ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

বঙ্গবন্ধুর ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতিই বাংলাদেশের উন্নয়নের চালিকাশক্তি

ড. এ কে আব্দুল মোমেন

প্রকাশিত : ০৯:১৯ এএম, ১৩ আগস্ট ২০২০ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৯:২০ এএম, ১৩ আগস্ট ২০২০ বৃহস্পতিবার

সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয় :দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধু যুদ্ধের ভয়াবহতা ও নির্মমতা প্রত্যক্ষভাবে উপলব্ধি করেন। আর পাকিস্তান আমলে বাংলাদেশের প্রতি জুলুম-নির্যাতন প্রতিরোধের আন্দোলনে তিনি তো সম্মুখযোদ্ধা। এমন অভিজ্ঞতা থেকে বঙ্গবন্ধু সব সময় শান্তিপূর্ণ আইনানুগ সমাধানের নীতি গ্রহণ করেন। তিনি চেয়েছিলেন, আন্তর্জাতিক রাজনীতির কোনো জোট নয়, বাংলাদেশ হবে শান্তিপূর্ণ দেশ, হবে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড। সবার সঙ্গে আন্তরিক হূদ্যতাপূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমে স্বাধীন জোটনিরপেক্ষ নীতি অনুসরণ, অন্য রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, সমতা, ভৌগোলিক অখণ্ডতা, অন্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি নিয়ে বঙ্গবন্ধু পররাষ্ট্রনীতি ঘোষণা করলেন।

ভারসাম্যের উত্কৃষ্ট উদাহরণ :১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের পক্ষে প্রত্যাশিত সহযোগিতা মেলেনি চীনের কাছ থেকে। তবে সময়ের পরিক্রমায় বাংলাদেশের অন্যতম বন্ধুপ্রতিম দেশ এখন চীন। এর অর্থ হচ্ছে দেশের স্বার্থে কূটনৈতিক পাড়ায় কোনো রাষ্ট্র চিরকালীন বন্ধু বা শত্রু নয়। এ যাবত্কালে বাংলাদেশের বড় উন্নয়ন সহযোগীদের তালিকাতেও জায়গা করে নিয়েছে চীন। আবার, মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করে ভারত। আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ প্রদান, শরণার্থীদের আশ্রয়দানসহ সম্মুখ সমরে ভারতের অনেক সৈন্যও প্রাণ হারায় অর্থাত্ নানাভাবেই ভারতের সহযোগিতা সবসময় মনে রাখবে বাংলাদেশ। এমনকি স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়েও পুনর্গঠনে ভারতের কাছ থেকে সবধরনের সহযোগিতা পেয়েছিল বাংলাদেশ। এদিকে ভারত ও চীনের বৈরী সম্পর্কের কথাও কারো অজানা নয়। তা সত্ত্বেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশ দুইটির সঙ্গে সমানতালে চমত্কার সম্পর্ক বজায় রেখে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। এটি সম্ভব হয়েছে দেশরত্ম শেখ হাসিনার ভারসাম্য ও বন্ধুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতির জন্যই।

সব সময়ের বন্ধু ভারত :মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের প্রতি বরাবরই শ্রদ্ধাশীল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তবে তার পরিকল্পনা ছিল সমৃদ্ধ ও আত্মমর্যাদাশীল বাংলাদেশ বিনির্মাণ। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি লন্ডন থেকে দিল্লিতে ফিরে বঙ্গবন্ধু কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন ভারতের শক্তিশালী অবদানের কথা। বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের ভ্রাতৃত্ববন্ধন চিরকাল অটুট থাকবে।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর নীতির মিল প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটা হচ্ছে আদর্শ, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধের মিল।’

ভারত সফরের পরই বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ২ থেকে ৬ মার্চ সোভিয়েত ইউনিয়ন সফর করেন। বিমানে ওঠার আগে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ আর জনগণের জন্য বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের শুভেচ্ছা নিয়ে যাচ্ছি।’ সেই সময়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই সফরের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা বাংলাদেশের উদীয়মান পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে অপরিসীম প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। অত্যন্ত সফল এই সফরকে ‘বঙ্গবন্ধুর শুভেচ্ছা সফর’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে ঐতিহাসিক রাজকীয় সম্মাননা প্রদান করা হয়। বঙ্গবন্ধুর এই সফরের সুদূরপ্রসারী প্রভাব ছিল। ১৯৭৩ সালের দুর্ভিক্ষের সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের নিজের জন্য সংগ্রহ করা খাদ্যসামগ্রী থেকে বাংলাদেশকে ২ লাখ টন খাদ্যসামগ্রী সহযোগিতা প্রদান করে। ১৯৭৩ সালের জুনে কয়েকটি মিগ-২১ জঙ্গি বিমান, পরিবহন বিমান ও হেলিকপ্টার পাওয়া যায় দেশটির কাছ থেকে। রাষ্ট্রীয়, নৈতিক ও পররাষ্ট্রনীতির দিক থেকে সব সময়ই বাংলাদেশের পাশে পাওয়া গেছে সোভিয়েত ইউনিয়নকে।

স্বাধীন হবার পরও বাংলাদেশের প্রতি চীনের বিদ্বেষী নীতি কার্যকর থাকে। ১৯৭২ সালের ৮ আগস্ট জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভের জন্য আবেদন করে বাংলাদেশ; কিন্তু চীনের বিরোধিতায় ১০ আগস্ট তা নাকচ হয়ে যায়। এনিয়ে ক্ষোভও ঝরে পড়ে বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক অধিবেশনে ১৯৭৪ সালের ১৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ভাষণে বলেন, ‘...যখন চীনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে ভেটো দেওয়া হতো তখন এই বাংলার মানুষই বিক্ষোভ করত। আমি নিজে ঐ ভেটোর বিরুদ্ধে বহুবার কথা বলেছি। যে ভেটোর জন্য চীন ২৫ বত্সর জাতিসংঘে যেতে পারে নাই, দুঃখের বিষয়, সেই চীন ভেটো ‘পাওয়ার’ পেয়ে প্রথম ভেটো দিল আমার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। তবুও আমি কামনা করি তাদের বন্ধুত্ব। অনেক বড় দেশ। দুশমনি করতে চাই না। বন্ধুত্ব কামনা করি। কারণ আমি সবার বন্ধুত্ব চাই; কিন্তু জানি না, আমার এই কামনায়, আমার এই প্রার্থনায় তারা সাড়া দিবেন কি না। যদি না দেন কিছু এসে যায় না। ভুলে গেলে চলবে না যে, আমরা এত ছোট দেশ নই। বাংলাদেশ এতটুকু নয়। পপুলেশনের ভিত্তিতে বাংলাদেশ দুনিয়ার অষ্টম বৃহত্তম রাষ্ট্র।’

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমেরিকার ভূমিকা আমাদের স্বপক্ষে ছিল না। যদিও সে দেশের বহু হূদয়প্রাণ ব্যক্তিত্ব অনেক আইনপ্রণেতা ও বুদ্ধিজীবী বাংলাদেশের যুদ্ধের পক্ষে জনমত সংগ্রহ করেছেন, যুদ্ধগ্রস্ত দেশের মানুষের জন্য ফান্ড সংগ্রহ করেছেন। আমেরিকান কবি এলেন গিন্সবার্গ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষেই তো লিখে ফিললেন বিখ্যাত ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’ কবিতাটি। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু সেই মার্কিন মুল্লুকের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে জোর দিলেন। স্বাধীনতার দুই-তিন বছর পর্যন্ত আমেরিকার মন গলাতে বেগ পোহাতে হয় বাংলাদেশকে। ১৯৭৪ সালের সেপ্টেম্বরে আমেরিকা সফরে যান বঙ্গবন্ধু, প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড আর ফোর্ডের সঙ্গে ১ অক্টোবর হোয়াইট হাউজে মিটিং করেন।

স্বাধীনতা লাভের মাত্র তিন বছরের মাথায় বাংলাদেশ ১২৬টা দেশের স্বীকৃতি অর্জন করে। এত অল্প সময়ে এতগুলো দেশের স্বীকৃতি পাওয়া মোটেও চাট্টিখানি কথা নয়। ১৯৭৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ৩২তম দেশ হিসেবে ইসলামি সম্মেলন সংস্থা-ওআইসির সদস্যপদ লাভ করার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি পরিণত মর্যাদা লাভ করে। এই সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক অংশগ্রহণ করে। এটি ছিল ওআইসির দ্বিতীয় সম্মেলন। এই সম্মেলনটি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির জন্য উল্লেখযোগ্য একটি ঘটনা। কেননা, বঙ্গবন্ধু দৃঢ়ভাবে ঘোষণা দেন যে, পাকিস্তান আগে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি না দিলে বাংলাদেশ এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবে না। এর ফলে প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর ওপর ওআইসিভুক্ত দেশগুলো থেকে প্রচণ্ড চাপ পড়ে। পাকিস্তান রাজি হলেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় ১৯৫ জন পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দির বিচার প্রক্রিয়া এবং কয়েক হাজার পাকিস্তানে আটকে পড়া বাংলাদেশি নাগরিকদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন। পরে সোমালিয়ার মধ্যস্থতায় বিষয়টির সমাধান হয়।

১৯৭৩ সালের ৫ থেকে ৯ সেপ্টেম্বর আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্সে অনুষ্ঠিত হয় জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের (ন্যাম) শীর্ষ সম্মেলন। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এই সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অংশগ্রহণ করেন।

সম্মেলনের ফাঁকে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী বিশ্বনেতার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন বঙ্গবন্ধু। পরদিন ৯ সেপ্টেম্বর বিদায়ী ভাষণেও বঙ্গবন্ধু বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা ও পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘একটি সমৃদ্ধ বিশ্বের জন্য আমাদের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের ওপর জোর দিতে হবে।’

সম্মেলনের ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের সদস্যপদ দিতে জোটনিরপেক্ষ দেশগুলোর জোর সমর্থনের কথা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পরিচালিত কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এই সমর্থন আদায়ের পথে মূল চালিকাশক্তি ছিল।

এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার উল্লেখ করতে চাই। ২০১৪ সালে ন্যামের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক সম্মেলনে আমি অংশগ্রহণ করি। আমি অভিভূত হই, সেখানকার সেই অডিটোরিয়ামের পাশের দেওয়ালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ন্যাম সম্মেলনে উপস্থিতির ওপর বড়োসড়ো সাইজের ছবিসহ বক্তব্য স্থাপন করা হয়েছে। কিউবার প্রতিনিধি (যিনি ১৯৭৩ সালের সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন) বললেন, আমি যে চেয়ারে বসে কথা বলছি, সেখানে বসেই বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে ন্যাম সম্মেলনে ভাষণ দিয়েছিলেন। আলজেরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, বহু রাষ্ট্রনায়ক এই সম্মেলনে যোগদান করেছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু এতই বড় মাপের নেতা ছিলেন যে, তার স্মৃতি ধারণ করে আমরা এই দেওয়ালে তার প্রতিকৃতি তুলে ধরেছি। দুই দিন পর আমাদের তত্কালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী এই সম্মেলন কক্ষে এলে তাকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি সম্বলিত এই দেওয়াল আমি দেখাই এবং গর্ববোধ করি।

জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধু :১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ জাতিসংঘের ১৩৬তম স্বাধীন দেশ হিসেবে সদস্য পদ লাভ করে পরিচিতি পায় বিশ্ব জুড়ে। ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ২৯তম অধিবেশনে প্রথমবারের মতো বক্তৃতা করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই ভাষণটি ছিল সমগ্র বিশ্বের অধিকারহারা শোষিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার ভাষণ।

শেষ হইয়াও যা হইল না শেষ। জানুয়ারি ১৯৭২ থেকে জুলাই ১৯৭৫, মাত্র সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধবিধ্বস্ত সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে ৫০টির মতো রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানের সফরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক সফর অনুষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধু সরকারের সফল কূটনৈতিক তত্পরতায়। ঐ স্বল্প সময়ে বাংলাদেশ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতার নানা বিষয়ে ৭০টির বেশি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে। অনেক দেশ ও সংস্থা যেমন-সোভিয়েত ইউনিয়ন, সুইডেন, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, পোল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ডেনমার্ক, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বুলগেরিয়া, বেলজিয়াম, আলজেরিয়া, নেদারল্যান্ডস, জাতিসংঘ, ইউনিসেফ, ডব্লিউএফপি, আইডিএ, ইউএনএইচসিআর প্রভৃতি বাংলাদেশকে কোটি কোটি ডলারের বিভিন্ন ধরনের ঋণ, সাহায্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রদান করে এবং স্বীকৃতি প্রদান করে আরো বিভিন্নমুখী সহযোগিতার। এ সময় বাংলাদেশ এডিবি, আইসিএও, ইকাফ এবং ফাওয়ের সদস্য পদ লাভ করে। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব রক্ষার যে মিশন নিয়ে তিনি যাত্রা শুরু করেছিলেন, কয়েক বছরের মধ্যেই তার শতভাগ সুফল ভোগ করতে থাকে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকতেই সৌদি আরব, সুদান, ওমান ও চীন ছাড়া বিশ্বের প্রায় সব রাষ্ট্রই বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে, দূরদর্শিতা ও বিশ্বনেতাদের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিল এসব অর্জনে। ১৯৭৫ সালের ২৬ মার্চ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রদত্ত এক ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমি দুনিয়ার প্রত্যেক রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাই, কারো সঙ্গে দুশমনি করতে চাই না। সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে আমরা শান্তি চাই।’

লেখক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

এমবি//