ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

ফ্রান্সে আবারও ভয়ানক হয়ে উঠছে করোনা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৫৫ এএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ রবিবার

বৈশ্বিক মহামারি করোনার দ্বিতীয় ধাপ পার করছে ইউরোপ। এর মধ্যে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় ফ্রান্স। প্রাণহানি কিছুটা কম হলেও ক্রমেই আরও ভয়ানক হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। বর্তমানে প্রতিদিনই দশ হাজারের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে সেখানে। যার জন্য স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাওয়াকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

ফ্রান্সের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের নিয়মিত পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, গত একদিনে ১৩ হাজার ৪৯৮ জন মানুষের শরীরে ভাইরাসটি চিহ্নিত হয়েছে। এতে করে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ৪২ হাজার ১৯৪ জনে দাঁড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে আরও ২৬ জনের। এ নিয়ে প্রাণহানি বেড়ে ৩১ হাজার ২৭৪ জনে ঠেকেছে।
সে তুলনায় দেশটিতে সুস্থতার হার শীর্ষ আক্রান্ত দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম। যেখানে এখন পর্যন্ত মাত্র ৯১ হাজার ৫৭৪ জন রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পেরেছেন। 

দুদিন আগেও ইউরোপের করোনার পরিস্থিতি নিয়ে ভয়াবহ শঙ্কার কথা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচও। সেখানকার চলমান পরিস্থিতিকে ‘খুবই বিপজ্জনক’ বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি। 

ডব্লিউএইচও’র ইউরোপ অঞ্চলের পরিচালক ডা. হান্স ক্লুগে বলেন, ‘আমাদের সামনে খুব বিপজ্জনক সময় আসছে। সাপ্তাহিক হিসাবের সব রেকর্ড ভেঙে যাচ্ছে।’
‘গত সপ্তাহে এখানে ৩ লাখের বেশি মানুষ পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। দুই সপ্তাহ ধরেই করোনা সংক্রমণের হার বাড়ছে।’

ইউরোপের মতো বিশ্বের অন্য অঞ্চলেও বেড়েই চলেছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। আক্রান্তের সংখ্যা এরই মধ্যে ৩ কোটি ৯ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। 

এমতাবস্থায় ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বোর্ডক্স ইউনিভার্সিটি হসপিটালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) প্রধান ডা. অলিভার জোনস-বোইয়া বলেছেন, ‘মহামারির প্রথম ঢেউ মোকাবিলা করাটা ছিল স্প্রিন্টের মতো, দ্বিতীয়টি হবে ম্যারাথনের মতো।’ ফ্রান্সে করোনার পুনরুত্থানের ব্যাপারে ধারণা দিতে গিয়ে এমন মন্তব্য করেন তিনি। 

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, লকডাউন প্রত্যাহার করে নেয়ার সুবিধা নিয়ে ফ্রান্সের তরুণরা অবাধ সামাজিক চলাফেরা করায় প্যারিস, বোর্ডক্স ও ভূ-মধ্যসাগরীয় উপকূলীয় মার্সেলের মতো বড় বড় শহরগুলোর হাসপাতালে করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ফরাসি হাসপাতালগুলো এখন দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। এমনকি নতুন করে আইসিইউ সংকটাবস্থায় পড়তে যাচ্ছে বলেও বলা হচ্ছে।

গোটা ফ্রান্সজুড়েই হাসপাতালের কর্মীরা এখন প্রথম ধাপের চেয়ে বেশি করোনা রোগীর মুখোমুখি হচ্ছেন। করোনা রোগীদের উপসর্গ কমিয়ে আনতে বোর্ডক্স ইউনিভার্সিটি হসপিটাল কর্তৃপক্ষ স্টেরয়েড ওষুধ মজুত ও ভেন্টিলেটর সেবা উন্নত করছে। এ দুই ব্যবস্থা করোনা রোগীদের লাইফ সাপোর্টে যাওয়ার হার কমিয়ে আনতে সহায়তা করে।
এআই/ এসএ/