ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের সঙ্গেও সাহেদের সুসম্পর্ক

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:২২ পিএম, ১৫ জুলাই ২০২০ বুধবার | আপডেট: ১১:২৯ পিএম, ১৫ জুলাই ২০২০ বুধবার

করোনা পরীক্ষার ভূয়া সার্টিফিকেট কান্ডের পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছিলেন প্রতারক সাহেদ। তাকে ধরতে প্রশাসনের চলছিল নানামুখি প্রচেষ্টা। এর আগে, ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায় র্যাব। করোনা পরীক্ষা না করেই সার্টিফিকেট দেয়াসহ বেরিয়ে আসে সাহেদের নানা অনিয়ম। ১৫ বছরের প্রতারণার জীবনে সাহেদের নামে মামলার সংখ্যা ৫৬টি। তার সহযোগী ও পৃষ্ঠপোষকদের বিষয়েও খোঁজখবর চলছে।

পরিবারের দেয়া নাম সাহেদ করিম। তবে ইফতেখার করিম, ইফতেখার মোহাম্মদ চৌধুরী, মোহাম্মদ সাহেদসহ নানা পরিচয় আছে তার। মেজর সাহেদ, কর্ণেল ইফতেখার কখনও বা প্রধানমন্ত্রীর এপিএস, সিনিয়র সচিব, সচিব, যুগ্ম সচিব পরিচয় দিতেন এই প্রতারক।

অর্থের জোরে টেলিভিশন টকশো’গুলোরও পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন সাহেদ। সেখানে নীতি কথার ফুলঝুরি অথচ নিজের প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের কাছে তার পরিচিতি ‘অমানুষ’। বকেয়া বেতন-ভাতা চাইলে টর্চার সেলে নিয়ে নিজেই পেটাতেন তাদের। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বিএনপি নেতাদেরও ঘনিষ্ট ছিলেন সাহেদ। 

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বন্ধু বিতর্কিত ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের সঙ্গেও ঘনিষ্টতা ছিল তার। প্রতারণার মামলায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুই বছর কারাগারে ছিলেন সাহেদ। 

করোনা পরীক্ষার ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় আলোচনায় আসার আগেও গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদ। 

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সুযোগ সন্ধানী সাহেদ নিজেকে আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে পরিচয় দেয়া শুরু করেন। আর এই পরিচয় প্রতিষ্ঠিত করতে আওয়ামী লীগ নেতা, মন্ত্রী ও সাংসদদের সঙ্গে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করতেন প্রতারক সাহেদ।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নথিপত্র অনুযায়ী, ৫৬ মামলার আসামি সাহেদ ২০১১ সালে বিডিএস ক্লিক ওয়ান নামে এমএলএম প্রতিষ্ঠান গড়ে সাধারণ মানুষের ৫০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের বিমানবন্দর শাখা থেকে ৩ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার সময় কর্ণেল পরিচয়ে জমা দেন ভুয়া কাগজপত্র। আরকেসিএস মাইক্রোক্রেডিট ও কর্মসংস্থান সোসাইটি নামে একটি অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠানেরও মালিক তিনি। প্রতারণার ক্ষেত্র বহুমুখী করতে সামনে রেখেছেন রিজেন্ট হাসপাতাল, রিজেন্ট কলেজ, রিজেন্ট ইউনিভার্সিটি, রিজেন্ট ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, রিজেন্ট কেসিএস লিমিটেড, রিজেন্ট আইটি, বিডিএস ক্যুরিয়ার সার্ভিস ও কর্মসংস্থান সোসাইটি নামে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। 

প্রতারক সাহেদ শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন। এখন বিচারের মুখোমুখি হয়ে সাজা নিশ্চিত হলে সাহেদ নামে বহুমুখী প্রতারকের অধ্যায় শেষ হবে বলেই মনে করছে আইনশৃঙ্খল রক্ষাকারী বাহিনী।

 

এসি