ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

চিকিৎসা সেবায় ক্যারিয়ার গড়বেন যেভাবে (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:১১ পিএম, ২২ জুলাই ২০২০ বুধবার

প্রযুক্তির উন্মেষ ঘটিয়ে এগিয়ে চলেছে বিশ্ব। তারই ধারাবাহিকতায় নতুন অনেক উদ্যোগ এবং পেশা আসছে আমাদের সামনে। ধীরে ধীরে হলেও আধুনিক চিকিৎসা সেবায় নতুন নতুন উদ্যোগ আমাদের স্বাস্থ্য খাতকে করছে বিশ্বমানের। সেই সাথে তৈরি করছে বিভিন্ন কর্মসংস্থানেরও। চিকিৎসক ছাড়াও এই সেক্টরে প্রয়োজন হচ্ছে বায়োক্যামিস্ট, টেকনিশিয়ানসহ বিভিন্ন পদে দক্ষ জনবলের। 

এই সেক্টরের সবগুলো পদের জন্যই একাডেমিক লেখাপড়া শেষ করার সাথে সাথেই কর্মজীবন শুরু করা যায়। তাছাড়া হেলথ কেয়ার সেন্টারে ক্যারিয়ার গড়তে পারলে সময়ের সাথে সাথে অভিজ্ঞতা যেমন বাড়ে তেমনি বাড়ে উপার্জনও। এই সেক্টরের প্রায় প্রতিটি পদই মানবসেবার জন্য অন্যতম। তাই ক্যারিয়ার গড়তে এই মহান সেক্টরকে যারা বেছে নিতে চান, তাদের সামনে সুযোগটা বর্তমানে বেশ প্রসারিত। 

বাংলাদেশের আধুনিক চিকিৎসার অন্যতম উদ্যোক্তা ডা. আশিষ কুমার চক্রবর্তী। মেধাবি এই ব্যক্তিত্ব ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন মানবসেবায় নিজেকে নিবেদিত করার। পরবর্তীতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি সম্পন্ন করে নিজেকে নিয়োজিত করেন চিকিৎসা সেবায়। সেবার ভ্রত ও আধুনিক চিকিৎসা সেবার উদ্যোগ নিয়ে ২০০৪ সাল থেকে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি।

সম্প্রতি একুশে টেলিভিশনের নিয়মিত আয়োজন ‘ক্যারিয়ার গাইড’ অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এসেছিলেন ডা. আশিষ কুমার চক্রবর্তী। আসুন জেনে নেই তার স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে উঠে আসার গল্প-

একুশে টেলিভিশন: আপনার অন্ট্রোগ্রানোশীপ, মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল এবং বিভিন্ন সিরিয়াল অন্ট্রোগ্রানোশীপ ভ্যানচারগুলোর পেছনের গল্পটি কী?

ডা. আশিষ কুমার চক্রবর্তী : ২০০০ সালে আমি এমবিবিএস পাস করি। পাস করার পর ইন্টার্নিশীপ শেষে প্ল্যান ছিল আমি ঢাকায় চলে আসবো। উদ্দেশ্য ছিল অন্যদের মতো পড়াশুনা ও  বিসিএস পরীক্ষা। কিন্তু আমার একটি ছন্দপতন হলো। সেটা হচ্ছে আমার ইন্টার্নিশীপের প্রায় আট-নয় দিন বাকি, তখন আমার রেসপেক্টেট সার্জারির লানের্ট প্রফেসার খুরশিদ আলম স্যারের সঙ্গে একটি অপারেশনে এসিস্ট করছিলাম। তখন স্যার আমাকে বললেন যে, তুমি একটা চাকরি করবে নাকি? তখন আমি বললাম, স্যার কি চাকরি। তিনি বললেন, তোমার ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেই, মিশন হাসপাতালে। 

সেখানে আমি যখন জয়েন করি তখন আমাকে ছয়মাসের নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে, বলা হলো আপনি যদি পারেন তাহলো এটি চালাবো না হলে বন্ধ করে দিব। দেখলাম কিছুদিন যেতে না যেতেই এটার প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হতে থাকলো। মানুষ আসা শুরু করলো, প্রজেক্টটির আলো জ্বলে উঠলো। ২০০৪ সালে আমার বড়বোন এবং আমাদের গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী আমাকে বললেন, ঢাকায় একটি হসপিটাল (আয়শা মেমোরিয়াল) বিক্রি হবে তুই যদি এটি নিস তাহলে এটি আমি কিনে নিব। তুই চালাবি।
 
ফাইনালি আমাদের প্রজেক্টটি এখন অনেক বড়, প্রায় চার বিঘার উপর হসপিটালটি। এটির নামটি পরিবর্তন হয়েছে ২০১৪-১৫ সেশনে। তখন আমরা মেডিকেল কলেজ চালু করি। নাম দেওয়া হয় ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল। এখন এটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে আমি আছি, আর আমার বড়বোন হসপিটালটির চেয়ারম্যান। এর সাথে রয়েছে ইউনিভার্সেল নার্সিং কলেজ, ইউনিভার্সেল নার্সিং ইনস্টিটিউট এবং ইউনিভার্সেল রিসার্চ সেন্টার। মূলত কথা আমরা হেলথ এডুকেশন নিয়ে একটা যুগান্তকারী কাজ করতে চাই।

একুশে টেলিভিশন: আপনার যে এতগুলো ইনস্টিটিউশন এর মধ্যে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ আছে কী?

ডা. আশিষ কুমার চক্রবর্তী: হেলথ সেক্টরে যে শুধু ডাক্তারি করতে হবে তা নয় কিন্তু। বাংলাদেশের ফার্মাসিটিক্যালগুলোতে রিসার্চে প্রচুর ডাক্তাররা কাজ করে। প্রত্যেক বড় বড় ইন্ডাস্ট্রিতে 
ডাক্তাররা কাজ করে। রবির গ্যালকো যেটা এজিয়াটা বাংলাদেশ লিমিটেড, এটির হেলথটা আমরা চালাই।

একুশে টেলিভিশন: আমাদের অনেক ভিউয়্যার্স হচ্ছে স্টুডেন্ট এবং ফ্রেসগ্যাস ওরা আপনাকে দেখে ইন্সপেয়ার্ড হবে, ওদের এই মুহূর্তে কী করা উচিত?

ডা. আশিষ কুমার চক্রবর্তী: যারা ইন্টারমিডিয়েড পাস করেছে বা করবে এবং যারা ডাক্তার হতে চায় বা চাচ্ছে তারা কিন্তু কিছুটা রূপকথার মতো। ডাক্তার মানেই সিনেমাতে দেখেছি কোর্ট-টাই পরা ডাক্তার ওটি থেকে বের হয়ে এসে বলছে আপনার রোগী সুস্থ আছে অথবা স্যরি আপনার রোগীকে বাঁচাতে পারলাম না। এগুলো দেখে তারা ফ্যান্টাসিতে বড় হয়। এই জায়গাটাতে আমি বাবা-মাকে ফোকাস করতে চাই। বাবা-মাকে বলতে চাই, আপনার সন্তানটি কি হতে চায় তা তার উপর ছেড়ে দিন। ডাক্তারই যে হতে হবে তা নয়, জোর করে কিছু বানানোর দরকার নেই। আমাদের কিছু ছেলেমেয়ে ছিল, যারা খুবই ব্রিলিয়ান্ট আমার থেকেও মেধাবী। তারা কিন্তু অনেক দেরিতে পাস করেছে, খুব ভাল জায়গায় অবস্থান করতে পারে নাই। কারণ, তারা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ডাক্তার হয়েছে।

একুশে টেলিভিশন: ডাক্তার ছাড়াও এই লাইনে আর কী কী প্রফেশন আছে?

ডা. আশিষ কুমার চক্রবর্তী: আসলে এটি হচ্ছে একটি টিমওয়ার্ক। আমি যখন কাজ করি তখন আমার সাথে ডাক্তার, মেডিকেল অফিসার, নার্স, ব্রাদার থাকে, পেসেন্সকেয়ার, অ্যাটেন্ডেড, ওয়ার্ড বয়, ওয়ার্ড মাস্টার, ট্রলিম্যান, বায়োকেলিম্যান ইঞ্জিনিয়ার, ক্লিনার, লিপটম্যান থাকে। এরা সবাই কাজের সঙ্গে জড়িত। ল্যাবে হ্যামালোটোজি, প্যাথোলজি, মাইক্রোবায়লোজি, হিস্টোপাইকোলজিস্টরা জড়িত। এখন সবচেয়ে আলোচিত পিসিআর ল্যাব, এখানেও অনেক লোক দরকার। তাই সবারই যে মেডিকেল পার্সন হতে হবে ‘নট লাইক দ্যাট’। সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যখাতে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। দেশে একসময় গার্মেন্টস খাতে বিনিয়োগ হতো, এখন বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে প্রচুর বিনিয়োগ হচ্ছে। স্বাস্থ্যখাতে ফাইভস্টার হসপিটাল আছে আবার পাড়ামহল্লায় ছোট হসপিটালও আছে। প্রত্যেকটাতেই এ ধরনের লোকদের লাগছেই। সুতরাং যোগ্যতা বেধে, প্রফেশনাল নলেজ বেধে এবং প্রতিষ্ঠানের চাহিদা বেধে লোক লাগছেই। এ ধরনের পোস্টগুলোতে কেউ কিন্তু বসে নেই। তাদের কিন্তু অ্যাট্রাকটিভ সেলারি। তারা কিন্তু একই মানুষ একাধিক জায়গায় কাজ করছেন। তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হয়েছে।

একুশে টেলিভিশন: একজন সাকসেসফুল অন্ড্রাপ্রায়নের কী কী ট্রেড থাকা উচিত বলে আপনি মনে করেন?

ডা. আশিষ কুমার চক্রবর্তী: আমাদের দেশে এই জিনিসটা এখনও ব্যাপকভাবে গড়ে ওঠেনি। অন্ড্রাপ্রায়ান হতে হলে প্রথমত আপনাকে জানতে হবে। আপনার নলেজ, কনভিডেন্স, পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি লাগবে এবং আপনাকে অনেস্ট হতে হবে। যেকোন কিছুতেই, আপনি যাই করেন, আপনাকে সৎ হতেই হবে। আপনাকে গোল নির্ধারণ করতে হবে। আপনি কোথায় যেতে চান? এ জায়গাটিতে প্রয়াত মেয়র আনিসুল হককে স্মরণ করতে চাই। আনিস ভাইর একটি কথা আমার ভীষণ ভালো লাগতো যে, আপনি প্রতি পাঁচ বছর পর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চান? এটি একটি চমৎকার বিষয়। আমি আমার নিজের জীবন দিয়ে অ্যাপ্লাই শুরু করেছি। আমি এখন ৪৫ ইয়ার্স, ৫০ বছরে আমার জীবন সাজাবো। আমি কিন্তু এই প্ল্যানে আগাচ্ছি। হয়তো আমার ত্রুটি থাকতে পারে, হয়তো আমার প্ল্যানিংয়ে ভুল থাকতে পারে কিন্তু আমি একটি গোল হাতে নিয়েছি।

একুশে টেলিভিশন: যখন আপনার প্ল্যানিং অনুযায়ী কাজটা হয় না তখন আপনি কী করেন?

ডা. আশিষ কুমার চক্রবর্তী: প্রথমেই আমি একটু বিমর্ষ হই। তারপরও লক্ষ্য স্থির করতে হয়। যার যা সামর্থ্য সে অনুযায়ী আগাতে হবে। এই জায়গায় অন্য একটি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, আমাদের যারা ফান্ডিং করবে ব্যাংকসগুলো তা রাষ্ট্রায়ত্ত হোক বা বেসরকারি ব্যাংকই হোক। এখানে অন্ড্রাপ্রায়ানশীপে আরও উদার হতে হবে। আমাদেরকে সহজ লোন দিতে হবে। মাস শেষে আমি যদি টাকা দিতে না পারি তাহলে একটা কাগজ ধরিয়ে দিবে, তাহলে অন্ড্রাপ্রায়ানশীপ হবে না আসলে। স্পেশাললি হেলথ কেয়ারে কোনভাবেই সম্ভব নয়।

একুশে টেলিভিশন: এতে সেক্টরে কী ধরনের বাধা-বিপত্তি থাকে এবং কিভাবে এগুলো অতিক্রম করা যায় এ সম্পর্কে আপনি যদি কিছু টিপস বা সাজেশন দিতেন?

ডা. আশিষ কুমার চক্রবর্তী: তীব্র প্রতিযোগিতা শেষ করে মেডিকেল কলেজগুলোতে কিন্তু মেধাবি ছাত্রছাত্রীরাই চান্স পায়। এখন সরকারি এবং বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে কৃতকার্য হওয়ার প্রক্রিয়া প্রায় একই রকম। একই প্রশ্নে একই দিনে পরীক্ষা হচ্ছে, নাম্বারের সিরিয়ালে যে কম পাচ্ছে সে হয়তো বেসরকারি শেষ মেডিকেল কলেজটিতে চান্স পাচ্ছে। আর যে সবচেয়ে বেশি ভাল করছে সে ঢাকা মেডিক্যালে ফার্স্ট হচ্ছে। প্রায় লাখ খানিক ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দেয়, এর মধ্যে থেকে ১০ হাজারকে সিলেক্ট করা হয়। পরীক্ষার যে পদ্ধতিগুলো, আমাদের যে পড়াশোনা কঠিন কঠিন বইগুলো বিশেষ করে প্রিক্লিনিক্যালের বেসিক সাবজেক্টগুলো পড়ে কোন আরাম পাওয়ার বিষয় নয়। পড়া খুবই দুর্বোধ্য। মিডেল ক্যাটাগরির স্টুডেন্টদের জন্য খুবই সমস্যা। 

এটাতে নিজেকে ফোকাস করাটা কষ্টের। অনেক ছেলেমেয়ে থাকে মাম্মি-ডার্ডির, মা-বাবার খুব আদরের তারা গিয়ে যখন ফর্মালিনযুক্ত ডিসেকশন হলে গিয়ে ঢুকে তখন কান্নাকাটি চোখের পানি ফেলতে ফেলতেই জান শেষ। ডেডবডি দেখলে মেনে নিতে পারে না। দ্বিতীয়ত মেডিকেলের আরেকটি আতঙ্ক হচ্ছে আপনাকে রেগুলার ক্লাস করতে হবে। এখানে ফাঁকিবাজির কোনও সুযোগ নেই। মেডিকেল কলেজে মেধার খুব একটা ভ্যালু নাই, যে পড়বে সেই মেধাবি। এখানে বানিয়ে কথা বলার সুযোগ নেই। 

তারপর হচ্ছে প্রতি সপ্তাহে আইটেম পরীক্ষা হয়, এই আইটেম পরীক্ষায় দেখা যায় কোন ছেলে বা মেয়ে ফেল করলো। ফেইল হচ্ছে মেডিকেলের ভেরি কমন ফেনামেন্ডাল। যে ছেলে বা মেয়েটা জীবনে কোন ফেল করেনাই সে যখন শুনলো ফেল করেছে তখন সে মুষরে যায়। মন খারাপ করে বাসায় চলে যায়। আবার কেউ কেউ ওষুধ খেয়ে ফেলে। যারা জুনিয়র স্টুডেন্ট, যারা গোয়িং টু মেডিকেল এডমিশন তাদের উদ্দেশ্যে একটা কথাই বলবো যে, তোমাদের সিনিয়রদের কাছ থেকে মেডিকেল সম্পর্কে একটু জেনে নাও। তখন যদি মনে কর এটাতে তুমি এডজাস্ট করতে পারবে, তাহলেই তুমি মেডিকেলে যাও। তা না হলে দরকার নেই। এটা এমন একটা বন্ধুর পথ, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বলা যাবে না এটা স্মুথ। 

একুশে টেলিভিশন: তাহলে এখানে কী ট্যালেন্ট থেকেও বেশি ইমপর্টেন্ড ওয়ার্ক অ্যাথিক?

ডা. আশিষ কুমার চক্রবর্তী: অ্যাকজাকলি। এটা হচ্ছে গুরুমুখি বিদ্যা, মিউজিকের মতো। গুরুর পেছনে পেছনে হাত ধরে আপনাকে ডাক্তার হতে হবে।

একুশে টেলিভিশন : অন্ড্রাপ্রয়ানদের নিয়ে আপনার ভ্যাডভাইস কী হবে?

ডা. আশিষ কুমার চক্রবর্তী: অন্ড্রোপ্রয়ানশীপে অনেক বাধা আসবে। আমাদের দেশের জন্য এটা খুব স্মুথ না। আপনাকে প্রথম লক্ষ্য স্থির করতে হবে, আপনি কি ধরনের অন্ড্রোপ্রয়ানশীপ হতে চান। আপনি স্মল, মিডিয়াম নাকি লার্জ হতে চান। সেক্ষেত্রে শুরুতেই আপনার কাঠামো তৈরি করতে হবে। আপনার ম্যান পাওয়ার কি হবে, আপনার কাজের পরিধি কি হবে, ওয়ার্কপ্ল্যান তৈরি করতে হবে। আপনাকে মোটকথা একটা সিস্টেম তৈরি করতে হবে। ব্যক্তিনির্ভর প্রতিষ্ঠান বেশি দূর আগায় না। বাংলাদেশে বড় বড় প্রতিষ্ঠান শেষ হয়ে গেছে বা শেষ হয়ে যাচ্ছে কারণ ওয়ানম্যান শো, অথবা তাদের কোন পলিসি ছিল না, অথবা তাদের কোন ড্রিম নাই, অথবা তাদের কোন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নাই। 

সুতরাং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অত্যন্ত জরুরি। তবে মিস ইয়ুজ করা যাবে না, কোন যেন ব্যাড ইনভেস্ট না হয়। কেননা আপনি হাসপাতাল শুরু করলেন কিন্তু কথাবার্তা নেই আপনি একটি সিটিস্ক্যান বসালেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আপনার টার্গেট গ্রুপ কারা? দেখা গেল ওই হাসপাতালে সব গাইনি প্যাসেন্ড আসে, তাদের জন্য কিন্তু সিটিস্ক্যান মেশিন জরুরি না। তার জন্য প্রয়োজন হচ্ছে একটা ভালো আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন, টিভিএস থাকতে হবে। একটা স্কিলড হ্যান্ড থাকতে হবে। এটাই তার জন্য পারফেক্ট। এতটুকু করলেই সে সাকসেসফুল হতে পারে। 

মোটকথা, হেলথ কেয়ার এবং মেডিকেল সার্ভিসেস একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। এখনও এখানে স্কপ হচ্ছে আনলিমিটেড, তবে যারা ডাক্তার হতে চান তাদেরকে ফোকাসড হতে হবে। আপনার অধ্যাবশয় থাকতে হবে, ডিসিপ্লিন হতে হবে এবং মেনে নিতে হবে আপনার এই জার্নিটা কখনই সহজ হবে না। আর যারা মেডিকেল অন্ড্রাপ্রয়ান হতে চায়, তাদের লং টার্ম প্ল্যান থাকতে হবে, ভিশন থাকতে হবে, খুবই ফোকাস ওয়েতে এগুতে হবে। ছোট ছোট সাকসেস হবার পরই বড় প্রজেক্টের স্বপ্ন তারা দেখতে পারেন। 

এএইচ/এমবি