ঢাকা, সোমবার   ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ২৫ ১৪৩১

জার্মানিতে চাকুরি পাওয়া বাংলাদেশের চেয়েও সহজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:২৮ পিএম, ২১ আগস্ট ২০২০ শুক্রবার | আপডেট: ০৭:৩২ পিএম, ২১ আগস্ট ২০২০ শুক্রবার

বাংলাদেশি কম্পিউটার প্রকৌশলী রাফিউল সাব্বির। ফুটবল বিষয়ক বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় মাল্টিমিডিয়া প্লাটফর্ম ‘ওয়ান ফুটবল’ ডেটা প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করেন তিনি। বেশ কয়েকটি ভাষায় সংবাদ প্রকাশ করে ওয়ান ফুটবল।

প্রতিষ্ঠানটির বিশেষত্ব সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘প্রথমত আমরা নিজেরা নিউজ তৈরি করি। আমাদের নিজস্ব নিউজ রুম আছে। আমরা ৬টি ভাষায় নিউজ তৈরি করি। দ্বিতীয়ত তরুণ প্রজন্ম যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে সক্রিয় যেমন ফেইসবুক, ইউটিউব, ইনস্ট্রাগ্রাম। সেই সবগুলোতে আমাদের খুব শক্ত উপস্থিতি আছে। আমরা যখন কনটেন্ট তৈরি করি তখন মাথায় থাকে যে, আমার ঐসব প্লাটফর্মে এমন কনটেন্ট দিব যেন আমাদের যে নির্ধারিত পাঠক/গ্রাহক, তরুণ প্রজন্ম তারা যেন সেই কনটেন্টগুলোতে আগ্রহী হয়। কনটেন্টগুলো পড়ে এবং তারা বার বার আমাদের অ্যাপে ফিরে আসে।’

ওয়ান ফুটবলের বার্লিন কার্যালয়ে কর্মরত কয়েকশত কর্মীর মধ্যে এক মাত্র বাংলাদেশী রাফিউল সাব্বির। দেশে স্নাতক শেষে কিছু দিন চাকরি করে উচ্চ শিক্ষার জন্য ইউরোপে পাড়ি জমান তিনি। সুইডেনে স্নাতকোত্তর শেষ করে চাকরি নিয়ে জার্মানিতে আসেন। শুরুতে মিউনিখে কাটান কয়েক মাস এরপর বার্লিনে ওয়ান ফুটবলে যোগ দেন। জার্মানিতে তথ্য প্রযুক্তি খাতে পর্যাপ্ত চাকরি সুযোগ রয়েছে বলে জানান এ প্রকৌশলী। এমনকি জার্মান ভাষা না জানাও বড় ধরণের কোন বাধা নয়। 

তিনি বলেন, ‘জার্মানিতে প্রযুক্তি খাতে জবের কোন অভাব নাই বরং মানুষের অভাব আছে। আপনার যদি পর্যাপ্ত যোগ্যতা থাকে, প্রযুক্তি খাতে যে চাকরি করতে চান সেই বিষয়ে যদি কিছু অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে আমার কাছে মানে হয় এখানে চাকরি পাওয়া আমাদের দেশের থেকেও সহজ। আপনাকে যা করতে হবে তাহলো আপনি যে কাজের চাকরি চাচ্ছেন সে কাজে আপনাকে দক্ষতা বাড়াতে হবে। এবং আপনাকে খুব ভালোভাবে সেটাকে উপস্থাপন করতে হবে যে, আপনার দক্ষতা আছে। আপনার জীবনবৃত্তান্ত এবং মোটিভেশন লেটার খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।’ 

ওয়ান ফুটবলে প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করলেও লেখালেখির প্রতি আগ্রহ রয়েছে সাব্বিরের। বাংলা ভাষায় খেলাধুলা বিষয়ক একটি ওয়েব পোর্টাল চালু করেছেন তিনি। চাকরির পাশাপাশি অবসর সময়ে পোর্টালটি পরিচালনা করেন সাব্বির। ওয়ান ফুটবলের কোন বাংলা সংষ্করণ নেই। ফলে প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করতে গিয়ে অর্জিত অভিজ্ঞতা বাংলায় প্রকাশের সুযোগ রয়েছে তার। 

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে আমি যে, যেহেতু একটা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছি ফলে খেলাধুলার বিষয়গুলোকে আমি খুব কাছ থেকে দেখছি। এই বিষয়গুলোতে আমাদের সীমাব্ধতা আছে। এই বিষয়গুলো আমি আমার মাধ্যমে বাংলাদেশিদের দিতে চাই। বাংলাদেশি পাঠকদের দিতে চাই এবং এই কারণেই মূলত এ নিউজ পোর্টালটা আমাদের খোলা।’

উল্লেখ্য, জার্মানিতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশিদের আগমন বেড়েছে। তাদের একটি বড় অংশ শরণার্থী হলেও উচ্চশিক্ষা শেষে চাকরি নিয়ে ইউরোপের দেশটিতে আসা বাংলাদেশিদের সংখ্যাও বাড়ছে। জার্মান সরকার অভিবাসন আইনে কিছু পরিবর্তন আনার ঘোষণা দিয়েছে। যা শিক্ষিত এবং দক্ষ বিদেশি চাকরি প্রত্যাশীদের দেশটিতে চাকরি পাওয়ার পথ প্রশস্ত করবে। 

স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য জার্মানির রাজধানী বার্লিনকে একটি চমৎকার শহর মনে করেন সাব্বির। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দেখা গেল যে, দুই জন জার্মান কথা বলছে জার্মান ভাষায় আমি সেখানে গেলাম, তারা সঙ্গে সঙ্গে ইংরেজি ভাষায় চলে গেছে। কারণ আমি যেন তাদের কথা বুঝতে পারি, আমি যেন অসস্তিতে না পড়ি। এগুলোর মুখোমুখি হয়েছি। এরা যথেষ্ট বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার করে। সূত্র: ডয়চে ভেলে 

এমএস/এসি