ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

পাখির বাসা বাঁচাতে গিয়ে ৩৫ দিন অন্ধকারে গোটা গ্রাম

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:৫৭ পিএম, ২৫ জুলাই ২০২০ শনিবার

মানুষের মনুষ্যত্ব এখন লোপ পেয়েছে বলে আমার জানি। আমরা আমাদের চারপাশে শুধু ভাঙার খেলা দেখতে পাই। এই অসময়ে গড়ে কজন! আমরা অনেকেই আক্ষেপ করে বলি, এখন আর মানবিকতা নেই। আফসোস করি চারপাশের অনেক ঘটনা দেখে। কিন্তু এমন কিছু ঘটনা চারপাশে ঘটে যায় যে তার পরই আবার মানুষ ও মানবিকতার উপর আমাদের বিশ্বাস ফিরে আসে। এই ঘটনাও সেরকমই। 

গ্রামের কমিউনিটি সুইচবোর্ড-এর ভিতর বাসা বেঁধেছিল একটি পাখি। সেই বাসায় আবার ডিম পেড়েছিল পাখিটি। একজন গ্রামবাসী সবার প্রথমে সেটি দেখতে পান। তিনি ছবি তুলে সেটি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে পাঠান। তার পরই গোটা গ্রাম অন্ধকার। এক-দুদিন নয়। টানা ৩৫ দিন গ্রামবাসীরা অন্ধকারে থাকলেন।

তামিলনাড়ুর শিবগঙ্গা জেলার একটি গ্রামের ঘটনা। আসলে গ্রামবাসীরা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, পাখির ডিম থেকে ছানা ফুটে বের না হওয়া পর্যন্ত ওই গ্রামে আলো জ্বালানো হবে না। বুলবুলি পাখিটির বাসা ও ডিম বাঁচানোর জন্য টানা ৩৫ দিন গ্রামবাসীরা রাস্তার আলো জ্বালাননি। এই ভরা বর্ষায় গোটা গ্রামের লোকজন অন্ধকার রাস্তা দিয়েই চলাচল করেছেন। 

কারুপ্পুরাজা নামের এক কলেজ পড়ুয়া যুবক জানিয়েছেন, গ্রামে মোট ৩৫টি স্ট্রিটলাইট রয়েছে। কিন্তু তাঁরা গত ৩৫দিন একটিও জ্বালাননি। কারণ সব সুইচ ওই কমিউনিটি সুইচবোর্ডে। মোবাইলের টর্চ, টর্চ লাইট ব্যবহার করেই গ্রামবাসীরা এই কদিন রাস্তায় যাতায়াত করেছেন।

গ্রামে মোট একশো পরিবার রয়েছে। সবাইকে বিষয়টি বোঝানো কঠিন হয়েছিল। কারণ সবার মানবিকতা বোধ সমান নয়। কেউ কেউ সামান্য পাখির বাসার জন্য এতদিন অন্ধকারে চলাচল করতে প্রথমে রাজি হচ্ছিলেন না। কিন্তু গ্রামের যুবক-যুবতীরা তাঁদের অনুরোধ করেন। মূর্তি ও কার্তি নামের দুই ভাইয়ের ওপর ছিল পাখিদের আচরণে লক্ষ্য রাখার দায়িত্ব। তাঁরা রোজ মা পাখি উড়ে গেলে একবার করে দেখে আসতেন ডিমগুলি কী অবস্থায় রয়েছে! এর পর একদিন ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। তার পর সেই বাচ্চাগুলো বড় হতে থাকে। গ্রামবাসীরা অপেক্ষা করতে থাকেন। গ্রামবাসীদের কেউ কেউ পাখির বাসা পরিষ্কারও করে দিতেন।

এসি