ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

নাটকীয় ফাইনালে শিরোপা জিতলো সেভিয়া

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৫১ পিএম, ২২ আগস্ট ২০২০ শনিবার | আপডেট: ০৪:৩২ পিএম, ২৩ আগস্ট ২০২০ রবিবার

চ্যাম্পিয়ন সেভিয়ার জয় উদযাপন

চ্যাম্পিয়ন সেভিয়ার জয় উদযাপন

উত্তেজনাপূর্ণ ফাইনালে ইতালির ক্লাব ইন্টার মিলানকে ৩-২ গোলে পরাজিত করে ষষ্ঠবারের মতো ইউরোপা লিগের শিরোপা ঘরে তুলেছে স্প্যানিশ ক্লাব সেভিয়া। এর মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত স্পেন ও রিয়াল মাদ্রিদের ব্যর্থতা কাটিয়ে সফলতার মুখ দেখলেন কোচ জুলেন লোপেতেগুই।

২০১৮ বিশ্বকাপের ঠিক আগে রিয়াল মাদ্রিদের দায়িত্ব নেবার খেসারত হিসেবে স্পেন জাতীয় দলের চাকুরি হারাতে হয়েছিল লোপেতেগুইকে। চার মাস পর রিয়ালও ছেড়ে যেতে হয়। কিন্তু সেভিয়ায় প্রথম মেয়াদেই মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার সাবেক এই গোলরক্ষক নিজের নামের প্রতি সুবিচার করেছেন। লা লিগায় সেভিয়াকে চতুর্থ স্থান উপহার দেবার পর ইউরোপা লিগে জায়ান্ট ইন্টার মিলান, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও রোমাকে পিছনে ফেলে শিরোপা জয় করলেন।

ম্যাচের চার মিনিটের মধ্যেই দিয়েগো কার্লোসের বিপক্ষে পেনাল্টি আদায় করে নেন রোমেলু লুকাকু। এই ফাউলে কার্লোসকে হলুদ কার্ড দেখানো হয়। স্পট কিক থেকে অনেকটাই আত্মবিশ্বাসের সাথে লুকাকু মৌসুমের ৩৪তম গোল করে ইন্টারকে এগিয়ে দেন। ইন্টারের হয়ে প্রথম মৌসুমেই তিনি তার আদর্শ রোনাল্ডোর রেকর্ড স্পর্শ করলেন। এরপর নাভাসের ক্রস থেকে ১২ মিনিটেই সমতা ফেরান ডি জং। ৩৩ মিনিটে আর্জেন্টাইন এভার বানেগার ফ্রি-কিক থেকে সেভিয়াকে এগিয়ে দেন এই ডাচ তারকা।

ম্যাচ শেষে ডি জং বলেছেন, ‘আমি এই জয় সেভিয়ার ভক্তদের উৎস্বর্গ করলাম। গ্রুপ পর্ব থেকেই আমার মধ্যে একটি অনুভূতি কাজ করেছে এই শিরোপাটা আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানতাম এই শিরোপাটা জিততে পারলে তা শুধুমাত্র সেভিয়ার সমর্থকদের জন্যই সম্ভব হবে।’

সেভিয়ার এই লিড মাত্র দুই মিনিট স্থায়ী ছিল। মার্সেলো ব্রোজোভিচের সহায়তায় দিয়েগো গডিনের বুলেট হেডে ৩৫ মিনিটে সমতা ফেরায় ইন্টার। প্রথম ডিফেন্ডার হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ইউরোপা লিগের ফাইনালে প্রথম গোল করার কৃতিত্ব দেখালেন এই উরুগুইয়ান ডিফেন্ডার। যদিও ২০১৪ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে গোল করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন গডিন। দুই ফাইনালে তিনি পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেলেন।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই ইন্টার বেশ কয়েকটি সুযোগ হাতছাড়া করে। এতে করে কার্যত নয় বছরের শিরোপা খরার অপেক্ষা আরো দীর্ঘয়িত হয়েছে। ম্যাচর শেষের ২৫ মিনিট আগে লুকাকু গোলের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি পেয়েছিলেন। কিন্তু ইউনাইটেডের বিপক্ষে সেমিফাইনালের জয়ের মতই সেভিয়া গোলরক্ষক বোনো আরো একবার দুর্দান্ত দক্ষতায় দলকে রক্ষা করেন। এতে করেই আগের পাঁচটি ইউরোপা লিগের ফাইনালে জয়ের মতই সেভিয়ার সামনে সৌভাগ্য যেন হঠাৎ করেই উপস্থিত হয়। 

বানেগার আরো একটি ফ্রি-কিক বক্সের ভিতর ইন্টার ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে কার্লোসের জোরালো শট ডিফ্লেকটেড হয়ে লুকাকুর আত্মঘাতি গোলে পরিণত হয়। আর এই গোলেই শেষ পর্যন্ত সেভিয়ার জয় নিশ্চিত হয়।

ইন্টার অধিনায়ক সামির হানডানোভিচ বলেছেন, ‘আমরা খুবই হতাশ, কিন্তু এরপরও আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ভবিষ্যতে এভাবেই আমাদের আরো বেশী গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলতে হবে আশা করছি। এই ম্যাচ থেকেই নতুন করে আবারো আমরা শুরু করতে চাই।

এদিকে, ম্যাচ শেষে উচ্ছসিত লোপেতেগুই বলেছেন, ‘সৌভাগ্যবশত: আমাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এমন একটি ক্লাবের দায়িত্ব আমি পেয়েছিলাম, যে দলটি সত্যিকার অর্থেই একটি বাস্তবসম্মত দল এবং এই দলের সাথে কাজ করার অনেক সুযোগ আছে।’

অন্যদিকে ইন্টার কোচ এ্যান্টোনিও কন্তে স্বীকার করেছেন, ফাইনালে এই পরাজয়ের পর মাত্র এক বছরের মধ্যে তার সাথে মিলানের সম্পর্ক হয়ত শেষ হয়ে যেতে পারে। 

যদিও সিরি-আ লিগে জুভেন্টাসের থেকে মাত্র এক পয়েন্ট পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করেছে ইন্টার। ১০ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম ইউরোপীয়ান কোন আসরের ফাইনালে উঠেছিল ইতালিয় ক্লাবটি। 

কন্তে বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের পুরো মৌসুমটা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। প্রতিটি বিষয় বেশ ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করতে হবে, সেখানে আমি থাকি বা না থাকি। এই বছরটা সব সময়ই আমার হৃদয়ে থাকবে। মৌসুমটা বেশ দীর্ঘ ছিল, যেখানে অনেক ঘটনাই ঘটেছে। এটা আমার জন্য সত্যিই অসাধারণ একটি অভিজ্ঞতা।’

এনএস/