ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

করোনা কালে কুরবানি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:২১ পিএম, ২৬ জুলাই ২০২০ রবিবার | আপডেট: ১২:২৩ পিএম, ২৬ জুলাই ২০২০ রবিবার

আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য অর্জন ও তার ইবাদতের জন্য পশু জবেহ করাই কুরবানি। ঈদুল আজহার দিন থেকে কুরবানির দিনগুলোতে নির্দিষ্ট প্রকারের গৃহপালিত পশু আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য জবেহ করাই হচ্ছে কুরবানি। ইসলামি শরিয়তে এটি ইবাদত হিসেবে সিদ্ধ। যা কুরআন, হাদিস ও মুসলিম উম্মাহর ঐক্যমত দ্বারা প্রমাণিত।

কুরআন মাজিদে এসেছে- ‘তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় কর ও কুরবানি কর।’ (সুরা কাউসার : আয়াত ২)

১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত যে প্রাপ্ত বয়স্ক সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন পুরুষ ও নারীর কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ৭ ভরি সোনা অথবা সাড়ে ৫২ তোলা রূপার মূল্য পরিমাণ সম্পদ থাকবে তার কুরবানি করা ওয়াজিব।

করোনা জীবনের বিভিন্ন বিভাগের মত ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় ব্যপক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। জিলহজ মাসের সাথে ইসলামের অন্যতম ইবাদত হজের পাশাপাশি কুরবানির বিষয়টিও জড়িত।

বর্তমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন শহর ও গ্রামের সর্বত্র সমান পরিস্থিতি নয়। শহরে যারা কুরবানীর ব্যবস্থা করতে সক্ষম নয়, তারা গ্রাম কিংবা সুবিধাজনক স্থানে কুরবানীর অর্থ পাঠিয়ে দিতে পারেন। কেবল কুরবানীর দিনগুলো শেষ হয়ে যাওয়ার পরও কেউ কুরবানী করতে ব্যর্থ হলে পশু ক্রয়ের জন্য বরাদ্ধকৃত অর্থ দরিদ্র আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, অসহায় প্রতিবেশীদের মাঝে বন্টন করতে পারবেন।

দেশের নিম্ম ও মধ্যবিত্তের আর্থিক সংগতির সুরক্ষা দিতে প্রয়োজনে পূর্বের বছরগুলোর অনুরূপ পরিমাণ কুরবানির বাজেট রেখে তার কিছু অংশ দিয়ে কুরবানি ও বাকী অংশ সাদাকাহ করতে পারে। ইসলামে কুরবানি একটি দরিদ্রবান্ধব ইবাদত। কুরবানির পশু বিক্রি করে দরিদ্ররা যেমন আর্থিক স্বচ্চলতা অর্জন করে, তেমনি গোশত থেকে শারীরিক পুষ্টি লাভ করে।

কুরবানি ধনী-গরীবের মাঝে অর্থ প্রবাহে আবর্তন সৃষ্টি করে। ধনীদের উচিত প্রান্তিক মানুষের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহণ করে ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ গঠনে এগিয়ে আসা। কুরবানির জন্য পশু ক্রয় সে প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের নামান্তর। স্মতব্য যে, কুরবানির কোনো বিকল্প নেই। তাই কুরবানি নিশ্চিত করে পাশাপাশি ব্যাপকহারে দান-সাদাকাহ করা এ সময়ের একান্ত দাবি।

করোনাকালীন পরিস্থিতিতে বিকল্প পদ্ধতি সমুহ অবলম্বন করে কুরবানীর বিধান বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

ভারতের বৃহত্তর ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দের পক্ষ থেকে জারিকৃত এক ফতোয়ায় বলা হয়েছে, এ বছর শুধু ওয়াজিব কুরবানি করা হবে, নফল কুরবানির অর্থ দান করতে হবে গরীবদের।

ফতোয়ায় আরও বলা হয়, শুধুমাত্র নেসাব সমপরিমাণ সম্পদ থাকলেই কুরবানি ওয়াজিব হবে। ছদকা, দান-খয়রাত কুরবানির পরিপূরক হয় না। ফতোয়ায় আরো বলা হয়, কুরবানি ওয়াজিব হওয়ার পরও যদি কোনো ব্যক্তি কুরবানি না দেয় তাহলে একটি প্রাণী অথবা তার অর্থ ছদকা করতে হবে। দারুল উলুম দেওবন্দ জোর দিয়ে বলেছে, এই বছর করোনাভাইরাসের কারণে শুধু ওয়াজিব কুরবানি করা হবে এবং নফল কুরবানির অর্থ গরীবদের দান করা হবে।

ফতোয়াতে আরও বলা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার কারণে অনেকে সমস্যায় পড়েছেন, অনেকে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। অতএব এবছর শুধু ওয়াজিব কুরবানি করাই উত্তম এবং যারা অন্যান্য বছর নফল কুরবানি করতো, তাদের উচিৎ হবে গবীরদের প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে দেওয়া।

কুরবানির ফযিলত সংক্রান্ত প্রচলিত কিছু জঈফ ও জাল হাদিস
নিঃসন্দেহে কুরআনের একাধিক আয়াত এবং বহু বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা সু প্রামাণিত যে, কুরবানি ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন, মর্যাদাপূর্ণ আল্লাহর ইবাদত এবং তাঁর নৈকট্য অর্জনের মাধ্যম। এটি ইবরাহীম আলাইহি সালাম এর সুন্নত যা আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে বাস্তবায়ন করেছেন, তাঁর উম্মতের জন্য শরিয়ত সম্মত করেছেন এবং যুগ-যুগান্তরে সাহাবি, তাবেঈ, তাবে তাবেঈ এভাবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম মুসলিমগণ আমল করেছেন।

তবে কুরবানির ফযিলতে বেশ কিছু হাদিস বক্তাদের মুখে শোনা যায় বা কুরবানি সংক্রান্ত বই-পুস্তকে পাওয়া যায়। কিন্তু এ সংক্রান্ত হাদিসগুলো একটিও সহিহ নয়।

নিম্নে শাইখ আখতারুল আমান বিন আব্দুস সালাম এর লেখা ‘কুরবানির মাসায়েল’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে কুরবানির ফযিলত সংক্রান্ত প্রচলিত কিছু জঈফ ও জাল হাদিস মুহাদ্দিসগণের পর্যালোচনা সহ তুলে ধরা হল :

হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী রহ. বলেন, ‘কুরবানি করার ফযিলতে অনেকগুলো হাদিস বর্ণিত হয়েছে। সেগুলোর একটিও বিশুদ্ধ সনদে প্রমাণিত হয়নি বরং তার সবগুলোই জঈফ (দুর্বল) অথবা মউযূ (জাল)।’ (ফাতহুল বারী)

মালিকী মাজহাবের বিশিষ্ট মুহাদ্দিস ইমাম ইবনুল আরবি রহ. বলেন, ‘কুরবানির ফযিলতে একটিও সহিহ হাদিস নেই। তবে মানুষ এ সম্পর্কে অনেক আজগুবি হাদিস বর্ণনা করেছে যা মোটেও সহিহ নয়। সে সব আজগুবি হাদিসের মধ্যে অন্যতম হল এই কথাটি : ‘উহা তোমাদের জান্নাতে যাওয়ার বাহন স্বরূপ।’ (তিরমিযীর ব্যাখ্যা গ্রন্থ আরেযাতুল আহওয়াযী ৬/২৮৮)

নিম্নে কুরবানির ফযিলত সংক্রান্ত হাদিসগুলো পর্যালোচনা সহ পরিবেশিত হল :
১ নং হাদিস :
আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, নবী বলেন, ‘কুরবানির দিনে কোন আদম সন্তান কুরবানির পশুর খুন ঝরানোর চেয়ে মহান আল্লাহর নিকট অধিক পছন্দনীয় আমল করে না। সে কিয়ামত দিবসে উক্ত পশুর শিং, খুর, লোম প্রভৃতি নিয়ে উপস্থিত হবে এবং তার খুন জমিনে পড়ার পূর্বেই আল্লাহর নির্ধারিত মর্যাদার স্থানে পতিত হয়। অতএব, তোমরা প্রফুল্ল চিত্তে কুরবানি কর।’ (ইবনে মাজাহ, হা/৩১২৬, তিরমিযী, হা/১৪৯৩, হাকেম৪ /২২১-২২২ দ্রঃ ফিকহুল উযহিয়্যাহঃ)

মন্তব্য : হাদিসটি  জঈফ। কারণ, হাদিসটি র সনদে কয়েকটি দোষ আছে। 
যেমন :
১.  উক্ত হাদিসের সনদে আব্দুল্লাহ বিন নাফে নামে একজন বর্ণনাকারী রয়েছে। তার স্মৃতি শক্তিতে দুর্বলতা ছিল।
২.  হাদিসটি র সনদে আবুল মুসান্না নামক আরেকজন রাবী (বর্ণনা কারী) রয়েছে তার আসল নাম হল সুলাইমান বিন ইয়াজিদ। তিনি অত্যন্ত দুর্বল ও বাজে। (দ্রঃ ফিকহুল উযহিয়্যা)
৩.  উক্ত হাদিসের প্রায় অনুরূপ হাদিস ইমাম আব্দুর বাযযাক তার মুসান্নাফ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। (হা/৮১৬৭) উক্ত হাদিসটি র সনদেও আবু সাঈদ শামী নামক একজন বর্ণনাকারী রয়েছে তিনি একজন ‘পরিত্যক্ত’ রাবি। (দ্রঃ প্রাগুক্ত)

২ নং হাদিস :
‘যায়েদ বিন আরকাম রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাহাবিগণ জিজ্ঞাসা করলেন: হে আল্লাহর রাসূল! এই কুরবানির পশুগুলির তাৎপর্য কি? (কেন আমরা এগুলো জবেহ করে থাকি?) তিনি বললেন : ‘ইহা তোমাদের পিতা ইবরাহীম (আঃ) এর সুন্নত।’ তাঁরা জিজ্ঞাসা করলেন, এতে আমাদের কী সওয়াব রয়েছে? তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘প্রত্যেকটি পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকী রয়েছে।’ তাঁরা জিজ্ঞাসা করলেন, পশমের মধ্যে যে ছোট ছোট লোম রয়েছে ওগুলোরও কি বিনিময় তাই? নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘ছোট ছোট প্রতিটি লোমের বিনিময়ে একটি করে নেকী রয়েছে।’ (ইবনে মাজাহ্, হা/৩১২৭, আহমদ (৪/৩৬৮), ইবনে হিব্বান ফিল মাজরুহীন (৩/৫৫))

মন্তব্য : হাদিসটি জঈফ। কারণ, এ হাদিসটি র সনদে আবু দাউদ আল আম্মী নামে একজন বর্ণনাকারী রয়েছে। তার প্রকৃত নাম হল, নুফাই ইবনুল হারিস। সে মুহাদ্দিসগণের নিকট ‘পরিত্যক্ত’ রাবি। এতে আরও একজন রাবি রয়েছে তার নাম হল আয়েযুল্লাহ, সে ‘জঈফ’ রাবি।

৩ নং হাদিস :
আবু সাঈদ খুদরী রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফাতেমা রা. কে বললেন, ‘(হে ফাতেমা!) তুমি তোমার কুরবানির পশুর নিকট (জবেহ কালীন) দাঁড়াও এবং উপস্থিত থাক। কারণ তার প্রথম ফোটা খুন (জমিনে) পড়ার সাথে সাথে তোমার অতীতের গুনাহগুলো মাফ করে দেয়া হবে।’

ফাতেমা রা. বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! এটা কি আমরা আহলুল বায়েত তথা নবী পরিবারের জন্যই খাস নাকি তা আমাদের জন্য এবং সাধারণভাবে সকল মুসলিমের জন্য প্রযোজ্য?  তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘আমাদের জন্য এবং সাধারণভাবে সকল মুসলিমের জন্য প্রযোজ্য।’ 

জিলহজ্জ মাসের গুরুত্ব

ইসলামে জিলহজ্জ মাসের যেমন গুরুত্ব রয়েছে ঠিক তেমনি এ মাসের আমলেরও গুরুত্ব রয়েছে। এর গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে মহান আল্লাহ্ সুবাহনতালা ইরশাদ করেন, ‘কসম ভোরবেলার। কসম ১০ রাতের।’ (সুরা ফাজর, আয়াত : ১-২) এখানে ১০ রাতকে জিলহজ্জ মাসের ১০ দিনকে বলা হয়েছে। 

হজরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, ‘সুনির্দিষ্ট দিনসমূহ’ দ্বারা জিলহজ্জের ১০ দিনের উদ্দেশ্য। অনুরূপ ভাবে ইমাম আবু হানিফা ও আহমাদ (রহঃ) সহ অধিকাংশ উলামায়ে কেরামের অভিমত, সুনির্দিষ্ট দিনসমূহ দ্বারা জিলহজ্জ মাসের ১০ দিনকেই বোঝানো হয়েছে। (তাফসিরে ইবনে কাসির ৩ : ২৮৯)

গুরুত্বপূর্ণ এ মাসে গুরুত্ব দিয়ে ইবাদত বন্দেগি বা আমল করার ব্যাপারে হাদিসে বহু নির্দেশনা আছে। ‘হজরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এ দিন গুলোর (জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিন) তুলনায় কোনো আমলই উত্তম নয়। একদিন সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) রাসুলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করেছিলেন, জিহাদও নয়? রাসুলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বলেছিলেন, জিহাদও নয়! তবে যে ব্যক্তি নিজের জানের শঙ্কা ও সম্পদ নিয়ে বের হয়েছে, অতঃপর কিছু নিয়েই ফিরে আসেনি সেটি ভিন্ন।’ (সহিহ বোখারি, হাদিস নম্বর : ৯১৮) 

হজরত ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ্ সুবাহনতালার কাছে এ দিনের (জিলহজ্জ মাসের প্রথম দশক) তুলনায় অন্য কোনো দিনের কোনো আমল অধিক প্রিয় নয়। সুতরাং তাতে তোমরা বেশি বেশি করে তাহলিল, তাকবির ও তাহমিদ পাঠ করো।’ (তাবারানি ফিল মুজামিল কাবির)

জিলহজ্জ মাসের প্রথম দশকে বিশ্বনবি রাসুল ই পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোজা রাখতে বলেছেন। হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী জানা যায়, ‘জিলহজ্জের প্রথম দশকের প্রত্যেক দিনের রোজা এক বছরের রোজার সমতুল্য।’

জিলহজ্জ মাসের ১ হতে ১০ তারিখ বেশি বেশি ইবাদত করা, আর প্রত্যেক রাতের ইবাদত লায়লাতুল কদরের ইবাদতের সমতুল্য। (সহিহ তিরমিযি) 

বিশেষ করে আরাফার দিন অর্থাৎ জিলহজ্জের ৯ তারিখ রোজা রাখা সুন্নত তার জন্য, যে হজরত নয়। 

হাদিস অনুযায়ী ‘হজরত কাতাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসুল ই পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আরাফার দিবসে রোজা পালনে, পেছনের এবং সামনের এক বছরের গোনাহ মোচন করে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নম্বর : ১৭৩০, ১৭৩১)

জিলহজ্জ মাসের করণীয় আমল হলো এ মাসের ৯ তারিখের ফজর থেকে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর অন্তত একবার তাকবিরে তাশরিক পাঠ করা ওয়াজিব।

তাশরিক : আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর ওয়ালিল্লাহিল হামদ। 

এ তাকবিরে তাশরিক নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের ওপর ওয়াজিব। পুরুষের জন্য আওয়াজ করে, আর নারীদের জন্য নীরবে। (সুনানে বায়হাকি কুবরা : ৬০৭১, ফাতওয়া শামি ৩ :৬১)

পবিত্র জিলহজ্জ মাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো সচ্ছল (ছাহেবে নিসাব) ব্যক্তি কোরবানি করা। ১০, ১১ ও ১২ জিলহজ্জের  মধ্যে নিসাব পরিমাণ মালের মালিক হলে কোরবানি করা ওয়াজিব। প্রত্যেক ছাহেবে নিসাব নারী-পুরুষের জন্য এ বিধান প্রযোজ্য। (ফাতাওয়া শামি ৯ : ৪৫৩, ৪৫৭, ফাতাওয়া আলমগীরি ৫ : ২৯২)

সকল কুরবানি দাতার জন্য জিলহজ্জের চাঁদ ওঠা থেকে কুরবানি করা পর্যন্ত চুল ও নখ না কাটা মুস্তাহাব। 

হজরত উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যারা কোরবানি করবে, তারা যেন এই ১০ দিন চুল ও নখ না কাটে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নম্বর : ৩১৫০)
এসএ/