ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

জন্মদিনে অফুরন্ত শুভেচ্ছা

সিমিন হোসেন রিমি

প্রকাশিত : ০২:১৮ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ সোমবার

প্রকৃতি এক অপার রহস্যের ভান্ডার। সৌন্দর্যের অনন্ত এক নীলাভূমি। নীল আকাশ, উন্মুক্ত সাগর-মহাসাগর, পাহাড়-পর্বত, বনাঞ্চল, সবুজের অফুরন্ত সমারোহ। কী দারুণ শৃঙ্খলা প্রকৃতিতে! এই সবকিছুর মাঝেই পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে আছে প্রাণের অস্তিত্ব নানা রূপে, বর্ণে, আচ্ছাদনে। যেখানে মানুষ মূল ভূমিকায়। এই মানুষ তার জীবন গড়ে, সমাজ গড়ে, রাষ্ট্র গড়ে।

কবি নজরুলের অমর লেখনীর ছন্দে সুর বেজে ওঠে- ‘খেলিছ এ বিশ্ব লয়ে বিরাট শিশু আনমনে...’ এই ভাঙা-গড়ার খেলায় যুগে যুগে, সমাজে সমাজে, অঞ্চলভেদে প্রয়োজন হয় দক্ষ নাবিকের, যিনি শক্ত হাতে হাল ধরেন একটি সময়ের। সৃষ্টিকর্তা জানেন তিনি কখন কাকে দিয়ে কোন কাজটি করাবেন। কে হবেন সেই নাবিক। তেমনি এক দক্ষ নাবিকের ভালোবাসার স্পর্শে আজ এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। শুভ জন্মদিন প্রিয় মানুষ, প্রিয় বোন জননেত্রী শেখ হাসিনার।

রাত-দিনের কোনো ভেদাভেদ নেই। কাজ, কাজ, শুধু কাজ। ক্লান্তিহীন, বিরামহীন কাজ। স্বাধীন বাংলার মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অমর আকাঙ্ক্ষা 'সোনার বাংলা' গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে দেশের কাজে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন আমাদের বোন শেখ হাসিনা। এদেশের মানুষের সুখ-দুঃখ, সাফল্য-সৃষ্টি, উন্নয়ন অর্জন- সবকিছুর সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছেন তিনি। তার দৃঢ় কর্মোদ্যোগী নেতৃত্বে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ আজ মাথা তুলে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয়েছে। 

১৬ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার বাংলাদেশে একটি মানুষও না খেয়ে থাকে না আজ। নিভৃত গ্রামের প্রান্তিক নারী আজ ঘর থেকে দুই পা বাড়ালে কমিউনিটি ক্লিনিকে পৌঁছে যায়। প্রয়োজনীয় ওষুধ পায়। দরিদ্র মানুষ আজ বিশ্বাস করার সাহস পায়, ভবিষ্যতে সে আরও উন্নত জীবন পাবে। বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয় অন্ধকার রাত। মানুষের জীবনের অতি প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে ঘরে ঘরে। সারা বাংলাদেশে বিদ্যুতের এই আশাতীত কল্পনাকে বাস্তবে রূপ দিতে সক্ষম হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব। মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট। বাংলাদেশের মানুষ আরও অনেক বড় স্বপ্নের জাল বোনে। 

আমি যতবার দেখি প্রিয় আপার মুখ, আনন্দ-বেদনার দোলাচলে আমার মন দৃষ্টি মেলে আকাশের সীমাহীন বিশালতায়। বিস্মিত হই আমি বারবার। রবীন্দ্রনাথে স্বস্তি মেলে। আশ্চর্য কয়েকটি শব্দ- ‘অলৌকিক আনন্দের ভার, বিধাতা যাহারে দেন, তার বক্ষে বেদনা অপার।’ কী অসীম ধৈর্য দিয়ে প্রাণান্তকর নিদারুণ নিষ্ঠুর বেদনাকে পাথরচাপা দিয়ে প্রতি মুহূর্তে চেষ্টা করে চলেছেন তিনি সব মানুষের নিশ্চিন্ত সুখী আনন্দময় জীবন গড়ে তোলার প্রত্যাশায়!

অঝোর ধারার বেদনার নিজ অশ্রু আড়াল করে অন্যের অশ্রু মোচনে ক্লান্তিহীন তিনি। আমার কখনও মনে হয়, ডিজনি সিরিজের ‘লায়ন কিং’-এর সিংহশাবক ‘সিম্বা’ তিনি। অপশক্তি আর নিকটজনের তীব্র ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে পিতার হত্যায় নির্বাসিত, বিতাড়িত সিম্বা। দেশজুড়ে চলতে থাকে অনাচার। পিতার শারীরিক মৃত্যু হয়; কিন্তু 'প্রমিজ ল্যান্ডের' ভালো থাকার আকাঙ্ক্ষা, পিতার সেই আদর্শের মৃত্যু নেই। সময়ের ডাকে সাড়া দেয় সিংহশাবক; পিতার আশীর্বাদ স্বচ্ছ প্রতিবিম্ব হয়ে পথনির্দেশ করে তাকে। জয়ী হয় সিম্বা। নতুন ভোরের অলোয় আলোকিত হয় দেশ। 

শুভ জন্মদিন আপা। শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, অফুরন্ত শুভকামনা।

লেখক: জাতীয় সংসদ সদস্য, লেখক ও সমাজকর্মী 

এমবি//