ঢাকা, রবিবার   ১২ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২৯ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করায় জেলে যান তারা (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:৫০ পিএম, ১৪ আগস্ট ২০২০ শুক্রবার | আপডেট: ০২:১৫ পিএম, ১৪ আগস্ট ২০২০ শুক্রবার

৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করায় কারাভোগ করেছিলেন নাটোরের গুরুদাসপুরের তিন তরুণ। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করে এলাকায় লিফলেট বিতরণকালে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। প্রায় দুই বছরের ডিটেনশন ও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করে ২৯ মাস পর বন্দি-দশা থেকে মুক্তি পান এই তিন বন্ধু।
 
নাটোরের গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড় বাজার এলাকার বাসিন্দা তিন বন্ধু প্রবীর কুমার বর্মন, নির্মল কর্মকার ও অশোক কুমার পাল। সে সময়ে তারা ছিলেন কলেজ পড়ুয়া টগবগে যুবক, সক্রিয় ছাত্রলীগ কর্মী। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করা হলে তারা প্রতিবাদ করার সিদ্ধান্ত নেন। হাতে লেখা পোষ্টারে প্রতিবাদের শুরু। এরপর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার দাবি করে লিফলেট বিতরণ করেন।

সেই অপরাধে পুলিশ গ্রেফতার করে তাদের। বিনা বিচারে বন্দি ছিলেন দুই বছর। পরে বিচারে ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২শ’ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। নাটোর উপ-কারাগার ও রাজশাহী কেন্দ্রিয় কারাগারে ২৯ মাস কারাভোগ করেন তারা। রাজশাহী কারাগারে তারা নির্যাতনের শিকার হন।  
তিন বন্ধুর জীবন এখন সংসারের ভারে নূব্জ। সন্তানদের খরচ জোগানোও কষ্টসাধ্য বিষয়। 

নাটোরে জাতির পিতা হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকারী প্রবীর কুমার বলেন, আমরা তিন বন্ধু যুক্ত হয়ে পরামর্শ করি, কোন প্রতিবাদ নাই কেন? তখন আমরা নিজেরাই হাতে লিখে পোস্টারিং চারিদিকে ওয়ালে লাগাই। ইতিমধ্যে পুলিশ কিভাবে যেন খবর পায়। পরে আমরা তিন বন্ধুই অ্যারেস্ট হই।

বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী অশোক কুমার পাল বলেন, নাটোর জেলায় তখন সাব-জেল ছিল। নাটোর জেলে আমাদের যথেষ্টভাবে অত্যাচার ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়। তারপর ওখান থেকে আমাদের রাজশাহী সেন্ট্রাল জেলে পাঠানো হয়। প্রতিবাদকারী নির্মল কর্মকার বলেন, ২৯ মাস থাকার পর রাজশাহী জেল থেকে আমরা মুক্তি পাই। 
অশোক কুমার পালের মা বলেন, জেল পর্যন্ত খাটছে, কেউ কোনও দিন খোঁজই করেনি।

তিন সংগ্রামীকে সম্মান জানানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে জানালেন গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তমাল হোসেন। এই কর্মকর্তা জানান, তাদেরকে যেভাবে সহযোগিতা করা যায় উপজেলা পরিষদ থেকে এবং সরকারের অনেক প্রভাপরও রয়েছে সেই সবের মাধ্যমে তাদেরকে ফুল সাপোর্ট দেওয়ার চেষ্টা করবো।
বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ দিবসে প্রতিবছর উপবাস ব্রত পালন করেন নাটোরের এই তিন প্রতিবাদী।

এএইচ/এমবি