ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

২৫শে মার্চ, ভয়াল কালরাত

প্রকাশিত : ০৩:৩২ পিএম, ৫ এপ্রিল ২০১৭ বুধবার

আজ ভয়াল ২৫শে মার্চ, বাঙালীর ইতিহাসে সবচেয়ে বিষাদময় কালরাত। ১৯৭১ সালের এইদিনের শেষে মধ্যরাতে অপারেশন সার্চলাইট নামে ভয়াবহ গনহত্যা চালায় পাকিস্তানি সামরিক জান্তা। আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে ক্ষমতা দেয়ার বদলে হত্যাযজ্ঞ চালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইপিআর পিলখানা, রাজারবাগ পুলিশ লাইনসহ বিভিন্নস্থানে।

২৫শে মার্চ ১৯৭১, উত্তাল দিন গড়িয়ে রাত। বাঙালীর মুক্তির আন্দোলনকে চিরতরে থামিয়ে দিতে, ঘুমন্ত মানুষের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে অস্ত্রে সুসজ্জিত বর্বর পাকিস্থানি বাহিনী। আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র ও সাজোয়াযান সেনানিবাস থেকে বের হয়ে এগিয়ে চলে বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানা ও রাজারবাগ পুলিশ লাইনসহ বিভিন্ন দিকে। হঠাৎ রাতের অন্ধকার ভেদ করে আলো, বিস্ফোরণের পর বিস্ফোরণ। গুলির আওয়াজ ঘুমন্ত শহরে, নারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধের আর্তচিৎকার।

পৃথিবীর ইতিহাসে যুদ্ধকালীন সময়েও এতো মানুষের মুত্য হয়নি। এমনকি রেহাই পায়নি গণমাধ্যম কর্মীরাও। গ্যাসোলিন ছিটিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হয় গণবাংলা অফিস। দৈনিক সংবাদ, ইত্তেফাক ও জাতীয় প্রেসক্লাবে অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি মর্টার সেল ছুড়ে ধ্বংস্তুপে পরিণত করা হয়। শহীদ হন সংবাদ সাংবাদিক সাবের।

পাকিস্তানি সামরিক জান্তা এই গণহত্যা চালায় তাদের পরিকল্পনামতেই। ২৪ শে মার্চে বঙ্গবন্ধুর সাথে আলোচনা শেষ করে ২৫ শে মার্চ যৌথ ঘোষণার কথা বললেও সন্ধ্যায় গোপনে ঢাকা ছাড়েন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বন্দি হওয়ার আগে সংবাদ মাধ্যমে বাংলার অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে ফের অনঢ় অবস্থানের কথা বলেন। দিয়ে যান স্বাধীনতার ঘোষণা।

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে গিয়ে পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে আর শহরে সেনাদের তৎপরতা দেখে আসন্ন বিপদ নিশ্চিত হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা রেহমান সোবহান।

ব্যরিস্টার আমির-উল ইসলাম সে রাতে বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে লালমাটিয়ার একটি উঁচু ভবনে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ছাদ থেকে দেখেছিলেন পাকিস্তানের সার্চলাইট অপারেশনে মৃত্যুপুরির চিত্র।

পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর গনহত্যার চিত্র ও ক্ষয়ক্ষতি পরের দিন ভোরে দেখে হতবাক ঢাকাবাসী।

তবে ঢাকার বাইরে পাকসেনাদের প্রতিরোধে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন চট্ট্রগ্রাম ও কুমিল্লা সেনানিবাসের বাঙালী সেনারা। পাকিস্তানীদের হত্যাযজ্ঞ প্রতিরোধের পাশাপাশি স্বাধীনতা যুদ্ধের সশস্ত্র প্রস্তুতি প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় গোটা বাংলাদেশে।