটির সমাধান করতে বললেন। কারণ তার মেয়ে অংকে তুখোড় ছিল। এই বিশ্বাসে ফ্রেড হিল এই জটিল সমাধানের দায়িত্ব দিলেন মেয়ের উপর।

তখন অনেকে মনে করতেন, এই যুদ্ধবিমানগুলোয় আটটি করে আগ্নেয়াস্ত্র সংযুক্ত করা হলে বিমানের জন্য সেটা বেশি হয়ে যাবে এবং ওজনের কারণে বিমানগুলো উড়তে পারবে না। কিন্তু পরে দেখা গেল ব্রিটিশদের যুদ্ধ জয়ের জন্য সেটা আসলে যথার্থ ছিল। বিমানে বেশি আগ্নেয়াস্ত্র থাকার কারণে ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর বিজয়ে বিশেষ ভূমিকা ছিল।

হ্যাজেলের গাণিতিক হিসাব-নিকাশের সমাধান ছাড়া যুদ্ধের ফলাফল হয়তো ভিন্নরকম হতে পারতো।

হ্যাজেলের নাতনি ফেলিসিটি বেকার বলেছেন, তার দাদী গল্প করতেন যে তিনি বিমান নিয়ে কাজ করেছিলেন। কিন্তু সেই গল্প যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেটা কিছুদিন আগে তিনি বুঝতে পেরেছেন।

তিনি আরও বলেছেন, “তার নাতনি হিসাবে আমি সবসময়েই গর্ব করে যাবো। আমার এখন আরও বেশি ভালো লাগছে যে, তার সেই অবদান ব্রিটিশ রাজকীয় বিমান বাহিনীও স্বীকৃতি দিয়েছে।”
সূত্র: বিবিসি
এএইচ/এসএ/