ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

অশ্লীল ছবি তুলে ফেসবুকে ছাড়ার হুমকি, বখাটে গ্রেপ্তার

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৭:২৭ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ সোমবার

বখাটে রায়হান ও সেই কলেজছাত্রী

বখাটে রায়হান ও সেই কলেজছাত্রী

নওগাঁর নিয়ামতপুরে এক কলেজছাত্রীকে (১৮) বাসায় আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতনের পর মাথার চুল কেটে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, ওই ছাত্রীর অশ্লীল ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে (ফেসবুক) ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে জোর করে থানায় নিয়ে গিয়ে মিথ্যা জবানবন্দি দেওয়ানো হয়েছে। 

রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নিয়ামতপুর উপজেলার বালাহৈড় গ্রামের এই ঘটনায় ওই কলেজছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ বখাটে রায়হানকে গ্রেপ্তার করেছে। 

রায়হান উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের ঝাজিরা গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে। সে তার স্ত্রী রুপাকে নিয়ে উপজেলা সদরের বালাহৈড় গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকে। এদিকে, বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে সুমী নামের ওই কলেজছাত্রী।
 
জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের শাংশৈল গ্রামের আমিরুল ইসলামের মেয়ে ও নিয়ামতপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় এন্ড কলেজের ছাত্রী রাব্বিনা আক্তার সুমী নিয়মিত কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছিল। সুমীর অভিযোগ, একই এলাকার বিবাহিত ছেলে রায়হান প্রায় এক মাস ধরে আমাকে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করে আসছিল। বিভিন্ন সময় সে আমাকে কু-প্রস্তাব দিত। আমি রাজী না হওয়ায় গতকাল রোববার কম্পিউটার প্রশিক্ষণ শেষে বিকেল ৪টার দিকে নিয়ামতপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক কামাল হোসেনের নিকট প্রাইভেটের টাকা দিতে যাই। এসময় রায়হান ও তার তিন বন্ধু মিলে আমাকে জোর করে তার ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে, আমার মাথার চুল (দেড় ফুট লম্বা) কেটে ফেলে এবং আমার অশ্লীল ছবি তুলে এই বলে হুমকি দেয় যে- এসব কথা কাউকে বললে আমাকে মেরে ফেলা হবে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি ছেড়ে দেয়া হবে। 

সুমী আরও বলেন, তারা আমাকে দুই ঘণ্টা ঘরে আটকে রেখে আমার অশ্লীল ছবি তোলার পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে থানায় নিয়ে গিয়ে আমাকে দিয়ে মিথ্যা জবানবন্দি দিতে বাধ্য করে। এসময় থানা পুলিশ আমার বাড়িতে খবর দিলে আমার নানা এসে আমাকে থানা থেকে বাড়ি নিয়ে যায়। বাড়ি গিয়ে আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে ওইদিন রাত ১২টার দিকে আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে গ্রেপ্তারকৃত রায়হান বলেন, সুমী আমার স্ত্রীকে অপর একটি ছেলের সাথে সময় কাটানোর প্রস্তাব দেয়। আমার স্ত্রীর অভিযোগ অনুযায়ী সুমীকে আমার বাসায় নিয়ে যাই। সেখানে সুমীকে চড় থাপ্পড় মেরে মাথার চুল কেটে দেয় আমার স্ত্রী। আমি ও আমার বন্ধুরা তাকে কোন নির্যাতন করিনি ও তার অশ্লীল ছবিও তুলি নাই।

এই ঘটনায় সুমীর পিতা মতিউর রহমান বাদী হয়ে রায়হানসহ ৫ জনকে আসামি করে নিয়ামতপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
 
এ বিষয়ে নিয়ামতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ন কবির বলেন, এই ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই বখাটে রায়হানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এছাড়া আগের দিন দেয়া সুমীর জবানবন্দির বিষয়েও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এনএস/