ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

কুড়িগ্রামের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, বানভাসীদের দুর্ভোগ চরমে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২৬ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ শনিবার

কুড়িগ্রামে নদনদীর পানি ধীরে ধীরে সামান্য কমে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ফলে বানভাসীদের দুর্ভোগ এখনও কমেনি।

শনিবার বিকেলে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমতে শুরু করেছে। তবে ধরলা নদীর পানি কমে এখনও বিপদসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য নদ-নদীর পানি কমে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ৫ম দফা বন্যায় কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট, ফুলবাড়ী,উলিপুর,রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার শতাধিক চর ও দ্বীপচর প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দী রয়েছে প্রায় অর্ধ-লক্ষাধিক মানুষ।

পানিতে ডুবে গেছে বেশ কিছু এলাকার গ্রামীণ কাঁচা সড়ক। চতুর্থ ও ৫ম দফা বন্যায় প্রায় ৭ হাজার ৮ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। তম্মধ্যে রোপা আমন ধান ডুবে আছে ৬ হাজার ২২৫ হেক্টর,মাসকলাই ৪৫৪ হেক্টর,শাকসবজি ২৫৯ হেক্টর ও চীনা বাদাম ৭০ হেক্টর। এসব ফসল তলিয়ে থাকায় কৃষকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। 

সদর উপজেলার ভেলাকোপা হানাগড়ের কৃষক মজিদ মিয়া জানান, এক জমি দুইবার তিনবার আমন ধান আবাদ করা হয়েছে। এবারের বানের পানিতে এক সপ্তাহ থাকায় সব শেষ হয়ে গেছে। এদিকে,ঘরবাড়িতে পানি ওঠায় অনেকেই গবাদি পশু নিয়ে পড়েছেন সংকটে। 
দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। তাছাড়া ধরলা ও তিস্তা নদীর প্রবল স্রোতে ভেসে গেছে শতাধিক ঘরবাড়ি। গাছপালা উপড়ে গিয়ে বিভিন্ন নদীতে চলে গেছে। 

অন্যদিকে,পানি কমার সাথে সাথে বিভিন্ন এলাকায় নদ-নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙনের কবলে পড়েছে বসতভিটা, প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাস্তাঘাট ও বাঁধ। গত এক সপ্তাহে সদর উপজেলার যাত্রাপুর,সারডোব ও মোগলবাসা এবং ভূরুঙ্গামারীতে কয়েকটি এলাকায় নদী ভাঙনে বিলীন হয়েছে দুই শতাধিক ঘরবাড়িসহ নানা স্থাপনা। বিগত পরপর কয়েকটি বন্যায় পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে জেলার ৪ উপজেলায় ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকিতে রয়েছে আরও ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ-মন্দির। ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কয়েকটি পয়েন্টে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করলেও তা কোন কাজে আসছে না। তাই ভাঙন কবলিতরা চান স্থায়ীভাবে ভাঙন প্রতিরোধ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক শামছুদ্দীন মিয়া জানান,চতুর্থ দফা বন্যার পানি নেমে গেলে আবার দুইদিনের মাথায় ৫ম দফা বন্যা দেখা দেয়ায় তলিয়ে থাকা কৃষকদের আমন ফসলগুলো এক সপ্তাহে অনেক নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলো রক্ষা করা কঠিন হবে বলে জানান তিনি।
কেআই//